দলিত-আদিবাসী সুরক্ষা আইন “তফসিলি
জাতি-উপজাতি নির্যাতন বিরোধী আইন (Scheduled
Caste and Scheduled Tribe (Prevention of Atrocities) Act, 1989 & 2015)” নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ জানালেন বিরোধী দলের নেতারা।
অন্য বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে
রাষ্ট্রপতি ভবন চত্বর থেকে বেরোলেন রাহুল গাঁধী। আগের মতো নয়া জমানায়
সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নেই রাষ্ট্রপতি ভবনে। ঘাড় নাড়িয়ে রাহুল বললেন,
‘‘এসেছে অচ্ছে দিন? এর পর ইন্ডিয়া গেটেও সংবাদমাধ্যমকে অপেক্ষা করতে দেবে
না।’’
সপা-বসপা, সিপিএম, ডিএমকে, সিপিএমের নেতাদের নিয়ে রাহুল গাঁধী রাষ্ট্রপতির কাছে
গিয়েছিলেন দলিত-আদিবাসী সুরক্ষা আইন “তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতন বিরোধী আইন (Scheduled Caste and Scheduled Tribe (Prevention of
Atrocities) Act, 1989 & 2015)” লঘু করার অভিযোগ নিয়ে। দলিত
নিগ্রহ যখন বাড়ছে, তখন সুপ্রিম কোর্টে
নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভূমিকাতেই আইন লঘু হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। বিজেপি ও শরিক
দলের নেতাদের মধ্যেই এ নিয়ে অসন্তোষ বাড়ায় নরেন্দ্র মোদীর চাপ আরও বেড়েছে।
এমনকী উত্তরপ্রদেশের দলের এক সাংসদ সাবিত্রী ফুলে তো রীতিমতো বিদ্রোহ করতে শুরু
করেছেন। তাঁর অভিযোগ, দলের মধ্যে থেকেই
দলিতদের সংরক্ষণ তুলে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। ১ এপ্রিল এই নিয়ে বিক্ষোভ
কর্মসূচিরও আয়োজন করেছেন তিনি।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তফসিলি জনজাতি
কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রীও আজ রাহুলের
রাষ্ট্রপতি ভবন যাওয়ার আগেই সকালে বিজেপি ও শরিকের দলের দলিত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
করেন। তাঁর মধ্যে রামবিলাস পাসোয়ান, রামদাস অটওয়ালের মতো মন্ত্রীরাও ছিলেন। বৈঠকের পরে রামবিলাস
জানান, প্রধানমন্ত্রী
বিষয়টি পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছেন। সরকার সুপ্রিম কোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি
দায়ের করবে কিনা, তা নিয়ে কোনও কথা
প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে প্রত্যাশা করা যায় না। কিন্তু যে পর্যালোচনার কথা তিনি
বলেছেন, সেটি তারই ইঙ্গিত।
তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দলিত-আদিবাসী হোক
বা ওবিসি, তাঁর সরকারই যা
করার করবে।
বিজেপির এক নেতার মতে, দলিতদের বিষয়টি এখন গলার কাঁটা হয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম
কোর্টের রায়ের পর রাহুল গাঁধীরা সেটিকে হইহই করে না তুললে বিষয়টি উচ্চগ্রামে যেত
না। তার উপরে বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে রাহুল গাঁধী যে ভাবে আজ রাষ্ট্রপতির কাছেও
গেলেন, তাতেও
প্রধানমন্ত্রীকে নড়েচড়ে বসতে হল। এখন যদি সরকার সুপ্রিম কোর্টে আর্জি পেশ করে, তা হলে রাহুল গাঁধীরা তার কৃতিত্ব নেবেন। সেখানেই
তাঁরা থামবেন না। ভোট প্রচারেও নরেন্দ্র মোদীকে ‘দলিত-বিরোধী’ বলে অভিযান চালাবেন বিরোধীরা।
বস্তুত এ দিনই তফসিলি জনজাতির বিষয়ে
যথাসম্ভব নরম অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে মোদী সরকার। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির
জন্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চালু থাকা স্বচ্ছল শ্রেণির (ক্রিমি লেয়ার) নীতি তফসিলি
জনজাতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তফসিলি জনজাতির ক্ষেত্রেও ওই নীতি চালুর আর্জি পেশ
হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু কেন্দ্র জানিয়েছে, তফসিলি জনজাতির সুবিধে কমাতে তারা রাজি নয়।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৯ মার্চ, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment