Thursday, April 12, 2018

দেশে দলিত নির্যাতন নিয়ে সরব প্রাত্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।


দেশে ঘটে চলা একের পর এক দলিত নির্যাতন নিয়ে এখনও নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ বুধবার সরব হলেন তাঁর পূর্বসূরি, এককালে যাঁর নীরবতা নিয়ে ব্যঙ্গ করত বিজেপি৷ পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্মারক বক্তৃতায় মনমোহন সিং আশঙ্কা প্রকাশ করে বললেন, দেশে দলিত এবং সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বেড়েই চলেছে৷ এ ভাবে চললে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে যাবে৷ অর্থনীতিবিদ এই রাজনীতিকের বক্তব্য, দেশের রাজনীতিতে এক অদ্ভূত প্রবণতা তৈরি হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, স্বাধীনতা এবং উন্নয়নের মধ্যে যে কোনও একটিকে বেছে নিতে হবে৷ এটা কখনওই মেনে নেওয়া উচিত নয়৷ এ প্রসঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি৷ বলেন, ‘জাতীর জনকের সামনে একবার এই প্রস্তাব রাখা হয়েছিল - উন্নয়ন এবং সুশাসন স্বরাজের বিকল্প হতে পারে৷ সেই প্রস্তাবের কী হাল হয়েছিল, দেশের মানুষ জানে৷’ মনমোহন সিং এর সাফ কথা, স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার, তার সঙ্গে কোনও আপস সম্ভব নয়৷ উন্নয়ন গণতন্ত্রের পরিণাম, বিকল্প নয়৷ মিডিয়া থেকে সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকেরই স্বাধীনতায় কেন্দ্রীয় সরকার লাগাম পরানোর চেষ্টা করছে বলে যে অভিযোগ আজকাল উঠছে, সে দিকে ইঙ্গিত করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা মানে যাঁরা ক্ষমতায় বসে আছেন, শুধু তাঁদের স্বাধীনতা নয়, দেশের প্রতিটা মানুষের স্বাধীনতা৷ প্রশ্ন করার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা৷’ তাঁর মতে, শুধু একটি ক্ষেত্রেই এই স্বাধীনতার উপর নিয়ন্ত্রণ বরদাস্ত করা যায়, যদি একের স্বাধীনতা অন্যের স্বাধীনতাকে খর্ব করে৷
জাতি-ধর্ম-বর্ণের নামে যে ভাবে দেশকে ভাগ করার চেষ্টা চলছে তারও তীব্র প্রতিবাদ করেন তিনি৷ বলেন, ‘পরিস্থিতিতে লাগাম না পরালে তা গণতন্ত্রকে শেষ করে দেবে৷ এই বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতেই হবে৷’ এমন একটা সময়ে মনমোহন সিং এই কথা বলছেন, যখন ধর্ষণে অভিযুক্ত শাসকদলের বিধায়ক নিজের সাফাইয়ে পাল্টা নির্যাতিতার জাত তুলে খোঁচা দিচ্ছেন৷ দেশের অর্থনীতির বর্তমান হাল সম্পর্কে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, গরিব এবং ধনীর মধ্যে ফারাক বাড়তে থাকলে, উন্নয়নের রথ ছুটিয়ে কোনও লাভ নেই৷ দেশের প্রথম শিখ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, সমাজ-অর্থনীতি-রাজনীতি প্রতিক্ষেত্রেই নতুন করে সাম্য প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু করতে হবে৷
সৌজন্য – এই সময়, ১২/০৪/২০১৮।

No comments:

Post a Comment