এক অম্বেডকরকে হারিয়ে এ বারে আঁকড়ে ধরলেন
আর এক অম্বেডকরকে। উত্তরপ্রদেশের রাজ্যসভা ভোটে মায়াবতীর দলিত প্রার্থী ভীমরাও অম্বেডকরকে
হারিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল। সেই ভোটে জিততে সপা-বসপা জোটকে বিজেপি ভাঙার চেষ্টা করেছে
বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও মায়াবতী এবং অখিলেশ দু’জনেই জানিয়ে দিয়েছেন, হারলেও জোট অটুটই থাকছে।
সেই সঙ্গেই মায়াবতীর তোপ, ভীমরাও অম্বেডকরের মতো দলিতকে হারিয়ে বিজেপি তাদের দলিত-বিরোধী
মানসিকতাই ফের প্রমাণ করেছে।
এমন অভিযোগের মুখে দাঁড়িয়ে এক ঢিলে অনেক পাখি
মারতে আজ বাবাসাহেব ভীমরাও অম্বেডকরকে আঁকড়ে ধরলেন মোদী। তাঁকে সামনে রেখেই বিঁধলেন
রাহুল গাঁধীকে। এমনকী এই সুযোগে নিজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির তাসটিও সুকৌশলে ফের খেললেন।
দাবি করলেন, গরিব ও কৃষকের উন্নয়ন হচ্ছে অম্বেডকরের দেখানো পথে। ‘নতুন ভারত’ও আসলে অম্বেডকরের স্বপ্ন
মেনেই।
এ দিন রেডিও-র মাসিক ‘মন কি বাত’অনুষ্ঠানে নিজেকে প্রায়
অম্বেডকরের জায়গায় বসিয়ে মোদী বলেন, ‘‘বাবাসাহেবকেও এক সময় উপহাস করা হত। কিন্তু তিনি
আমার মতো পিছিয়ে পড়া শ্রেণির লোকের কাছে অনুপ্রেরণা।” রাহুল গাঁধীর নাম না করে মোদী
বলেন, ‘‘বড় ও ধনী পরিবারে জন্ম না নেওয়া গরিবরাও যে স্বপ্ন দেখতে পারেন, সেটি তিনিই
দেখিয়েছেন। আজকের দিনে ‘নতুন ভারত’আলাদা। এটি অম্বেডকরের, গরিব ও পিছিয়ে পড়া মানুষের।”
এ দিন মোদীর বক্তব্য, ১৪ এপ্রিল অম্বেডকরের
জন্মদিন থেকে দেশজুড়ে শুরু হবে ‘গ্রাম স্বরাজ’অভিযান। শহরে শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন অম্বেডকর। সেই স্বপ্ন
মেনেই ‘স্মার্ট সিটি’থেকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’হচ্ছে। অম্বেডকর বলেছিলেন, গরিবকে আত্মনির্ভর করতে। মোদীর মতে, সেই কাজটিই তার
সরকার করছে।
কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, গোরক্ষপুর-ফুলপুর
বুঝিয়েছে দলিত-পিছিয়ে পড়া শ্রেণির সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব বাড়ছে। সে কারণে নিজের সব
সিদ্ধান্ত এখন অম্বেডকরের সঙ্গে জুড়তে চাইছেন মোদী। অথচ ‘স্মার্ট সিটি’, ‘স্টার্টআপ’বা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’— সবই ব্যর্থ প্রকল্প।
মোদীর আমলে গরিবরা আতঙ্কিত, কৃষকরা হাহাকার করছেন। সে কারণেই এ দিন ন্যূনতম সহায়ক মূল্য
নিয়ে ফের অনেক কথা বলতে হয়েছে মোদীকে।
বিজেপি নেতাদের অনেকে বলছেন, ভোটের আগে জল
মাপার কাজ শুরু করেছেন মোদী। সব হিন্দুকে এক ছাতার তলায় আনার ডাক দিয়েছিলেন সঙ্ঘপ্রধান
মোহন ভাগবত। সেই কাজটিই এ বারে শুরু করে দিলেন মোদী। রামনবমী মাথায় রেখে আজ রাম এবং
রামায়ণ নিয়েও বিস্তর কথা বলেছেন তিনি ।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৬/০৩/২০১৮।
No comments:
Post a Comment