চড়কমেলার অনুষ্ঠানে এসে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে গণধর্ষণের শিকার হলেন এক আদিবাসী
কিশোরী। বছর ষোলোর ওই কিশোরীকে বাইকে চাপিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে একাধিকজন ধর্ষণ
করে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাতে। ধর্ষণের পর ওই নাবালিকাকে রাস্তার ধারে ফেলে
পালায় ধর্ষকরা। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে আউশগ্রাম থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পুলিশ
সূত্রে জানা যায় মেয়েটি থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযুক্তদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের যাদবগঞ্জ গ্রামের চড়কমেলার মাঠে প্রতিবছর
গাজনের মেলা বসে। চার পাঁচদিন ধরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। বিভিন্ন জেলা এমনকী ভিন রাজ্যের
আদিবাসীরা এই উৎসবে অংশ নেন। তাঁরা মেলার মাঠেই থাকেন। রোজ বিকেল থেকে সারারাত সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান চলে। জানা গিয়েছে, বর্ধমান থানার বড় কাশিয়ারা গ্রাম থেকে কয়েকজন বান্ধবীর
সঙ্গে যাদবগঞ্জের চড়কমেলায় গিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী ওই আদিবাসী কিশোরী। কয়েকজন
আত্মীয় ও বান্ধবীদের সঙ্গেই ছিল ছাত্রীটি। কিন্তু রবিবার বিকেলে ভিড়ের মধ্যে মেয়েটি
দলছুট হয়ে যায়। কিশোরী জানায়, যাদবগঞ্জ থেকে কিছুটা দূরে ঝারগরিয়া গ্রামে তার আত্মীয়র
বাড়ি। সঙ্গীদের খুঁজে না পেয়ে মেয়েটি কান্নাকাটি করলে কয়েকজন যুবক তার কাছে ঘটনার
কথা শোনে। তারপর তাকে ঝারগরিয়ায় আত্মীয়র বাড়িতে নামিয়ে দেওয়ার নাম করে বাইকে চাপিয়ে
নিয়ে যায়। রবিবার রাতে দুটি বাইকে তিনজন যুবক মিলে তাকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ
করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বন নবগ্রামের জঙ্গলে একটি পুকুর পাড়ে
কিশোরীকে ফেলে পালায় অভিযুক্তরা। মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। কোনওরকমে সে
রাস্তার কাছাকাছি আসে। সেসময় স্থানীয় কয়েকজন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটিকে দেখতে
পান। তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত প্রায় সাড়ে নটা নাগাদ আউশগ্রাম থানার পুলিশ ওই
কিশোরীকে উদ্ধার করে বন নবগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যায়। কিছুটা সুস্থ হলে
রাত প্রায় আড়াইটে নাগাদ হাসপাতাল থেকে মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসা হয়। নির্যাতিতা থানায়
অভিযোগ জানায় দুজন মিলে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। তবে তাদের নাম তার জানা নেই বলে
পুলিশকে জানিয়েছে মেয়েটি। আউশগ্রাম থানার আইসি
সুজিত পতি জানিয়েছেন, নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বর্ধমানে পাঠানো হয়েছে।
তার মুখ থেকে বর্ণনা শুনে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
সৌজন্য – সংবাদ প্রতিদিন, ধীমান রায়, ছবি: জয়ন্ত দাস, ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment