Monday, April 9, 2018

বেলপাহাড়ি ব্লকে ১০১ টি আসনে আদিবাসী নির্দল প্রার্থী।


বেলপাহাড়ি ব্লকে আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের কর্মী সমর্থকেরা ১০১ টি পঞ্চায়েত আসনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন।

পাহাড়-বনতলে নির্দলের কাঁটায় কাঁটা হয়ে রয়েছে শাসক দল তৃণমূল। এক দিনেই মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১০১ জন নির্দল প্রার্থী! সূত্রের খবর, এঁরা শাসক দলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থী নন। আদিবাসী সমাজের ডাকে বেশির ভাগ আসনে আদিবাসী-মূলবাসী সংগঠনের প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করেছেন বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে শাসক দল। উদ্বেগে রয়েছে প্রশাসনও। কারণ, এলাকাটি বেলপাহাড়ি। এক সময়ে মাওবাদীদের খাসতালুক। সূত্রের খবর, নানা বিষয়ে আদিবাসী ও মূলবাসী মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। পঞ্চায়েতে উন্নয়নের নামে পঞ্চায়েত স্তরের শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে চূড়ান্ত স্বজনপোষণের অভিযোগ। সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে শিক্ষার পরিকাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট নয় আদিবাসী সম্প্রদায়। এই আবহে আদিবাসী অধ্যুষিত বেলপাহাড়ি ব্লকে নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপরই আস্থা রাখছেন এলাকাবাসীর একটি বড় অংশ। পরিস্থিতি বেগতিক আঁচ করে আদিবাসী নেতাদের মন পাওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছেন ব্লক তৃণমূলের নেতারা।
গত রবিবারই বেলপাহাড়িতে একটি আদিবাসী ও ভূমিজ সংগঠনের দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের বেলপাহাড়ি ব্লক সভাপতি বংশীবদন মাহাতো। বংশীবাবু বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। এ বার সংরক্ষণের গেরোয় বংশীবাবু নিজে প্রার্থী হননি। তবে বেলপাহাড়ির একটি জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বংশীবাবুর স্ত্রী। অন্য দিকে ব্লকের দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১২৮টি আসনে ১০৩ জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে শনিবারই ১০১ জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। বাঁশপাহাড়ি, ভুলাভেদা ও শিমূলপাল এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই বেশির ভাগ নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
বংশীবাবু রবিবার বেলপাহাড়িতে দলীয় কার্যালয়ে বসে বলেন, “আদিবাসী ও ভূমিজ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বসে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।ঘটনা হল, এই নির্দল প্রার্থীরা ভোট কেটে শাসক দলের বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারেন বলে মনে করছে তৃণমূল শিবির। কারণ বেলপাহাড়ি ব্লকের মোট জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ আদিবাসী।
তবে আদিবাসী সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের মুখপাত্র রবিন টুডু বলেন, “সংগঠনের তরফে কেউ দাঁড়াননি। নির্দল হিসেবে কেউ যদি নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য ভোটে দাঁড়াতে চান, সে ক্ষেত্রে আমরা কী ভাবে বাধা দেব?”
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ৯ এপ্রিল, ২০১৮। ছবিটি প্রতীকী। 

No comments:

Post a Comment