লেখক – এদেল শঙ্খ হাঁসদা।
অনেকেই জানেন না ঝাড়খন্ড আন্দোলন কী এবং কেন এবং এই আন্দোলন কেন আজও খুব
তীব্র ভাবে প্রাসঙ্গিক। ঝাড়খন্ড নাম টির উল্লেখ আমরা ইতিহাসের পাতা তেও খুঁজে
পাই। মুঘল আমলের "আকবর নামা" গ্রন্থে এবং সাহিত্যে বৈষ্ণবতি (Vaishnavites) গ্রন্থে এই নাম পাওয়া যায়। সমস্ত ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চল কেই ঝাড়খন্ড নামে
আর্য এবং মুসলিম কাহিনীকার,
ঘটনাপঞ্জী লেখক গণ উল্লেখ করেছেন। কবে থেকে এই নামের শুরু
তা জানা না গেলেও তেরোশ শতকের থেকে আমরা এই নামের প্রথম প্রমাণ পেতে শুরু করি।
উড়িষ্যার নৃসিংহ দেব (দ্বিতীয়) তার তাম্রলিপি তে এই নামের উল্লেখ করেন, যেটা তিনি কোন এক ধার্মিক ব্রাহ্মণ কে দেন 1295 সালে। (see Journal of
Asiatic Society of Bengal. Vol.LXV, 1896, pp. 229-71) । সংস্কৃত শ্লোক "Aah Patra payam
panam, Sal
patra ch bhojnam, sayabam
kharjure patra, Jharkhand
Vidiyate" তেও ঝাড়খন্ড নামের উল্লেখ আমরা পাই। শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত
গ্রন্থের সতেরো তম শ্লোকে ঝাড়খন্ড এর নাম পাওয়া যায়। সমস্ত ছোটোনাগপুর মালভূমি
অঞ্চল কেই ঝাড়খন্ড নামে পরিচিতি দিয়েছেন আর্য এবং মুসলিম কাহিনীকার গণ। (Historical
basis of the name JHARKHAND: Mathew Areeparampil) ।
ঝাড়খন্ডী আন্দোলন এর লড়াই হল দুটি পৃথক সামাজিক ব্যবস্থার লড়াই। এটা হল
বহিরাগত জাতির সাথে এই দেশের ভূমিপুত্র দের লড়াই। আদিবাসী সমাজের সাথে অ-আদিবাসী
সমাজের লড়াই। ঐতিহাসিকভাবে ভূমিপুত্র দের এই লড়াই এর প্রমাণ মেলে গঙ্গা যমুনা
দোয়াব অঞ্চলে, খৃষ্ট জন্মের আগে মধ্য শতকের প্রথম দিক থেকে। যখন রাজ্যের সীমানা
নির্ধারণ করনের জন্য অনান্য বহিরাগত জাতির সঙ্গে সরাসরি লড়াই হয়।(Romila Thapar: From
Lineage to State.Oxford University Press. Bombay, 1980.p.10)
ঝাড়খন্ডী কারা?
এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমে আমাদের "ঝাড়খন্ড"
নামের যে সাধারণ সোজাসাপ্টা ধারণা আছে তা (ঝারি বা জঙ্গলে পরিপূর্ণ অঞ্চল) পরিবর্তন
করা দরকার, কারন এটি অ-আদিবাসীয় ধারণা। যদিও ভৌগলিক
ভাবে কিছু টা ঠিক কিন্তু এর সাংস্কৃতিক সামাজিক বৈশিষ্ট্য টি কে ধামাচাপা দেওয়া হয়।
সেটা হল "জাহের থান" এর সামাজিক সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। জাহের/জাহিরা
(সাঁওতালী/মুন্ডারী)
স্থলে খঁড/খন্ড (যে রূপ আর্য স্বস্তিকা চিহ্ন 卐)
কেটে পূজা অর্চনা কারি জাতির বসবাস অঞ্চলকেই বলা হয়
ঝাড়খন্ড। "জাহের খঁড" (সাঁওতালি/মুন্ডারি) থেকেই "ঝাড়খন্ড" কথাটির উৎপত্তি। কারন অ-আদিবাসী রা "জাহের
খঁড" কথাটি উচ্চারণ করতে পারতো না। এই ধরনের উচ্চারণ গত পরিবর্তন আদিবাসী
ভাষা সমূহের থেকে অ-আদিবাসী ভাষায় অনেক হয়েছে। সংস্কৃত ভাষা কে সর্বেসর্বা প্রমাণ
করার মানসিকতায় এই সমস্ত বিষয় কে উপেক্ষা করা হয়। কুড়মি মাহাতো গণ একেই
"গরাম থান" বলেন। ধর্মিয় এই পরিচয় ভারতবর্ষে আদিবাসীদের প্রাচীন কাল
থেকেই ছিল এবং এখনো আছে,
কিন্তু এই পরিচয় কে ধামাচাপা দেবার চেষ্টায় অন্যান্য ধর্ম
গুলি বরাবর সচেষ্ট। তাই সাংবিধানিক ভাবে আদিবাসী দের ধর্ম কে স্বীকৃতি দেওয়া হয়
নি। বরং তার বদলে এদেরকে হিন্দু করণ এবং খ্রিস্টান ধর্মের ছত্রছায়ায় আনার একটা
সাংগঠনিক প্রচেষ্টা বরাবর চলেছে। যাইহোক, ঝাড়খন্ডী অর্থে মূলত যাদের বোঝানো হয়
তারা হল – সাঁওতাল, মুন্ডা, খেড়িয়া, ভূমিজ, খেরওয়াড়, এবং মোহাউলি (অস্ট্রিক) ও
ওঁরাও(দ্রাবিড়)। এরা ঐতিহাসিক ভাবেই এখানকার আদি বাসিন্দা। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
দিক দিয়ে এরাই ঝাড়খন্ডী। পরবর্তী কালে এই জাতি গুলির সামাজিক ও অর্থনৈতিক
প্রয়োজনের জন্য যেসব জনগোষ্ঠীর আগমন হয় তাদের গান্ধীজী হরিজন নামে পরিচিতি দেন। হরিজন
দের মধ্যে বাউরি, মুচি, রাজওয়াড়, ধোবি, ভুঁইয়া, এবং বেশ ভালো পরিমাণে নাগ, সদন, কুড়মি(কুর্মি_???),
ছেরী, মোমিন এবং মন্ডল হল ঝাড়খন্ড অঞ্চলের ভৌগলিক সীমানার
মধ্যে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী (A.K.ROY)। বর্তমানে এই হরিজন
সম্প্রদায় গুলির মধ্যে কিছু জাতীয়তাবাদী কুড়মি ছাড়া কেউ নিজেদের কে ঝাড়খন্ডী বলে
ভাবে না কারণ তারা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সামাজিক ভাবে বাঙালি হিন্দু তে রূপান্তরিত
হয়ে গেছে। হিন্দুকরণ এর ফলে এই জনগোষ্ঠী গুলি নিজেদের কে মূল পরিচয় থেকে অনেক দূরে
সরিয়ে নিয়ে গেছে।(A.K.ROY.__Jharkhand
: Internal Colonialism)।
এখানে উল্লেখ করা ভালো যে বিহারী কুর্মি এবং ঝাড়খন্ডী ও পশ্চিমবঙ্গীয় কুড়মি
মাহাতো দের মধ্যে প্রভেদ আছে যা অনেকের অজানা। বিহারের কুর্মি গন All India kurmi
khatriya Mahasabha 1894 সালে গঠন করেন, উদ্দেশ্য সমস্ত কুর্মি এবং অনুরূপ জনগোষ্ঠী কে একটি ছাতার তলায় আনা। এই
কুর্মি সংগঠন টি পাশ্বর্বর্তী মাহাতো কুড়মি দের কে 1924 সাল পর্যন্ত মেনে নেয়নি।
তার আগে অন্ধ্র এবং গুজরাতের স্বজাতির দের কেই সঙ্গে নেয়। 1924 সালের সময় থেকেই
কংগ্রেস সমাজকর্মী গন হিন্দু ক্ষত্রিয়করন আন্দোলন কুড়মি মাহাতো দের মধ্যে জোরদার
করেন (Mehta.1982)। ফলে সেইসময়েই মাহাতো কুড়মি দের অনেকাংশেই হিন্দুকরণএর সাথে
মিশে যান। এবং এই দিন থেকেই সাঁওতাল ও মাহাতো দের মধ্যে সামাজিক ও মানসিক দূরত্ব
বাড়তে থাকে। যা আজকে বাড়তে বাড়তে আলোকবর্ষর দূরত্বে পৌঁছেছে। 1920 সালের পর থেকেই
হিন্দুকরণ তাদের মধ্যে খুব শক্তিশালী ও গভীর প্রভাব ফেলে এবং তারা তখনই নিজেদের
হিন্দু বলে ঘোষণা করে। তারা তাদের নিজস্ব স্বজাতি ভাইয়ে দের ঘৃণা করতে শুরু করেন। এর
ফল স্বরূপ 1931 সালে "আদিবাসী" Scheduled Tribe তালিকা থেকে বেরিয়ে যায় বা বের করে দেওয়া হয় (see "Reapprising Tribal
Movement" by Nirmal Sengupta in EPW, 7
May 1988 to 28 May 1988)। কুড়মি গন সম্পূর্ণ বিদেশী একটি সমাজ সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার সাথে মিশে
যাওয়া থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তাঁদের মধ্যে থেকেই সমসাময়িক কালেই গোঁসাই আন্দোলন শুরু
করে। কিন্তু ততদিনে যা হবার হয়ে গেছে। হিন্দুকরণকারী রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে
গোঁসাই আন্দোলন হাওয়ার মতো উড়ে যায় কারন এই আন্দোলন ছিল আর্থিক ও সাংগঠনিক দিক
দিয়ে দূর্বল। যদিও পরবর্তীতে তারা OBC তে অন্তর্ভুক্ত
হয়। এখানে জানানো যায় যে এই সমসাময়িক কালে 80-90% কুড়মি মাহাত গন সাঁওতালী ভাষায়
কথা বলতে পারতেন।
এখানে অনেকেই বলবেন যে সাঁওতাল গনও অনেক ক্রিশ্চান ধর্ম গ্রহণ করেছেন কিন্তু
তবুও তারা তো জাতিগত সংশাপত্র পায়। হ্যাঁ পায়, কারন ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ
কিন্তু হয় নি। এই কারনেই খৃষ্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তারা শুধু উপাসনা পদ্ধতি
বদলেছে কিন্তু তারা সাঁওতালী ভাষা ও সংস্কৃতিকে পুরোপুরি ত্যাগ করেনি বরং সাঁওতালী
ভাষা কে তারা অনেকটাই ধরে রেখেছে। Ethnically তারা আদিবাসী সাঁওতালেই রয়ে গেছে ইউরোপিয়ান হয়ে যায় নি। ক্রিশ্চানরা
ধর্মান্তরিত সাঁওতাল দের পিঠে ছুরি মারে নি যে রূপ ধর্মান্তরিত কুড়মি মাহাতো দের
পিঠে হিন্দু উচ্চবর্ণ মানসিকতা ও জাতিভেদ প্রথা ছুরি মেরেছে। জাতিভেদ প্রথা আজও
হয়তো মনের গভীরে গোপনে লালিত পালিত হয়। তাই কুড়মি দের listed Tribal Group থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সাঁওতাল দের মধ্যে এই ধর্মীয় বিভেদ এতটা মাথাচাড়া
দেয় নি। উচিত ও না। এখন পর্যন্ত 12টি Surname এর মধ্যে দিয়েই সাঁওতাল গন একহয়। খ্রিস্টান ও খ্রিষ্টান নয় এমন সাঁওতাল দের
মধ্যে আদি ভাইয়ের টান টা রয়েই গেছে। তাই তারা এক এবং অভিন্ন। যাইহোক এই বিষয়ে আরো
গভীর আলোচনা দরকার।
স্বাধীনতার পরবর্তী কালে ঝাড়খন্ডী আন্দোলন কে বুঝতে গেলে আমাদের কে অবশ্যই
বিভিন্ন অঞ্চলে উন্নয়নের বিভিন্ন ধারা কে বুঝতে হবে। দুই ধরনের সমাজ ব্যবস্থা - আদিবাসী সমাজ ব্যবস্থা ও অ-আদিবাসী সমাজ ব্যবস্থা
যে "আভ্যন্তরীণ উপনিবেশিকতা"(internal colonialism ) রূপে সমস্যার সৃষ্টি করে তা অনেক টা আফ্রিকার সমস্যার মতো, যদিও সেখানে
শোষণকারী এবং শোষিত মানুষ একই সাথে একটি ভৌগলিক সীমানা/পরিবেশে বসবাস করে না, সামাজিক ভাবেও যুক্ত নয়। এই অদ্ভূত পরিস্থিতি রাশিয়া, চীন বা ভিয়েতনামে নেই।
ভারতে দুটি পরস্পরের বিরোধী সমাজ একই ভৌগলিক সীমানায় বাস করে। তাই ভারতবর্ষে
অনুন্নত অঞ্চল শোষিত হয় উন্নত অঞ্চলের দ্বারা, কম উন্নত মানুষ শোষিত হয় উন্নত
মানুষ দ্বারা। আদিবাসী ভাষা সমূহ কম গুরুত্ব পায় অ-আদিবাসী ভাষা সমূহের কাছে। তাই
দুটি সমাজে বিভাজনের দূরত্ব অনতিক্রম্য হয়ে গিয়েছে। একই ভৌগলিক পরিসীমায় পাশাপাশি
দু’টি সমাজ দীর্ঘ দিন ধরে থাকা সত্ত্বেও, সম্পর্কিত হয়েও এক হতে পারে নি। কারন
সমাজ সম্পর্কিত মূল ধারনা টাই আলাদা।
আদিবাসী সমাজ সাম্য বিহীন সমাজের সাথে পরিচিত নয়। তাই অ-আদিবাসীদের সাথে আদিবাসী
দের সম্পর্ক শোষক এবং শোষিত-র। আদিবাসী ভারত গরীব নয়, চোর চামার দের দেশ নয়।
লুটেরাদের দেশ নয়। ধর্ষকদের দেশ নয়। আদিবাসী ভারত গরীব নয় বলেই বর্তমানে শত
দারিদ্র্য তার মধ্যে থেকেও সাঁওতাল আদিবাসীরা ভিক্ষুক নয়। ওই স্বভাব তারা পায় নি। অপরাধ
প্রবণ জাতি নয়। ভিখারী ঠগ ও প্রতারক নয়। কোন দিন ছিলোনা। কারন এটা তাদের দেশ। তারা
নিজের দেশ কে সৎ ভাবে ভালোবাসে বলেই তারা পরিশ্রমী। কেউ কি নিজের বাড়িতে ডাকাতি
করে? লুঠ করে?? জমি লুঠ, ফসল লুঠ, জালিয়াতি, এই সব আদিবাসীদের চরিত্রে নেই। এ গুলো
অ-আদিবাসীয় বিদেশীয় চরিত্র। যা আজও আমরা প্রতিদিন দেখতে পাই অফিস আদালতে।
সাঁওতাল ও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হল ভারতের সবথেকে বেশি প্রাকৃতিক সম্পদে
পরিপূর্ণ অঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া,
বীরভূম সহ বর্তমান ঝাড়খন্ড, উড়িষ্যার সুন্দরগড়,
কেওনঝোড়, ময়ূরভঞ্জ, সম্বলপুর এবং মধ্যপ্রদেশ এর সরগুজা, রাইগড় হল সাঁওতাল সহ অন্যান্য আদিবাসীদের ধাত্রী ভূমি যেখানে "প্রকৃতি
মা" তাঁদের আঁচল ভরে সব কিছুই দিয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ যা ভারতের মোট
উৎপাদনের 50% কয়লা, 100% কপার, ও 40% বক্সাইট পাওয়া যায় এই সাঁওতাল সহ অন্যান্য
আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে। এছাড়াও হীরা, ইউরেনিয়াম সহ অন্যান্য খনিজ সম্পদ
উৎপাদনেও এই অঞ্চল দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় স্থানে থাকে। তাই এই অঞ্চল ও এখান কার
অধিবাসী আদিবাসীরা হল বাঙালি, বিহারী, ওড়িয়া শাসক শ্রেণীর কাছে
"কামধেনু" স্বরূপ । প্রত্যেকেই চায় যতটা সম্ভব এই অঞ্চল থেকে, এদের কাছ
থেকে শেষ ফোঁটা টুকু নিংড়ে নিতে, শুষে নিতে, ক্ষুধার্ত, দঙ্গল কুমিরের সামনে মাংশ
খন্ডের মতো অবস্থা আদিবাসীদের। প্রত্যেকেই চেয়েছে উন্নয়ন। কিন্তু এই উন্নয়নের
ক্রিম পায় কারা?
