এতদিন যে গ্রাম শৌচাগারের মুখ দেখেনি, বাঘ
আসার পরে বদলে গেল ছবি। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের কুশকাঠি গ্রামে ঘরে ঘরে শৌচাগার
তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বাঁশি বাজিয়ে, টর্চের আলো ফেলেও লাভ হয়নি। কাকভোরে চলছিল
প্রকাশ্যে শৌচকর্ম। এ বারে বাঘের ভয়ে শৌচাগার তৈরিতে সম্মতি দিচ্ছেন গ্রামবাসীরাও।
কুশকাঠি গ্রামের পাশে ঘন কাদরার জঙ্গল। বুক
চিরে চলে গিয়েছে মোরাম রাস্তা। কিছু দূরে হামারগেড়্যা। গোয়ালতোড়ের এই কাদরার জঙ্গলে
বাঘ এসেছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। বাঘের হানায় জখমও হন জয়রাম সরেন নামে এক ব্যক্তি।
তারপর থেকে ভয়ে কাঁটা পুরো গ্রাম। কিন্তু শৌচকর্মের জন্য জঙ্গলে যেতেই হচ্ছে। স্থানীয়
বাসিন্দা আরতি সরেনের কথায়, “বাঘ যদি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে! শৌচাগার থাকলে
একবেলাও জঙ্গলে যেতে হত না।”
কুশকাঠিতে প্রায় ৬৬টি পরিবারের বাস। সকলেই
আদিবাসী। ব্লক প্রশাসনের দাবি, নির্মল বাংলা প্রকল্পে শৌচাগার পেতে হলে উপভোক্তাকে
কিছু টাকা দিতে হয়। কিন্তু এতদিন শৌচাগার করতে রাজি হচ্ছিলেন না অনেকেই। কিন্তু বাঘের
ভয়ে ধীরে ধীরে সম্মতি দিচ্ছেন তাঁরা। গোয়ালতোড়ের বিডিও স্বপন দে বলেন, “ওই গ্রামের
বাসিন্দাদের আগে অনেকবার বোঝানো হয়েছে। তবুও শৌচাগার তৈরিতে রাজি করানো যাচ্ছিল না।
এতদিনে ওঁরা রাজি হয়েছেন। কুশকাঠিতে শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে।”
এক গ্রামের বেশির ভাগ ঘরে শৌচাগার নেই, অথচ
পঞ্চায়েত ‘নির্মল’হয়ে যায় কী করে? সদুত্তর মেলেনি বিডিওর কাছে! তাঁর কথায়, “বাকি গ্রামে ভাল কাজ
হয়েছে!
ভয়ে হুঁশ ফিরছে অনেকের। স্থানীয় এক বাসিন্দার
কথায়, ‘‘বনের রাজা বর দিয়েছে। না হলে আমাদের গ্রামে শৌচাগার হত না।”
সৌজন্য - আনন্দবাজার পত্রিকা, বরুণ দে, ২০/০৩/২০১৮।
No comments:
Post a Comment