‘হিজঃ কান পঞ্চায়েত ভোটরে নুওয়া চিহ্নরে ভোট
এমেপে।’- বাংলা হরফেই লেখা। কিন্তু সাধারণ বাংলাভাষীরা তা পড়তে পারলেও ঠিক বোধগম্য
হওয়ার কথা নয়। তবে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এখন দেওয়ালে
দেওয়ালে এইভাবেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার হচ্ছে। সঙ্গে প্রতীকও দেওয়া থাকছে। প্রার্থীর
নামও। আদিবাসীদের মন পেতে ভাষাতেই ভরসা শাকদলের। তাই প্রচার সাঁওতালিতে।
হরফটা বাংলা হলেও প্রচারের ভাষা সাঁওতালি।
এই ব্লকে সাঁওতালি ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় তাই ওই সম্প্রদায়ের
মাতৃভাষাতেই প্রচারের কৌশল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দেওয়াল লিখন থেকে লিফলেট, পোস্টার-ফেস্টুন,
সবেতেই সাঁওতালি ভাষার ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকী নেতারা পাড়ায় পাড়ায় ছোট সভায় বা
বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারের সময়ও একইভাবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে সাঁওতালিতেই জনসংযোগ
করছেন। এই এলাকা থেকে জেলা পরিষেদর প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সভাধিপতি দেবু টুডু। গতবারও
এই ব্লক থেকেই তিনি জিতেছিলেন। তিনি নিজেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের।
কেন প্রচারে সাঁওতালি? সভাধিপতির কথায়, “মাতৃভাষার
সঙ্গে মানুষের নাড়ির টান। মাতৃভাষার জন্য কত আন্দোলন হয়েছে। কতজন শহিদ হয়েছেন। সাঁওতালি
ভাষায় পঠনপাঠন থেকে সরকারি কাজে ব্যবহারের দাবিতেও আন্দোলন হয়েছে। রাজ্য সরকার বিভিন্ন
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষা চালু করেছেন। ভোটের প্রচারেই বা থাকবে না
কেন?” তৃণমূলের দাবি, মাতৃভাষায় কথা বললে মানুষের অনেক কাছাকাছি পৌঁছন যায়। মানুষকে
আপন করে নেওয়া যায়। সেই কথা মাথায় রেখেই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সাঁওতালি ভাষাতেই
প্রচার করা হচ্ছে। তাতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন তাঁদের কথা সহজেই বুঝতে পারছেন।
নিজেদের ভাষা কথা শুনে তাঁরা খুশিই হচ্ছেন। আমরা তোমাদেরই লোক, মাতৃভাষাতেই এই বার্তাই
পৌঁছে দিচ্ছে তৃণমূল।
সৌজন্য – সংবাদ প্রতিদিন, সৌরভ মাজি, ১২/০৪/২০১৮।
No comments:
Post a Comment