Wednesday, May 31, 2017

Niyati Mandi, Priyanka Majhi, Basundhara Bauri and Arup Nandi tensions for higher education despite scoring good result in WB Higher Secondary Exam-2017. দুর্দান্ত ফল করেও দুশ্চিন্তায় নিয়তি মান্ডি, প্রিয়াঙ্কা মাজি, বসুন্ধরা বাউরি ও অরূপ নন্দী।

রঘুনাথপুর ও জয়পুর ১ জুন, ২০১৭

নিয়তি, প্রিয়াঙ্কা, বসুন্ধরা ও অরূপ।
তিন কন্যা। তিন জনই হরিহর আত্মা। দারিদ্রের মধ্যে লড়াই করে তিন জনই দুর্দান্ত ফল করেছে। রঘুনাথপুর ১ ব্লকের মেট্যাল সহর হাইস্কুলের নিয়তি মান্ডি, প্রিয়াঙ্কা মাজি ও বসুন্ধরা বাউরিকে নিয়ে তাই গর্বের শেষ নেই এলাকাবাসীর। সেই সুতোতেই বাঁধা পড়েছে বাঁকুড়ায় জয়পুরের চ্যাংডোবা গ্রামের অরূপ নন্দীও। তাঁতশালে চাদর বুনে চলার ফাঁকে পড়াশোনা করেও যে উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য পাওয়া যায়, তা সে করে দেখিয়েছে।
৪৩১ নম্বর পাওয়া নিয়তি স্কুলের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক। পিছিয়ে নেই তার বাকি দুই বন্ধু প্রিয়াঙ্কা (৪২৭) ও বসুন্ধরাও (৪২৩) । মেট্যাল সহর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘এ বছর স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে আট জন খুব ভাল ফল করেছে। বেশির ভাগই অভাবি পরিবারের। কিন্তু এই তিন ছাত্রীর ফল যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য।”
কিন্তু মেয়েদের এই ফল যেন দুশ্চিন্তা বয়ে এনেছে পরিবারে। কারণ নুন আনতে পান্তা ফুরনো এই পরিবারের কাছে কলেজে পড়ার খরচ যে অনেক! কাশীপুর ব্লকের কুমারডি গ্রামে বাড়ি প্রিয়াঙ্কা ও বসুন্ধরার। প্রিয়াঙ্কার বাবা ফাল্গুনী বাউরি দিনমজুর, বসুন্ধরার বাবা রঞ্জিতবাবু মণিহারি সামগ্রী ফেরি করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘মেয়েরা ভাল ফল করে কলেজে ভর্তি হতে চাইছে। কিন্তু কলেজে পড়ানোর টাকা কী ভাবে জোগাড় করব, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।”
একই অবস্থা কাশীপুর ব্লকেরই পচাগড়া গ্রামের বাসিন্দা নিয়তি মান্ডির বাবা বিশ্বনাথ মান্ডিরও। দিনমজুর বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকে মেয়ে স্কুলের সব থেকে বেশি নম্বর পাওয়ায় গর্ব যেমন হচ্ছে, তেমনই আশঙ্কা হচ্ছে এর পর কী ভাবে মেয়েকে কলেজে পড়াব?’’ তবে জেদও আছে তিন কৃতীর পরিবারের। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিজেরা আর্থিক ম্যার বেশিদূর পড়তে পারেননি বলে মেয়েদের এখানেই থামিয়ে দিতে তাঁরা নারাজ।
তাই নতুন করে লড়াইয়ের জন্য কোমর বাঁধতে চাইছেন তাঁরা। তিন মেয়েও জানিয়েছে, স্কুলের শিক্ষকেরা যে ভাবে তাঁদের ভাল ফল করার জন্য বরাবর পাশে থেকেছেন, তারাও ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করে ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করতে চায়।
তবে উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৬৭ নম্বর পেয়েও অরূপ সামনে কোনও দিশা দেখতে পাচ্ছে না। তার কথায়, ‘‘ইতিহাস নিয়ে পড়ব ভেবেছিলাম। কিন্তু তাঁত না বুনলে ভাত জোটে না আমাদের। পড়াশোনা তো সেখানে বিলাসিতা।’’
তাঁদের চাষের জন্য জমি নেই। নিজস্ব বাড়িও নেই। অন্যের দেওয়া মাটির ঘরে কোনও রকমে বাস। ভরসা শুধু তাঁতশাল। অরূপের বাবা শত্রুঘ্ন নন্দী বলেন, ‘‘মহাজন কাঁচামাল দিয়ে গেলে দিনে দুটো করে চাদর বাপ-বেটা তৈরি করি। স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্যে ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেও কলেজে ওকে কী ভাবে পড়াব?’’ চ্যাংডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক চিন্ময় কোনার বলেন, ‘‘ওকে আমরা আগলে রেখেছিলাম। বলেছি কলেজে ভর্তি হতে। দেখি কী করা যায়।’’

http://www.anandabazar.com/district/purolia-birvhum-bankura/students-are-worried-even-after-their-outstading-results-1.621420?ref=purolia-birvhum-bankura-new-stry

No comments:

Post a Comment