সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের জন্য জারি থাকবে সংরক্ষণ, রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সরকারি চাকরিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST)
প্রার্থীদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোনও রকম শর্ত আরোপ করা যাবে না বলে
সাফ জানিয়ে দিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার ২৬ শে
সেপ্টেম্বর, ২০১৮ এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। একই
সঙ্গে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আরও ক্ষমতাসম্পন্ন সাত সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে
নিয়ে যাওয়ার আর্জিও খারিজ করে দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই
রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টি সুপ্রিমো মায়াবতী।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পদোন্নতিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ চালু রাখা উচিত কিনা, মামলা ছিল তাই নিয়েই। ২০০৬ সালের একটি মামলার রায়ে ভারতের শীর্ষ আদালত
জানিয়েছিল,
প্রতিটি পদোন্নতির ক্ষেত্রে তা আদৌ প্রয়োজন কিনা, সেই তথ্য জোগাড় করতে হবে। তার পরই তফশিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীরা
পদোন্নতিতে সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে ওই প্রার্থী আদৌ কতটা পিছিয়ে পড়া, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত পদের কোনও অভাব আছে কিনা, এবং সামগ্রিক প্রশাসনিক দক্ষতার বিষয়গুলি মাথায় রাখার কথা জানিয়েছিল শীর্ষ
আদালত। নতুন রায়ে এই তথ্য জোগাড় করার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই বলেই জানিয়েছেন প্রধান
বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বধীন পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
২০০৬ সালের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল কেন্দ্র ও রাজ্য
সরকারগুলি। তাদের যুক্তি ছিল সুপ্রিম কোর্টের আগের রায়টি সরকারি চাকরিতে তফশিলি
জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের
ক্ষেত্রে অহেতুক শর্ত আরোপ করছে। সরকারি চাকরি পেলেও তফশিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণির
মানুষেরা সামাজিক সম্মান পাওয়ার দিক থেকে পিছিয়েই থাকেন। তাই পদোন্নতির ক্ষেত্রেও
কোনও শর্ত রাখা উচিত নয়। অন্যদিকে সংরক্ষণ বিরোধীদের সওয়াল ছিল, একবার সরকারি চাকরি পেলেই একজন তফশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের
সামাজিক উত্তরণ ঘটে। তাই পদোন্নতিতে আর তাঁর সেই সুবিধে পাওয়ার কথা নয়। যদিও এই
যুক্তিকে আমল দেয়নি শীর্ষ আদালত। তাই সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে সংরক্ষণ চালু থাকার
পথ আরও মসৃণ হলো শীর্ষ আদালতের এই রায়ে।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment