মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের
উদ্যোগে প্রশাসনের সামনের সারিতে উঠে আসছেন আদিবাসী কন্যারা।
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ গঠিত হল। শপথ নিলেন নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা।
তবে সবার মধ্যে নজর কাড়ছিলেন সদ্য তরুণী আদিবাসী কন্যরা। জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে
শপথ নেওয়ার জন্য আদিবাসী তরুণী মমতা মুর্মু উঠে দাড়াতেই মঞ্চে উপস্থিত পশ্চিম মেদিনীপুর
জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী, জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া-সহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের
সকলের মুখেই চওড়া হাসি। সদ্য একুশের চৌকাঠ পেরোনো এক মেয়েকে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে
শপথ নিতে তো এর আগে দেখেননি কেউ। তাও আবার পিছিয়ে থাকা আদিবাসী সমাজের মধ্যে থেকে।
এর পর একে একে শপথ নিলেন রিঙ্কু রুইদাস, কণিকা মান্ডি। এই বার পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা
পরিষদের সদস্যদের সিংহভাগই মহিলা। কেউ কেউ আবার ‘কন্যাশ্রীও’।
নতুন মুখেরা আসার ফলে জেলা পরিষদে কাজের গতি আসবে, মনে করছেন অনেকে। নতুনদের কাজ
করার তাগিদ থাকবে। এরফলে এলাকার মানুষও উপকৃত হবেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহের
কথায়, “নতুনদের শুভেচ্ছা থাকল।” জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতির কথায়, “এ বার
নতুন মুখের অনেকে জিতেছেন। কন্যাশ্রীরাও জিতেছেন। এতে নিশ্চিত ভাবেই জেলা পরিষদের কাজে
গতি আসবে। সকলের প্রতি শুভেচ্ছা থাকছে।”
জেলা পরিষদে এ বার এমন তিন জন মেয়ে জিতেছেন, যাঁদের বয়স পঁচিশের আশেপাশে। মমতা
মুর্মু, রিঙ্কু রুইদাস, কণিকা মান্ডি। মেদিনীপুর সদর ব্লক থেকে নির্বাচিত মমতা মুর্মু
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। চন্দ্রকোনা-২ থেকে নির্বাচিত রিঙ্কু ঘাটাল কলেজের
ছাত্রী। অন্য দিকে, ডেবরা থেকে নির্বাচিত কণিকা মান্ডি বছর তিনেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের
পাঠ শেষ করেছেন।
কণিকা মান্ডি বলেন, “১৯৯৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে আমার বাবা প্রার্থী হয়েছিলেন। মাত্র
এক ভোটে হেরেছিলেন। পরে শুনেছি, হারেননি, হারানো হয়েছিল। বাবাকে হারানোর জন্য ছাপ্পা
মারা হয়েছিল।” ঘাটাল কলেজের ছাত্রী রিঙ্কু রুইদাসের কথায়, “মানুষের পাশে থাকতে চাই।
দলকে ভালবাসি। তাই প্রার্থী হয়েছিলাম।” অন্য দিকে, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী
মমতা মুর্মু বলেন, “কলেজে ছাত্র রাজনীতি করেছি। মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। তাই ভোটে
দাঁড়িয়েছিলাম। আমার মতো মেয়েকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় আমি দলের কাছে কৃতজ্ঞ।
এলাকার মানুষের কাছেও কৃতজ্ঞ।”
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment