সাহারানপুর : ঠাকুর-দলিত সংঘাতে উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশের
সাহারানপুরে শান্তি ফেরাতে দিল্লি থেকে RAF পাঠালো কেন্দ্র৷ যোগীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে
এ দিন রাজ্যে আসে ৪০০ জনের বাহিনী৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র অশোক
প্রসাদ জানিয়েছেন, ‘সাহারানপুরে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতেই এই বাহিনী পাঠানো হয়েছে৷’ রাজধানী থেকে পাঁচ ঘণ্টার দূরত্ব
উত্তরপ্রদেশের এই গ্রামের৷ গত এক মাসে যেখানে দফায় দফায় সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে ২
জনের৷ জখম হয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি৷ ঠাকুর-দলিত সংঘাত এখন রূপ নিয়েছে দলিত বনাম
পুলিশের৷ এ নিয়ে দিল্লিকে রিপোর্ট পাঠায় যোগী সরকার৷ সেই সঙ্গেই করা হয় বাহিনী
পাঠানোর আর্জি৷
ঝামেলার সূত্রপাত্ ১৪ এপ্রিল৷ আম্বেডকরের
জন্মদিনে৷ দুধলি গ্রামে৷ অভিযোগ, আম্বেডকর জয়ন্তী পালনের নামে মুসলিম এলাকায় ঢুকে উস্কানিমূলক স্লোগান দেয় যুব
বাহিনীর সদস্যরা৷ যার জেরে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ যুব বাহিনীর এই আচরণ
একেবারেই ভালো লাগেনি দলিতদের৷ এর পর সরাসরি কোনও গণ্ডগোল না হলেও, ভিতরে ভিতরে উত্তাপ বাড়তে শুরু করে৷ যা
আগ্নেয়গিরির রূপ নেয় ৫ মে৷ সাব্বিরপুর দিয়ে ঠাকুরদের মিছিল যাওয়ার সময়, তারস্বরে মাইক বাজানো নিয়ে আপত্তি করেন
স্থানীয় দলিতরা৷ প্রতিবাদে অসংখ্য দলিতের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন মিছিলকারীরা৷ এর
পর আসরে নামে কট্টরপন্থী দলিত সংগঠন ‘ভিম সেনা’৷ পুলিশের অনুমতি ছাড়াই মহাপঞ্চায়েত ডাকে
তারা৷ তীব্র সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সঙ্গে৷ ২৩ মে মায়াবতী সাব্বিরপুরে যাওয়ার দিন ফের
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে দলিতদের৷ পর পর দুই সংঘাতে ২ জনের মৃত্যু হয়৷ পরের দিকে
সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সাহারানপুরে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকার ইন্টারনেট সংযোগ
বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে৷ ব্যাপক রদবদল রয়েছে প্রশাসনিক স্তরেও৷ সাসপেন্ড করা
হয়েছে ডিএম এবং এসপিকে৷ তা সত্ত্বেও এখনও অগ্নিগর্ভ সাহারানপুর৷
জাতিগত এই উত্তাপের মধ্যেই বিজেপি এবং
বিএসপির ‘রাবণ’ হয়ে উঠছেন ভিম সেনার প্রধান চন্দ্রশেখর৷ ৩০
বছরের নয়া ‘মসিহা’ র ডাকেই দিল্লির যন্তর-মন্তর কাঁপিয়ে দেন
দলিতরা৷ নয়া নেতার প্রতি দলিতদের এই আস্থাকে বহেনজির প্রতি তাঁদের ভরসার
ব্যস্তানুপাতিক বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ৷ অন্যদিকে, হিন্দু ভোট এককাট্টা করার যে কৌশল বিজেপি
নিয়েছিল, ভিম সেনার ‘রাবণ’ তাতে ধাক্কা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
সংঘর্ষগুলির প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন যে ২৪টি এফআইআর দায়ের করেছে, তার একটিতে নাম রয়েছে চন্দ্রশেখরের৷
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সাহারানপুরের
আগুন নিভে গেলেও, আগামী দিনে
উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে নিশ্চিত ভাবেই দলিতদের নতুন মুখ হয়ে উঠে আসতে চলেছেন
চন্দ্রশেখর৷
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=32012&boxid=153759344
No comments:
Post a Comment