অবশ্যই আদিবাসীরা নয়। তাই আমারা দেখি আদিবাসী অধ্যুষিত
অঞ্চলে উন্নয়ন কম। কিন্তু বড়ো বড়ো জলাধার, কারখানা, কয়লা খনি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সব এই আদিবাসী সাঁওতাল অধ্যুষিত অঞ্চলে। এই সমস্ত শিল্প কেন্দ্রে তাপবিদ্যুৎ
কেন্দ্রের প্রাচীরের ভিতর আলো জ্বলে চারিদিকে কিন্তু প্রাচীরের বাইরেই অবস্থিত
সহস্র সাঁওতাল আদিবাসী গ্রাম থাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত। এই আভ্যন্তরীণ উপনিবেশিকতা
এই শতকে নতুন আঙ্গিকে প্রকাশিত। এ কথা অনস্বীকার্য 2011 সালের আগে পশ্চিমবঙ্গের
সাঁওতাল আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ ও সড়কের স্বপ্ন ছিল অলীক।
অথচ সেই বিদ্যুত উৎপাদন হত সাঁওতাল ডি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের
যে ভৌগলিক পরিসীমা তা পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার সাঁওতাল আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল কে
বাদে করা হয়েছে কারন অবশ্যই অর্থনৈতিক শোষন এবং শোষক জাতীয়তাবাদ। বিহারী, বাঙালি
ও উড়িষ্যার শাসক শ্রেণী সাঁওতাল আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল কে দোহন করতে চেয়েছে, এই
অঞ্চলেই তো তাদের কাছে "কামধেনু" - যে মুখ বুজে দুধ দিয়ে যাবে নির্লিপ্ত
ভাবে। যখন তখন। তাই কোনোরকম ভাবেই এই অঞ্চল কে তারা হাতছাড়া করতে চায় নি। তাই যখন
ঝাড়খন্ড গঠনের প্রস্তাব ওঠে তখন বামপন্থী দল গুলির আসল স্বরূপ প্রকাশ পায়। যে দল
গুলি এতো "সাম্যবাদ, সমাজতন্ত্র" নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে আদিবাসী
সাঁওতাল দের কে নিজেদের দলে টেনেছে তারাই এর বিরোধিতা করে। এমন কি তারা এই
ঝাড়খন্ডী আন্দোলন কে দমন করতে শারিরীক ভাবে আঘাত (খুন, জেলবন্দি, গুপ্তহত্যা, অপহরণ)
করতেও পিছপা হয় নি। (The
Jharkhand Movement. Published in: For a New Democracy,
Feb.1986.by SANTOSH RANA)। তারা স্বীকার
করে যে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী আদিবাসী জনগোষ্ঠী দের পুঁজিবাদী শোষক
শ্রেণীর হাত থেকে বাঁচতে গেলে আদিবাসীদের পৃথক রাজ্যের দাবিকে মানতেই হবে। কিন্তু
কার্য ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যখনই পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ [পুরুলিয়া, বাঁকুড়া (কিছু
অংশ ), পশ্চিম মেদিনীপুর (কিছু অংশ) ও ঝাড়গ্রাম] ঝাড়খণ্ডের মধ্যে আনার কথা হয়
তখনই তারা তাদের মধ্যে জাতিবিদ্বেষের প্রভাব দেখা দেয়। তাদের কাছে "বাঙালি
জাতীয়তাবাদ" এর পরিচয় বড় হয়ে ওঠে "আদিবাসী জাতীয়তাবাদ" এর চেয়ে।
ভারতের রাজনৈতিক দল গুলির মধ্যে Congress (Indira), CPI, CPI(M), BJP এই পৃথক রাজ্যের দাবিতে ঝাড়খন্ড আন্দোলন এর বিরোধিতা করে। CPI পৃথক ঝাড়খন্ড রাজ্যের বিরোধীতা করে পশ্চিমবঙ্গে রাস্তায় আন্দোলনে নামে। CPI(M) এর যোগ্য সঙ্গত দেয়। পশ্চিমবঙ্গের CPI, CPI(M) এর এই দ্বিচারিতার কারন এটাই যে "বাঙালী জাতীয়তাবাদ পরিচয়" বেশী
গুরুত্ব পূর্ণ, বেশি দামি তাদের কাছে, "আদিবাসী ঝাড়খন্ডী জাতীয়তাবাদ
পরিচয়" এর চেয়ে। তাই পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী সাঁওতাল অধ্যুষিত অঞ্চল বাদেই
ঝাড়খন্ড রাজ্য গঠন করা হয়। আর এই আদিবাসী সাঁওতাল জাতীয়তাবাদ বিরোধিতার মিছিলে
সর্বাগ্রে ছিলেন আমাদের CPI(M), CPI
এর "উন্নয়নের" ধ্বজাধারী আদিবাসী সাঁওতাল গন। অনুরূপ
ভাবে উড়িষ্যা, বিহারেও এই আন্দোলনের বিরোধিতা করা হয়। (The Jharkhand
Movement: By
Santosh Rana)। সব জাতীয়তাবাদ চলবে, কিন্তু
"সাঁওতাল আদিবাসী জাতীয়তাবাদ" চলবে না, সাঁওতাল আদিবাসী জাতীয়তাবাদ হলে কেউ এদের লুটতে পারবে না। এদের হাতে থাকা
প্রাকৃতিক সম্পদ কে নিজের কাজে ইচ্ছে মত ব্যবহার করতে পারবে না। তাই Internal colonialism
এর এই ইতিহাস আমাদের জানা দরকার। এখানে জানানো যায় যে, 1969-70 সালে ডেবরা গোপিবল্লবপুর, বাহরাগোরা (Bahragora) অঞ্চলে (একসময় বিহার-বেঙ্গল-উড়িষ্যার মিলিত স্থান) যে কৃষক বিদ্রোহ হয়েছিল তা
আজো ঝাড়খন্ড এর কথা-উপকথায় পাওয়া যায় (Dev Nathan)। কারন এই অঞ্চল ঝাড়খন্ডী ভাব ধারার সাথে সম্পৃক্ত। যে সমস্ত আন্দোলন এই
ঝাড়খন্ড রাজ্যের সারবত্তা নিয়ে অর্থাৎ স্বাধীন ভাবে স্বশাসিত হয়ে থাকার জন্যে (স্বাধীনতা
পাবার জন্য) হয়ে ছিল সে গুলো হল :
1793: First
Santal Revolt under the leadership of Tilka Majhi
1798:The
Bhumij Revolt
1799:The
chuar (?)Tribe of Midnapore
1810: The
chero uprising of Palamu led by Bhukan Singh
1819-20:Munda
uprising of Tamar led by Rudu and Konta
1833:Kol
Rebellion led by Singhrai and Binari Manki
1934:The
Second Bhumij Revolt led by Ganganarain
1855: The
Second Santal Rebellion led by Siddhu and Kanhu
1857:Sepoy
Mutiny led by Biswanath Saahi,Ganpat Rai,Seikh Bhikari and Bir Budhu Bhagat
1875-95: Sardar
Movement
1895-1900;
Tana Bhagat Movement under the leadership of Jatra Bhagat. [(1.Munda
and keshri, 1992, p, 7) (2.The Question of
Identity and sub-Nationality:A case of Jharkhand Movement in Bihar. By
K.L.SHARMA)]
এখানে উল্লেখ্য আদিবাসীদের সমস্যা সমাধনার্থে Regulation XIII of 1883 পাশ করা হয়। According
to which the districts of the Jangalmahal was dissolved snd a new district of
Manbhum was Formed। যে জঙ্গলমহলের নাম আমরা হামেশাই
এখন শুনি এখন তার ইতিহাস এখান থেকেই শুরু। মারাং গোমকে জয়পাল সিং মুন্ডা, এন ঈ
হোরো, শিবু সোরেন,
বিনোদ বিহারী মাহাতো, নির্মল মাহাতো, সূর্য সিং বেসরা, সালখান মুরমু, নরেন হাঁসদা, এ কে রায় - সকলেই প্রচেষ্টা করেছেন নিজ নিজ ভাব ধারায় সাঁওতাল
সহ অন্যান্য আদিবাসীদের এক জাতীয়তাবাদ চিন্তন এর মধ্যে আনার। সফলও হয়েছেন অনেকটাই।
এই "আদিবাসী জাতীয়তাবাদ" চিন্তন ও মনন বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ নিবাসী
সাঁওতাল সহ অন্যান্য আদিবাসীদের অনেক কম। ঢাকা পড়ে গেছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ এর
"হেজিমনি" Hejimony
অর্থাত্ cultural Dominance এর কারনে আদিবাসী সমাজ সাংস্কৃতিক চেতনা, জীবন ধারা, মূল্যবোধ,
পারম্পরিক গনতান্ত্রিক সামাজিক ব্যবস্থা গুলি লুপ্তপ্রায়।
এর ফলে পশ্চিমবঙ্গে সাঁওতাল ও আদিবাসীদের কোন রাজনৈতিক স্ট্যান্ড নেই, ফলত তারা
পুতুল এ পরিনত হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বুকে একটা মাত্র সিঙ্গুর উচ্ছেদ শিল্পের জন্য হয়েছিল বলে রাজ্য
সরকার পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে যায়, কিন্তু এর চেয়ে বড় বড় উচ্ছেদ সাঁওতাল আদিবাসী
অধ্যুষিত অঞ্চলে হয়েছে তথাপি তার কোন উচ্চবাচ্য হয় না কারন এখানেও দেশের উন্নয়নের
নামে শোষণের মানসিকতা কাজ করে। একই কথা প্রযোজ্য উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড় এর সাঁওতাল আদিবাসী দের ক্ষেত্রেও। আদিবাসী সাঁওতাল
দের কাছে উন্নয়নের প্রশ্নের চেয়ে আইডেন্টিটি র প্রশ্ন বরাবর বেশি গুরুত্ব পূর্ণ।
আদিবাসী সাঁওতাল দের যে ভাবে আত্মপরিচয় এর প্রশ্ন কে অগ্রাহ্য করে উন্নয়নের গোলোক
ধাঁধায় ঘোরানো হচ্ছে বা হয়ছে তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। আদিবাসীদের প্রতি অন্যায়ের
অত্যাচারের নিদর্শন আমরা সত্তর (৭০) তম স্বাধীনতা পালন করতে চললেও দেখতে পাই
ছত্তিশগড়, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যার বিভিন্ন স্থানে। মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ
আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে বড় বড় কলকারখানা থাকলেও এখানকার মানুষেরা আজও অনেকাংশেই
অন্ধকারে নিমজ্জিত। আদিবাসীদের তাদের ভূমি থেকে উন্নয়নের নামে তাড়িয়ে দিলেও সে
সংবাদ কানে পৌঁছায় না। বিভৎস কিছু উচ্ছেদ নমুনা নিচে দেওয়া হল :-
Displacement and
Rehabilitation by Coal Mines, 1981-85
Name of the company
/No.of persons displaced/ Number of jobs provided to one member of the family /%
of displaced families.
