এই সময়, নয়াদিল্লি : জাতিদাঙ্গা
বিধ্বস্ত সাহারানপুরকে কেন্দ্র করে গোবলয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সচেষ্ট কংগ্রেসকে প্রশাসনিক
ভাবে রুখে দিতে উদ্যোগী যোগী আদিত্যনাথের সরকার৷ কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী সাহারানপুরে
ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে না উত্তরপ্রদেশ সরকার৷ উত্তপ্ত ওই এলাকায়
প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে বলে রাহুলকে জানিয়েছে জেলা পুলিশ এবং প্রশাসন৷ তবে সফরের অনুমতি
না পেলেও রাহুল সাহারানপুরে যেতে মরিয়া৷ এ ব্যাপারে বসপা নেত্রী মায়াবতীর সঙ্গে তাঁর
এক দফা আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ সাহারানপুরে ঠাকুর বনাম দলিত সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই
এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে৷ আহত হয়েচেন অন্তত ২০ জন, এঁদের মধ্যে কয়েক জনের আঘাত গুরুতর৷
মোদী সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদ্যাপনের মধ্যেই সাহারানপুর বিজেপির গলার কাঁটা হয়ে
উঠেছে৷ বছর তিনেক আগে মুজফফর নগরের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তত্কালীন অখিলেশ-সরকারের
ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছিল বিজেপি৷ কিন্তু এখন উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার৷ তার উপরে
সাম্প্রদায়িক নয়, সাহারানপুরের দাঙ্গা জাতিগত৷ উত্তরপ্রদেশে জাতিভেদের চেহারাটা এর
ফলে সামনে চলে আসায় এমনিতেই সরকার বেশ অস্বস্তিতে৷ যদিও এর পিছনে মায়াবতীকে কাঠগড়ায়
তুলে ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে বিজেপি৷ কংগ্রেস অবশ্য এই ইস্যুতে মায়াবতীর পাশেই
দাঁড়িয়েছে৷ ‘বহেনজি’ ও রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থীর নাম নির্ণয় নিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী
সনিয়া গান্ধীর ডাকা বৈঠকে নয়াদিল্লিতে হাজির ছিলেন৷ বরং কংগ্রেস দাদরি, মুজফ্ফর নগরের
পরে সাহারানপুর ইস্যুতে আরও একবার বিজেপি-কে চেপে ধরতে মরিয়া৷ দাদরি এবং মুজফফর নগরে
অসন্তোষের সময়েও বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তুলেছিল কংগ্রেস৷ সরকার
বিরোধী প্রায় সব ক’টি দল বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল৷ এখন সাহারানপুরের ঘটনাকে
কেন্দ্র করে কংগ্রেস চাইছে এক ঢিলে দু’পাখি মারতে৷ এই ইস্যুকে যথাযথ ভাবে প্রচারের
আলোয় আনতে পারলে তা কাজে দেবে ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে৷ পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে দীর্ঘকালের
জাতপাতের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে যোগী আদিত্যনাথের ইনিংসের শুরুতেই যদি বিজেপিকে জোর
ধাক্কা দেওয়া যায়, তাহলে তা পরে গো বলয়ে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করতে পারে
কংগ্রেসকে৷ এমনিতেই উত্তরপ্রদেশে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ককে
মজবুত করতে উদ্যোগী বিজেপি৷ কিন্ত্ত সাহারানপুরের মতো এলাকায়, যেখানে বরাবর দলিতদের
আধিপত্য, এখন যোগী-আমলে তা খর্ব করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ এমন একটি হাতেগরম
ইস্যু ছাড়তে মোটেই রাজি নয় কংগ্রেস৷ তাই সাহারানপুর-কাণ্ডে মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়েছেন রাহুল
গান্ধী৷ বিজেপি প্রত্যাশিত ভাবেই এই ঘটনায় ‘ডিফেনসিভ’৷ তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে অশোকা রোডে
দলীয় সদর দফতরে বসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ শুক্রবার বলেন, ‘সাহারানপুর, জেওয়ার সহ
অন্যত্র পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে৷ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সব রকম
পদক্ষেপ করা হয়েছে৷ যোগী আদিত্যনাথ সবে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন৷ একটু সময় দিন,
সব ঠিক হয়ে যাবে৷’৷
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=32030&boxid=15437226
No comments:
Post a Comment