Wednesday, May 31, 2017

Anupama Hansda, Santali Topper Girl in West Bengal Higher Secondary Exam-2017 wants development of Santali Language. সাঁওতালি ভাষার প্রসার চায় বান্দোয়ানের অনুপমা।


বান্দোয়ান ৩১ মে, ২০১৭

সাঁওতালি ভাষাভাষিদের কাছে গর্বের দিন হয়ে থাকল মঙ্গলবার। এ বারই প্রথম সাঁওতালি মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হল। তাতে মেয়েদের মধ্যে রাজ্যে সেরার শিরোপা পেল বান্দোয়ান গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী অনুপমা হাঁসদা। ৪০৯ নম্বর পেয়ে সে বান্দোয়ানবাসীকেও সাফল্যের স্বাদ দিল।
বান্দোয়ান গার্লস হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষিকা বীথিকা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাঁওতালি মাধ্যমে এ বারই প্রথম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হল। আর তাতে অনুপমার এই সাফল্য পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।’’ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পুরুলিয়া জেলা উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কল্যাণ মাহাতো বলেন, ‘‘সাঁওতালি মাধ্যমে রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে অনুপমার এই কৃতিত্ব অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।’’ প্রশাসনও এই মেধাবীর সাফল্যকে বিশেষ ভাবে সম্মান জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। বান্দোয়ানের বিডিও মহাদ্যুতি অধিকারী জানিয়েছেন, শুক্রবার তাঁরা ব্লক থেকে অনুপমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
অনুপমা প্রথম ভাষা হিসেবে সাঁওতালি নিয়েছিল। সাঁওতালিতে সে পেয়েছে ৮২ নম্বর। এ ছাড়া, ইংরাজিতে ৬৫, ভুগোলে ৯১, ইতিহাসে ৮৩ এবং সংস্কৃতে ৮৮ পেয়েছে সে। ভবিষ্যতেও সাঁওতালি বিষয় নিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায় এই মেধাবী। শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত হয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।   
বান্দোয়ানের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক উপেন্দ্রনাথ হাঁসদার নাতনি অনুপমা। উপেন্দ্রনাথবাবু সদ্য প্রয়াত হয়েছেন। আর কয়েকদিন পরে তাঁর পারলৌকিক কাজ হওয়ার কথা।
তাই এই আনন্দের দিনেও দাদুর কথা স্মরণ করে চোখ ছলছল করে ওঠে তার। বলে, ‘‘এত খুশির দিনে দাদুই আমাদের মধ্যে নেই। দাদু আদিবাসী সমাজের উন্নয়নের কাজ করে গিয়েছেন। আমিও সাঁওতালি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষকতা করে দাদুর সেই কাজই আরও বিস্তৃত করতে চাই।’’
স্কুলের সাঁওতালি ভাষার অতিথি শিক্ষক মহাদেব হাঁসদা বলেন, ‘‘মূলত দাদুর উৎসাহে অনুপমা প্রথম ভাষা হিসেবে সাঁওতালি বিষয় নিয়েছিল। তার দাদু নেই। তিনি থাকলে আজ সব থেকে বেশি খুশি হতেন।’’ কয়েকটি বিষয়ের গৃহশিক্ষক থাকলেও স্কুলের শিক্ষিকারা এই বুদ্ধিমতী মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। স্কুলের সময় ছাড়াও আলাদা ভাবে তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে দেখিয়ে দিতেন অনুপমাকে।
চার ভাই-বোনের মধ্যে অনুপমা বড়। বান্দোয়ানের মা কপালি গ্রামে তাদের বাড়ি। পড়াশোনার সুবিধার জন্য বান্দোয়ান বাজারে বাড়িতে থেকে পড়াশোনা চালায় সে। পড়ার সময় ছাড়া বাড়ির উঠোনে গাছের পরিচর্যা করা অনুপমার শখ।
তার বাবা স্বপন হাঁসদা বলেন, ‘‘বাবা ১০ বছর বিধায়ক থাকলেও বাড়ির অবস্থা আমাদের বিশেষ পাল্টায়নি। আমি সামান্য জমিতে চাষ করি। মেয়েকে বাইরের কলেজে রেখে কী ভাবে পড়ার খরচ চালাব, তাই নিয়ে চিন্তায় আছি।’’
অনুপমা অবশ্য এখনই হাল ছাড়তে নারাজ। সে যে এখন সাঁওতালি ভাষার প্রসারের স্বপ্নে বুঁদ।

http://www.anandabazar.com/district/purolia-birvhum-bankura/bandwan-s-anupama-wants-to-spread-the-santali-language-1.620971

No comments:

Post a Comment