1. Eastern
Coal Fields Ltd -81100-4195-33.32%
2. Central
Coal Fields Ltd -43600-3984-50.25%
3. Western
Coal Fields Ltd -34300-2250-36.10%
4.Bharat
Coking Coal Ltd -21100-752-19.58%
Source: Govt.of
India 1985, Quoted in Fernandes, w., and Thukral, E.G. (ed.1989.): Development,
Displacement and Rehabilitation, New Delhi: Indian Social Institute.
___________________________________
Project in
Jharkhand:
Name of the project
/area covered /Number of displaced persons/ %of Tribal in Displaced Persons
1. Icha
(kharkai river)-4268.29 hec.-30800-90.00%
2.Chandil
(swanrekha river)-17,683.00 hec.-37600-87.92%
3. Netarhat
Field Firing Range-245 villages. 4368..17
hec.-150000-90.00%
4.North
Koel Palamau- 20,000-6000-72.00%
Source :Vikasman
(undated),Bulletin 2, Tribal Resource Research and
Training Centre, Ranchi.
___________________________________
Magnitude of
Displacement by Developmental Projects
Name of the project
/Magnitude of Displacement
1. TISCO
(1907)-3564 acres of tribal land
2.Rourkela
Steel Plant (1956)-32 villages and 2465 families
3.Heavy
Engineering Corporation . Ranchi(1958)-9200 acres and 25
villages and 12990 tribal
4. Bokaro
Steel Plant-46
villages and 12,487 Tribals
5.Coal
Mining (1981-85)-32709 tribal families
6. CCL-ICL
(1981-85)-150300 acres
7.Icha
Dam (1990)-21,00 acres in Bihar, 10,500
acres in Odissa. 5600 families
8. Chandil
Dam (1990)-43495 acres. 6773
families
9. Koel
karo (1990)-16350 families(70%
of Tribal )
10. Netarhat
Firing Range -224900 (78% tribal ).
___________________________________
Dvc (Damodar Valley
Corporation )
240
villages spread across four districts - Dhanbad and Jamtara of Jharkhand;
Burdwan and Purulia of Bengal -
15,000
families had lost their land, out of which only 500
had received compensation from the PSU. Around 38,000
acres was acquired for the project from 15,000 land owners. Around
5,000 of them had also lost their homes. Instead of the
original land losers, DVC provided compensation and jobs to around 9,000
impostors.
Sources: Tuesday ,
October 18
, 2016, The Telegraph.
এর পরের পরিসংখ্যান গুলি এই মুহূর্তে দিতে পারলাম না। পরে include করে দেওয়া যাবে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মাননীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
তাঁদের ভাষণে নতুন ভারত গড়ার ডাক দিয়েছেন। কিন্তু এই নতুন ভারত আদিবাসীদের কে বাদে
হতে পারে না। আদিবাসীদের সামাজিক সাংবিধানিক অধিকার কে উপেক্ষা করে, তাদের ভাষা
সংস্কৃতি বৈশিষ্ট্য কে পদদলিত করে, তাদের ধর্মিয় আত্মপরিচয় কে মিশিয়ে দিয়ে, জাতি
হিসাবে তাদের বাঁচার আকাঙ্ক্ষা কে হেয় করে নতুন ভারত হতে পারে না। হবে না। ADIVASIDOME ভারতবর্ষ কে যত দিন না মেনে নিতে পারি, ততদিন এই ভারত
আধুনিক হতে পারে না।
আজ যদি ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের প্রত্যন্ত কোন গ্রামে এক আদিবাসী-র চোখ
দিয়ে এই ভারতবর্ষ কে দেখি - ভৌগলিকসীমানা ছাড়া কিছুই বুঝতে পারিনা। কারন আমি জানি
আমার দেশ শুধু জঙ্গলে ঘেরা, আমার গ্রাম ও গ্রামের চারপাশ টুকু। আর তার বাইরে আমার
সম্পদ লুটে নেবার জন্য, ঠকিয়ে নেবার জন্য, অফিসে আদালতে
হয়রান করার জন্য সব ক্ষুধার্ত বাঘের মতো সব বসে আছে। আমি ওরকম দেশে যেতে আজও ভয়
পাই। কারন আমার দেশ তো এরকম নয়। আর এই ভয় ভীতি থেকে মুক্তির পথ কোনো অ-আদিবাসী
রাজনৈতিক দল দেখাতে পারে নি। বরং এই ভীতি টাকে কাজে লাগানো হয় শোষন করার জন্যে। এই
জন্য আজও আমরা দেখি ছোটোনাগপুর অঞ্চল থেকে আদিবাসীদের কাজের জন্য লেবার হিসেবে
বাইরে আসতে হচ্ছে তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে। আন্তঃরাজ্যের মধ্যেই এই লেবার মাইগ্রেশন
কেন আজও ??
আসলে উন্নয়নের যে পরাকাষ্ঠা দেখানো হয়েছে তা আদিবাসীদের
জন্য নয়। পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে আদিবাসী সাঁওতাল গন তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে যত
পরিমাণে বেরিয়েছে বা বের করানো হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে অ-আদিবাসীরা ওই
আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। কারন কি?? এই করন অনুসন্ধান করার সৎ সাহস থাকলে দেখা যাবে আদিবাসীদের প্রতি বিভীষিকাময়
বঞ্চনার ইতিহাস। তাদের জমি, ভিটেমাটি বেনামে দখল করার ইতিহাস। এই দেশের ঘুষখোর, জালিয়াতি
ব্যাবসায়ী কারবারি, ভুয়ো ডাক্তার, এর পরিসংখ্যানে কয় জন আদিবাসী, সাঁওতাল আছে?? এই কথা ভাববার বিষয় নয় কি এত শত অত্যাচার সহ্য করেও আদিবাসী সাঁওতাল গন
দেশদ্রোহী হয় নি, হাতে আধুনিক মারণাস্ত্র তুলে নেয় নি কেন?? কারন আদিবাসী সাঁওতাল গন এই দেশ কে নিজের দেশ ভাবে ও দেশের মানুষের নিজের
মানুষ ভাবে। আদিবাসী সাঁওতালগন ই হলো প্রকৃত ভারতীয় যারা ধর্মের নামে মানুষ খুন
করে নি, করো খাদ্য অভ্যাসের জন্য কাওকে হত্যা করে নি। আজ ভারত আদিবাসীদের জীবন ও সমাজ দর্শনের জন্যই, এই মৌলিকতার জন্যই বিশ্ব দরবারে মাথা
উঁচু করে দাঁড়িয়ে।
সংরক্ষণের বেড়া জালে আবদ্ধ না রেখে আদিবাসী, সাঁওতাল দের জন্য রাজ্য পুনর্গঠন হোক, ভাষা এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
বৈশিষ্ট্য কে সাংবিধানিক ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হোক, সঠিক ভাবে Implementation করা হোক আদিবাসীদের স্বার্থে সাংবিধানিক আইন গুলির, আমার বিশ্বাস তবেই নতুন আধুনিক ভারত বেরোবে।
References :
1.Chotonagpur
:the Pre-colonial and colonial situation - Romila Thapar and H.M Siddiqi
2. JHARKHAND:
Internal Colonialism - AK Roy
3. Land
and Death - Xavier Dias
4. Tribal
Autonomy Movement in Chotonagpur - K S Singh
5. Jharkhand
Movement - Santosh Rana ( for a New Democracy February1986)
6. Jharkhand
:Factor and Future - Dev Nathan
7. The
Ideology of Tribal Economy and Society: politics in Jharkhand - Stuart
Corbridge
8. Jharkhand
Problem in Perspective - Jagnnath Sarkar.
9.The
Jharkhand Movement, Indigenous people's struggle for Autonomy in India.
ডিসক্লেমার : সব ভাবনা লেখকের নিজের।
No comments:
Post a Comment