ভোপাল : স্পর্ধার বলিহারি
! দলিত হয়ে কি না উঁচু জাতের লোকেদের মতো করে বিয়ের আয়োজন ! বিশাল খাপ্পা উঁচু
জাতের লোকজন তাই শাস্তির বিধান দিল৷ কুয়োর মধ্যে ঢেলে দেওয়া হল কেরোসিন তেল, যাতে দলিতরা আর পানীয় জল না পান !
মধ্যপ্রদেশের মাদায় ঘটেছে এমনই ঘটনা৷ গত ২৩ এপ্রিল মেঘাওয়াল তাঁর মেয়ের খুব ধুমধাম
করে বিয়ে দেন৷ পাত্র আসেন বাইকে চড়ে, সঙ্গে
বিশাল বরযাত্রী৷ বড় রাস্তার উপর দিয়ে তারা নাচ-গান করতে করতে এসে পৌঁছয় পাত্রীর
বাড়ি৷ বিয়েও হয়ে যায় নির্বিঘ্নে৷
হবে না-ই বা কেন ? মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানে কাছ থেকে
অনুমতি নিয়েই তিনি সব আয়োজন করেছিলেন৷ গ্রামের উঁচু জাতের লোকেরা গোলমাল পাকাতে
পারেন, এই অনুমান করে প্রশাসন
পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করেছিল৷ তাই সে দিনটা ভালোয় ভালোয় কেটে যায়৷ তবে দু’দিন যেতেই মেঘাওয়ালের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার
জন্য এককাট্টা হয় গ্রামের উঁচু জাতের লোকেরা৷ কারণ তাঁরা আগেই মেঘাওয়ালকে
শাসিয়েছিলেন যদি ‘নিয়ম ভেঙে’ তিনি মেয়ের বিয়ে দেন, তা হলে তার পরিণতি ভালো হবে না ! এমনকি তিনি
বড় রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন না, সে
হুমকিও তাঁরা দিয়ে রেখেছিলেন৷ কিন্ত্ত মেঘাওয়াল কিছুই মানেননি৷ কারণ তিনি জানতেন, এ সব শর্ত কেউ চাপাতে পারেন না ! এ সব কথা
তিনি বোঝান গ্রামের অন্য দলিত পরিবারকেও৷ তাঁরা সকলেই সমর্থন করেন মেঘাওয়ালকে৷ এতে
উচ্চ বর্ণের রাগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়, বিয়ের
দিন দুই পেরোতেই তাঁরা আসরে নেমে পড়েন৷ কোনও এক মুরুব্বির মাথা থেকে বেরোয়, গ্রামের দলিত পরিবারগুলো যে কুয়ো ব্যবহার করে, সেই জলে কেরোসিন মিশিয়ে দেওয়া৷ যেমন ভাবনা
তেমন কাজ৷ রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা কেরোসিন মিশিয়ে দেন৷ সকালে জল আনতে গিয়ে
মহিলারা দেখেন, জলে কেরোসিন ভাসছে ! দেরি
না করে তাঁরা প্রশাসনে খবর দেন৷ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সরকারি লোক এসে কুয়ো ছেঁচে
ফেলেন৷ জেলাশাসক জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই দু’টো হ্যান্ডপাম্প বসানো হবে৷ কিন্ত্ত সে জন্য
কিছু তো সময় লাগবেই৷ তাই এই ৪৫ ডিগ্রি গরমে এখন ভরসা ২ কিলোমিটার দূরের একটা ছোট
নদী৷ সেখান থেকেই মহিলারা গিয়ে জল আনছেন৷ সে নদীর জল অবশ্য পানযোগ্য কি না তা নিয়ে
বিতর্ক হতেই পারে৷
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=31450&boxid=152843309
No comments:
Post a Comment