Monday, September 18, 2017

ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর নালিশ।


ঝাড়গ্রাম| ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭।

ফের কাঠগড়ায় ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। এ বার নালিশ বিনা চিকিৎসায় শিশুমৃত্যুর। রূপম মাহাতো নামে এক বছরের ওই শিশু জ্বর নিয়ে শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়। অভিযোগ, সারা রাত তাকে বিনা চিকিত্সায় ফেলে রাখা হয়। রবিবার সকালেও কোনও চিকিত্সক তাকে দেখেননি। এরপরই শিশুটির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। রূপমের বাবা হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে এক প্রসূতি মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ধুন্ধুমার বেধেছিল। তার রেশ কাটতে না কাটতেই বিনা চিকিৎসায় শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি। তিনি বলেন, “অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে কাউকে রেয়াত করা হবে না।” 
রূপমের বাড়ি সাঁকরাইল থানার চুনপাড়া গ্রামে। বাবা অমল মাহাতো গাড়িচালক। অমলবাবু জানান, দিন কয়েক আগে রূপমের জ্বর হয়েছিল। স্থানীয় চিকিত্সকের ওষুধে জ্বর কমেও গিয়েছিল। শনিবার বিকেলে ফের জ্বর আসে রূপমের। সঙ্গে বাম উরুতে ফোলা ভাব। শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তাকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান পরিজনেরা। রপমকে মায়ের সঙ্গে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে রাখা হয়। রূপমের মা অনুপমা মাহাতো বলেন, ‘‘শনিবার গোটা রাত, তারপর এ দিন সকালেও কোনও চিকিত্সক রূপমকে দেখতে আসেননি। ছেলের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ওর বাবা এক শিশু বিশেষজ্ঞের প্রাইভেট চেম্বারে ছেলেকে দেখানোর জন্য নাম লেখান।’’ তার আগেই অবশ্য সকাল ৯টা নাগাদ মারা যায় রূপম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, শিশুটির বাম উরুতে প্রচুর পুঁজ জমে ছিল। রাতে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের অন কলশল্য চিকিত্সক ছিলেন গৈরিক মাজি। গৈরিকবাবুর দাবি, রাত ১২টা নাগাদ তিনি শিশুটিকে দেখতে ওয়ার্ডে যান। তখন মা-শিশু দুজনেই ঘুমিয়ে ছিলেন। গৈরিকবাবু বলেন, “নার্সকে ওষুধ লিখে দিয়ে গিয়েছিলাম। শিশুটির রক্তের কয়েকটি পরীক্ষা করানো প্রয়োজন ছিল। যা মাঝরাতে সম্ভব ছিল না। সকালে রক্ত পরীক্ষা করে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিই। তার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ দিন হাসপাতালে এসেছিলেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের ঝাড়গ্রাম জেলা নেতা গৌরাঙ্গ প্রধান। তাঁর প্রশ্ন, “রাতে চিকিত্সক যদি ওয়ার্ডে গিয়েই থাকেন, তাহলে শিশুটির মাকে তিনি ঘুম থেকে ডেকে তোলেননি কেন?” হাসপাতালের সুপার মলয় আদক জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি গড়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৮/০৯/২০১৭।

No comments:

Post a Comment