Wednesday, January 17, 2018

বাংলাদেশে সাঁওতাল হত্যার বিচার, জমি ফেরত, ক্ষতিপূরণ সহ সাত দফা দাবিতে 16/01/2018 গণ–অবস্থান কর্মসূচি।

আদিবাসী সাঁওতাল হত্যার বিচার ও বেদখলীকৃত পৈতৃক জমি ফেরত সহ সাত দফা দাবিতে গত ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশের গাইবান্ধা শহরে মিছিল বের করে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি সহ কয়েকটি সংগঠন অভিযুক্ত স্থানীয় সাংসদ সহ মূল আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাল।

বাংলাদেশের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল হত্যার বিচার, জমি ফেরত, ক্ষতিপূরণ সহ সাত দফা দাবিতে গত ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা শহরে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিতে বক্তারা তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি স্থানীয় সাংসদ, ইউপি চেয়ারম্যানসহ মূল আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে কর্মসূচি পালনের সময় বক্তারা ওই দাবি জানান। এখানে কর্মসূচি পালন করে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নওগাঁ জেলা শাখা। বক্তব্য দেন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক সবিন চন্দ্র, জেলা শাখার উপদেষ্টা মহসীন রেজা, ময়নুল হক ও জয়নাল আবেদীন, আদিবাসী যুব পরিষদের সম্পাদক নরেন চন্দ্র পাহান প্রমুখ।
গাইবান্ধা শহরের শহীদ মিনার চত্বরে কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগে একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে। এর আয়োজন করে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, গাইবান্ধার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জনউদ্যোগ ও আদিবাসীবাঙালি সংহতি পরিষদ। গণসংগীত ও কবিতা আবৃত্তি করেন চুনি ইসলাম, শিরিন আকতার, গাইবান্ধা প্রথম আলো বন্ধুসভার সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান। যন্ত্রে সহযোগিতা করেন মাহমুদ সাগর। সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সহসভাপতি ফিলিমিন বাক্সে। বক্তব্য দেন জেলা সিপিবির সভাপতি মিহির ঘোষ ও সাবেক সভাপতি ওয়াজিউর রহমান, সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, জনউদ্যোগের সদস্যসচিব প্রবীর চক্রবর্তী, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি আমাতুর নূর, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলা সংসদের সম্পাদক মাহমুদুল গনি প্রমুখ।
দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরা। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা শাখার সম্পাদক টুনু পাহানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন নিহত শ্যামল হেমব্রমের স্ত্রী সোনামনি কিসপট্টা, মুক্তিযোদ্ধা আমিন হেমব্রম, আদিবাসী পরিষদ নাচোল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নরেশ হাসদা, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার সম্পাদক দিলীপ পাহান প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন সিপিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ইসরাইল, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম জেলা শাখার সম্পাদক রফিক হাসান প্রমুখ।
রংপুর শহরের কাচারি বাজার এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি মনিলাল দাস। বক্তব্য দেন আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা অশোক সরকার, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বিভূতিভূষণ মাহাতো, রংপুর শাখার সাবেক সভাপতি পরিমল মাহাতো, সভাপতি রাজীব কুমার মাহাতো প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাসদের জেলা সমন্বয়ক আবদুল কুদ্দুস, জাসদের রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি গৌতম রায়, সিপিবি রংপুর জেলা সম্পাদক শাহিন রহমান, আওয়ামী লীগ রংপুর মহানগর শাখার সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল প্রমুখ।
আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলা ও মহানগরের আয়োজনে কোর্ট শহীদ মিনার চত্বরে কর্মসূচিতে পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য খ্রীস্টিনা বিশ্বাস, সহসম্পাদক গণেশ মার্ডি, দপ্তর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী মহানগর সম্পাদক আন্দ্রিয়াস বিশ্বাস, জেলা সম্পাদক সুসেন কুমার শ্যামদুয়ার, আদিবাসী যুব পরিষদ কেন্দ্রীয় সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিং, জেলা আহ্বায়ক নবদ্বীপ লাকড়া, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নকুল পাহান, সম্পাদক তরুণ মুন্ডা প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন কলাম লেখক প্রশান্ত সাহা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগর সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা সভাপতি শাহজাহান আলী বরজাহান, মহিলা পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি কল্পনা রায় প্রমুখ।
দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচিতে আদিবাসী পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি শীতল মার্ডির সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসাইন, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রবিউল আউয়াল প্রমুখ।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ চিনিকলের বাণিজ্যিক খামারে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হন। সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু ওই বছরের ১৬ নভেম্বর মামলা করেন। পরে ২৬ নভেম্বর থোমাস হেমরম স্থানীয় সাংসদ ও সাপমারা ইউপির চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আরেকটি মামলা করেন।
সৌজন্য - প্রথম আলো (বাংলাদেশ)।

No comments:

Post a Comment