২৪ জানুয়ারি, ২০১৮: তিনমাস আগে এক আদিবাসী কিশোরীকে চার পুলিসকর্মী ধর্ষণ করে
বলে অভিযোগ। দু’দিন আগে আত্মহত্যা করে ওই কিশোরী। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা বন্ধের জেরে
বুধবার অচল হয়ে পড়ল ওড়িশা। এদিন পৃথকভাবে কংগ্রেস ও বিজেপি’র ডাকা বন্ধের ফলে ব্যাহত হল জনজীবন।
পুলিস জানিয়েছে,
বন্ধের জেরে এদিন দোকান-পাট, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান,
বাজার, অফিস, ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। রাজ্যজুড়ে রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। বন্ধ সমর্থকেরা বিভিন্ন
জায়গায় রেল রোকো কর্মসূচি পালন করেন। ফলে ভুবনেশ্বর, সম্বলপুর ও ভদ্রক সহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে বহু ট্রেন। ভোগান্তির মুখে পড়তে
হয় অসংখ্য যাত্রীকে। রাজ্যের প্রায় কোথাও রাস্তায় বাসের দেখা মেলেনি। স্কুল-কলেজ
ছিল বন্ধ। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এদিনের
বিভিন্ন পরীক্ষা। এইসব পরীক্ষা নেওয়া হবে পরবর্তী সময়ে। পুলিশের এক প্রবীণ কর্তা
জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা জোরদার করা হয় রাজ্যের সব জায়গায়। তবে
বন্ধ সত্ত্বেও হিংসার বড় কোনও ঘটনা কোথাও ঘটেনি। এদিন ব্যারিকেড ভেঙে রাজ্য
সচিবালয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন কংগ্রেস ও বিজেপি’র নেতা-কর্মীরা। সেই সময় দুই দলের প্রায় ২০০ কর্মী ও নেতাকে আটক করে পুলিস।
ভুবনেশ্বরে বিভিন্ন জায়গায় পৃথকভাবে রাস্তা আটকে দেন কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীরা।
বন্ধের প্রভাব পড়ে কটক,
পুরী, বেরহামপুর, সম্বলপুর,
বালেশ্বর, ভদ্রক, রাউরকেল্লা,
সুন্দরগড়, জগৎসিংপুর, জাজপুর,
কেন্দ্রাপাড়া ও কোরাপুটে।
সোমবার ওই আদিবাসী কিশোরী আত্মহত্যা করার পরই কংগ্রেস ও বিজেপি পৃথকভাবে
বন্ধের ডাক দেয়। পাশাপাশি ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিও ওঠে। ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে
মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে নবীন পট্টনায়েকের ইস্তফার দাবি তুলেছে কংগ্রেস। বিজেপি’র তরফ থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, দোষী পুলিসকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আরও বড় আন্দোলনের পথে নামা
হবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হরিচরণ প্রসাদের অভিযোগ, পুলিস ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা অত্যাচারের শিকার হওয়া কিশোরীর উপর
মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। তার জেরেই ধর্ষণের ১০০ দিন পর আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে
বাধ্য হয় ওই কিশোরী। কারণ ওই কিশোরী অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিস ধর্ষণের ঘটনা
অস্বীকার করে আসছিল।
সৌজন্য – বর্তমান পত্রিকা, ২৫/০১/২০১৮।
No comments:
Post a Comment