রাজ্যের দলিত-সংখ্যালঘুরা এবার ঐক্য গড়ে রাজপথে, হুঁশিয়ারি মোদি-মমতার সরকারকে।
মিছিলের জেরে মধ্য কলকাতা জুড়ে তীব্র যানজট।
রাজ্যের দলিত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এবার যৌথভাবে রাস্তায় নামল। সমাজের
পিছিয়ে পড়া এই অংশের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সারা দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও
বঞ্চনা ও অত্যাচারের শিকার হয়ে চলেছে — মূলত এই ক্ষোভকে সামনে রেখেই তারা শনিবার শহরের রাজপথে মিছিল ও সমাবেশ করল। এজন্য
বহু তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং সংখ্যালঘু সংগঠন একত্রিত হয়ে সংবিধান বাঁচাও সমিতি নামে
যৌথ মঞ্চ গঠনও করেছে। সেই মঞ্চের তরফেই এদিন কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি এবং রাজ্যের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হল। দলিত-সংখ্যালঘুদের উপর বর্ণহিন্দুদের
দ্বারা পরিচালিত সরকার যদি তাদের এই বঞ্চনা চালিয়ে যায়, তাহলে আগামী লোকসভা ও বিধানসভা
নির্বাচনে তারা সমুচিত জবাব পাবে বলে জানিয়ে দেয় মঞ্চের নেতৃত্ব।
সমিতির তরফে এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের মানুষ প্রথমে শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনে সমবেত হয়। তারপর তারা দু’টি বড় মিছিল করে ধর্মতলা, মেয়ো রোড হয়ে জড়ো হয় রেড রোডে
ডঃ বি আর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে। তাদের এই মিছিলের ফলে দুপুরের দিকে মধ্য কলকাতার
বিস্তীর্ণ তল্লাটে বেশ কিছুক্ষণ যানজট হয়। দুর্ভোগে পড়তে হয় পথচলতি মানুষকে। তবে রেড
রোডে পৌঁছে মিছিলকারীরা রাস্তার ধারে সরে গিয়ে সমাবেশ করে। তাই আধ ঘণ্টা বন্ধ থাকার
পর ফের চৌরঙ্গি রোড, মেয়ো রোড, রেড রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান চলাচল
শুরু হয়।
এদিন সমাবেশে সমিতির তরফে সমীর দাশ, মহম্মদ কামরুজ্জামান, ফারুক আহমেদ, ডঃ নজরুল
ইসলাম প্রমুখ বক্তা দলিত নির্যাতনের আইন লঘু করার উদ্যোগ গ্রহণ নিয়ে মোদি সরকারের
তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁদের কথায়, সারা দেশে ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী সমাজ ব্যবস্থা কায়েম
করার জন্য কেন্দ্রের শাসক দল দলিত ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার পরিবর্তে বাড়তি
অত্যাচার নামিয়ে এনেছে। একইভাবে ভাতা বা সংরক্ষণের টোপ দিয়ে সরকারি চাকরি সহ আর্থিক
উন্নয়নের অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করে চলেছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। অথচ রাজনৈতিক হানাহানির
ক্ষেত্রে সিংহভাগ বলি হচ্ছে দলিত-সংখ্যালঘুরাই। বর্ণহিন্দু নিয়ন্ত্রিত এই একতরফা সামাজিক
ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই চালাতে তারা এবার অঙ্গীকারবদ্ধ। আগামীদিনে
দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে এই সম্প্রদায়ের কোনও নেতাকে বসানোই
তাদের অন্যতম লক্ষ্য বলে ঘোষণা করেন নেতৃবৃন্দ।
সৌজন্য – বর্তমান পত্রিকা ও এই সময় পত্রিকা ২৯/০৪/২০১৮।
No comments:
Post a Comment