আউশগ্রাম, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
কয়েক হাজার মানুষের প্রধান জীবিকা, শালপাতার থালা তৈরি করা। কিন্তু, বৃষ্টি পড়লেই
কাজে ক্ষতি। কারণ, শালপাতা শুকনোর জন্য কোনও ছাউনি নেই। আউশগ্রামের নানা গ্রামে এই
পেশার মানুষদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে বহু বার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু
লাভ হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের শোকাডাঙা, জরকাডাঙা, কুচিডাঙা, অমরপুর,
আদুরিয়া, জালিকাঁদর, জামতারা, দেবশালা, ভাল্কি-সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের কয়েক হাজার আদিবাসী
পরিবার এই পেশায় যুক্ত। গ্রামের মহিলারা আউশগ্রাম, ভাল্কি ও আদুরিয়ার গভীর জঙ্গল থেকে
শালপাতা তুলে আনেন। তা শুকিয়ে কাঠি দিয়ে সেলাই করে তৈরি হয় থালা। সাধারণত বাড়ির উঠোনে
বা অন্য কোনও জায়গায় অনেকে মিলে এই কাজ করেন। পরে সেগুলি কিনে বাজারে নিয়ে যান মহাজনেরা।
কিন্তু বৃষ্টি পড়লেই সমস্যা। জামতারার সুমি মুর্মু, প্রেমগঞ্জের চুরকি হেমব্রম, শোকাডাঙার
সুন্দরী টুডুদের অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনের কাছে ছাউনি চেয়ে আর্জি জানানো হয়েছে।
কিন্তু কেউ কর্ণপাত না করায় বৃষ্টি পড়লেই কাজ বন্ধ রাখতে হয়।” কারিগরদের দাবি, এমনিতেই
হাজার প্রতি থালায় মজুরি হিসেবে মাত্র ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা করে মেলে বলে জানান আউশগ্রামের
লক্ষ্মী মুর্মু। তা ছাড়া কাগজ, থার্মোকলের থালার কারণেও এই শিল্প ধুঁকছে। তার মধ্যে
বর্ষায় উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ে বলে দাবি অমরপুরের সোনামণি সরেন।
যদিও বিডিও (আউশগ্রাম ১) চিত্তজিৎ বসুর দাবি, ‘‘ওই কারিগরদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা
রয়েছে আমাদের।’’ আউশগ্রাম ২-র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলির দাবি, ‘‘শালপাতা
তৈরি ও তা মজুত রাখার জন্য নানা এলাকায় ১০টি ‘ওয়ার্কশেড’ তৈরি হবে। তার দরপত্রও ডাকা
হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১১টি ‘ওয়ার্কশেড’ অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’
No comments:
Post a Comment