গত রবিবার ২৯/০৪/২০১৮ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, দেশের সব গ্রামে
বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে। তার পর দিনই ওএনজিসি জানাল, সন্ধ্যা হলেই অসমের কাছাড় জেলার
নারায়ণপুর বস্তি ডুবে যায় অন্ধকারে। রাস্তাঘাটের চিহ্নমাত্র নেই। এই গ্রামে সৌরবাতি
জ্বালানোর চেষ্টায় তাই ওএনজিসিই রাজস্থানের বেয়ারফুট কলেজের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
বেয়ারফুট (খালি পা)! কলেজের নামটি যেমন অদ্ভুত, তেমনি কাজের ধরনও আলাদা। শুধু ঘরে
ঘরে সোলার প্যানেল ও বাল্ব দিয়ে দায় সারার পক্ষপাতী নন এর ডিরেক্টর রবীন্দ্র নাথ।
প্রকল্পের স্থায়িত্বের কথা ভেবে এলাকায় খালি পায়ে চলতে বাধ্য হন, এমন মহিলাদের আগে
প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে তাঁদের তত্ত্বাবধানেই চলে প্রকল্পের কাজ।
আজই নারায়ণপুর বস্তি থেকে রাজস্থানের তিলোনিয়ার উদ্দেশে রওনা দিলেন সুপ্রভা সাঁওতাল
ও সীমা দাস। দু’জনেরই পড়াশোনা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত।
কিন্তু রবীন্দ্রর দাবি, এই দু’জনই টেকনিশিয়ান হয়ে ফিরবেন ছ’মাসে। তাঁদের সামনে রেখেই বস্তির ১০০ ঘরে একটি করে সৌর প্যানেল, ব্যাটারি, চার্জ
কন্ট্রোল, চার্জার, সৌর-লণ্ঠন ও ৪টি করে বাল্ব দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে সৌরবাতি জ্বালাতে
কোনও সমস্যা দেখা দিলে সুপ্রভা-সীমাই সমাধান বাতলে দেবেন।
এই প্রকল্পের পুরো অর্থ জোগাচ্ছে ওএনজিসি। কাছাড় প্রকল্পের তিন ডেপুটি জেনারেল
ম্যানেজার ডিএইচ জংলি, পি অরুমুগম ও রাজেন্দ্র প্রসাদ বলেন, নারায়ণপুর বস্তির কাছেই
তাদের ড্রিলিং চলছে। আসতে-যেতে গ্রামটির দুরবস্থা দেখে সৌরবাতির এই প্রকল্প হাতে নেওয়া
হয়। তাঁদের আশা, আগামী নয় মাসে ওই গ্রামে আলো জ্বলবে। এই ‘পাইলট প্রোজেক্ট’-এ সাফল্য
মিললে কাছাড়ের বিদ্যুৎহীন অন্য গ্রামেও আলো জ্বালানোর চেষ্টা করবে ওএনজিসি।
প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’যা-ই হোক, বেয়ারফুট কলেজের ডিরেক্টর রবীন্দ্র তাঁদের প্রাথমিক সমীক্ষার উল্লেখ
করে জানাচ্ছেন, অসমের এই জেলায় অন্তত ৫০টি গ্রামে আজও বিদ্যুৎ নেই।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১ মে, ২০১৮।