গত বুধবার ১২ ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ নবগঠিত ঝাড়গ্রাম জেলার জেলা পরিষদ গঠিত হল।
সভাধিপতি নির্বাচিত হলেন লালগড় থেকে নির্বাচিত মাধবী বিশ্বাস ও সহ সভাধিপতি
নির্বাচিত হয়েছেন নয়াগ্রাম থেকে নির্বাচিত মধুসূদন সরেন। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী
পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জেলা শাসক আয়েশা রানী।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেন যে জঙ্গলমহলকে অশান্ত
করার চেষ্টা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড থেকে লোক ঢুকছে। এজন্য সতর্ক থাকতে হবে। অনেক প্রলোভন
আসবে, কিন্তু সেসব সাময়িক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত দিনেও সংগ্রামে ছিলেন, আজও আছেন,
ভবিষ্যতেও থাকবেন। পার্থবাবু বলেন, ঝাড়খণ্ড থেকে যারা আসছে তারা কারা? টাকার থলি নিয়ে
আমাদের দলের লোককে আটকে রাখার চেষ্টা করছে। আবার খুনোখুনি চলে আসছে। আদিবাসীদের
ভুল বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। রক্তস্নাত জঙ্গলমহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কঠোর পরিশ্রম
করে শান্তি এনেছেন। এরা আবার সেই দিনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। লক্ষ্য রাখবেন, আমাদের সম্প্রীতি নষ্ট না হয়। অনেক দুষ্টু বন্ধুরা এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে
সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে ঝগড়া লাগানোর চেষ্টা করছে। উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে।
তাই সাবধান ও সর্তক থাকতে হবে। দেশ ও রাজ্যকে বিপন্ন করা যাবে না। পিছিয়ে পড়া
মানুষকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।
পদাধিকারী নির্বাচিত হওয়ার পরে জেলা পরিষদ ভবনের সমানে সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি ও সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন পার্থবাবু। দুনীর্তিমুক্ত
জেলা পরিষদ গঠনের কথা বলেন তিনি। পার্থবাবু বলেন, মানুষের পাশে যান,
মানুষের যেখানে দুর্দশা রয়েছে, তার সমাধানে ব্রতী হন। মানুষের কথা শুনবেন, মানুষের কাজ
করবেন, মানুষের কথা ভাববেন। তিনি বলেন, যাদের বাড়ি নেই, সরকার বাড়ি করে দিচ্ছে। কিন্তু বাড়ি তৈরির সমস্ত টাকা তাঁদের হাতে ঠিকমতো পৌঁছচ্ছে
না। ১০০ দিনের কাজের পুরো টাকা পৌঁছচ্ছে না বলে অনেকে বলছেন। এগুলো সব বন্ধ করে
দিতে হবে। শুধু পূর্ত ও অর্থ দেখে বাড়ি চলে গেলে হবে না। সামগ্রিকভাবে সব দেখতে
হবে। কাজ করে বাড়িতে বসে থাকা আমরা সহ্য করব না। জেলা পরিষদে নতুন যাঁরা এলেন, তাঁদের দায়িত্ব অনেক বেশি। কোনও কম্প্রোমাইজ হবে না। কোনও অসুবিধা হলে ডিএম ও
এসপিকে জানাবেন। আপনাদের উপর জঙ্গলমহলের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।
এদিন ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভবন উদ্বোধন করে পার্থবাবু বলেন, ভবনটি থেকে কোনওরকম অভিযোগ যেন না আসে। স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করুন, সময়ের সঙ্গে আসুন। সরকার পুরসভার মাধ্যমে কী কী পরিষেবা মানুষকে দেয়, তা এখানে টাঙাবেন,
যাতে মানুষ জানতে পারেন।
ঝাড়গ্রামের বেতকুন্দরিতে গ্রামীণ সড়ক সপ্তাহে ১০০দিনে ১০০ কিমি রাস্তা তৈরির
শিলান্যাস করেন পার্থবাবু। পরে ঝাড়গ্রাম শহরে পুলিসের উদ্যোগে একটি ট্রমা
অ্যাম্বুলেন্স ও দু’টি অ্যাম্বুলেন্সের উদ্বোধন করেন। স্কুল শিক্ষকদের টিউশনি পড়ানোর প্রসঙ্গে
সাংবাদিকদের পার্থবাবু বলেন, গোপনে টিউশনি না পড়িয়ে
শিক্ষকরা যাতে বিদ্যালয়ে ঠিকমতো পড়ান, সেদিকে নজর দিতে
হবে।
সৌজন্য – বর্তমান, ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment