Thursday, April 12, 2018

১৪ ই এপ্রিল সারা দেশে অম্বেডকরের মূর্তি সাফাই করবে বিজেপি।


দলিত প্রশ্নে বিপাকে নরেন্দ্র মোদী সরকার। উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনেই ইঙ্গিত যে বিজেপি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন দলিতেরা। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে দলিতদের আস্থা ফেরাতে তৎপর হলেন মোদী-অমিত শাহেরা। আগামী ১৪ এপ্রিল, ভীমরাও অম্বেডকরের জন্মবার্ষিকীতে উত্তরপ্রদেশে দলিত প্রধান এলাকায় পদযাত্রা এবং অম্বেডকরের মূর্তি সাফ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতাদের। গত চার বছরে দেশে দলিত নিগ্রহের ঘটনা, সুপ্রিম কোর্টে আইন লঘু করা, সংরক্ষণ প্রত্যাহারের সম্ভাবনা উস্কে দেওয়া-সহ একাধিক বিষয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে দলিতদের। হিন্দি বলয় জুড়ে দলিতদের ওই অসন্তোষকে কাজে লাগাতে তৎপর রাহুল গাঁধীও। সঙ্ঘের উদ্বেগ, হিন্দুদের মধ্যে এভাবে বিভাজন হলে তাতে ক্ষতি বিজেপিরই। বিশেষত যেখানে মুখ খুলছেন বিজেপির দলিত নেতারাই। তাঁদের অভিযোগ, ভারত বন্‌ধের পর থেকে ভুয়ো মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে দলিত নেতাদের। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ধৃত মুজফ্‌ফরনগর জেলার ভীম সেনা প্রধান উপকার বায়রাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হয় আজ। জামিনের আর্জি নাকচ হয় বিএসপি নেতা কমল গৌতমের। আবার আজই অভিযোগ উঠেছে, অম্বেডকরকে নিয়ে আলোচনাচক্র করতে দেওয়ার অনুমতি শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার করেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস্টার ইনোভেশন সেন্টার কর্তৃপক্ষ।
উত্তরপ্রদেশে দলিতদের আস্থা ফেরানোর কৌশল ঠিক করতে গতকালই বৈঠকে বসেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ঠিক হয়েছে, অম্বেডকরের জন্মদিন উপলক্ষে দুদিন ধরে অম্বেডকর মিশন পদযাত্রা হবে। প্রত্যেক সাংসদ ও বিধায়ক নিজেদের সংসদীয় এলাকার দলিত প্রধান অঞ্চলে ওই পদযাত্রা করবেন। দলিতদের সমস্যার কথা জানবেন এবং অম্বেডকরের মূর্তি সাফ করবেন তাঁরা। কিন্তু তাতেই কি আস্থা ফিরবে? সংশয় রয়েছে দলের অভ্যন্তরেই।
দেশে যে ভাবে দলিত বনাম তথাকথিত উচ্চ বর্ণের সংঘাত বাড়ছে, তাতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। তাদের আশঙ্কা, দলিতদের ডাকা ভারত বন্‌ধের দিনের মতোই অশান্তি ছড়াতে পারে অম্বেডকরের জন্মদিবসে। সে দিন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাই আগেভাগে আজ প্রতিটি রাজ্যকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ২ এপ্রিল দেশের কয়েকটি অংশে সংঘর্ষ ও মূর্তি ভাঙার ঘটনা ঘটেছিল। এর পুনরাবৃত্তি রুখতে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারেরা যেন তৎপর থাকেন।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮।

No comments:

Post a Comment