জামুড়িয়া থানার শিবপুর লাগোয়া চুয়াডাঙা জঙ্গল
থেকে মঙ্গলবার সকালে অচৈতন্য এক আদিবাসী মহিলাকে উদ্ধার করল পুলিশ। তাঁকে আসানসোল জেলা
হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন। প্রাথমিক
তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর উপরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত
শুরু করা হয়েছে।
ঐ দিন সকালে ওই মহিলাকে ভর্তি করানোর জন্য
জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন শিবপুর এলাকার একটি ইটভাটার মালিক মহশিন খান। তিনি পুলিশকে
জানিয়েছেন, তাঁর ইটভাটা থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরের জঙ্গলে ওই মহিলাকে বিবস্ত্র
ও অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় কিছু মানুষ। তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে স্থানীয়
কয়েকজন মহিলা ও পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।” ওই মহিলাকে
প্রথমে জামুড়িয়ার আখলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা
ভাল নয় বুঝে চিকিৎসকেরা তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। দুপুর ১২টা
নাগাদ ওই মহিলাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে আনা হয়। এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ ঘটনাস্থলে
কুকুর নিয়ে তদন্তে যায় পুলিশ।
পুলিশ ও মহিলার বাপেরবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে,
যাত্রা দেখতে গিয়ে জামুড়িয়া থানা এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে ওই মহিলার পরিচয়
হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাস দেড়েক আগে তাঁরা মন্দিরে বিয়ে
করেন। বিয়ের পরে ওই মহিলা স্বামীকে নিয়ে বাপেরবাড়িতে ওঠেন। ওই মহিলার দাদা বলেন,
‘‘বৃহস্পতিবার জামাই বোনকে নিয়ে তার বাড়িতে চলে যায়। পড়শিদের কাছ থেকে জানতে পারি,
রবিবার দু’জনে কাঠকুড়োতে বেরিয়ে আর ফেরেনি। পরে জানতে পারি, বোন অচৈতন্য অবস্থায় চুয়াডাঙায়
জঙ্গলে পড়ে ছিল।” তিনি জানান, জ্ঞান না ফেরায় মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়েও বোনের সঙ্গে
কথা বলতে পারেননি। তাঁর দাবি, ‘‘বোনের সঙ্গে ঠিক কী হয়েছে, তা জানার জন্য পুলিশের কাছে
আবেদন জানিয়েছি। শারীরিক নির্যাতন হয়ে থাকলে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানিয়েছি।”
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার
শরীরে আঘাতের চিহ্ণ আছে। কেমন করে তাঁর এমন পরিস্থিতি হল এখনই তা বলা সম্ভব নয় বলে
জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ওই মহিলার স্বামীর খোঁজে তল্লাশি
চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক
দাস বলেন, ‘‘ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।”
তিনি জানিয়েছেন, মহিলা কথা বলার মতো অবস্থায় না থাকায়, তাঁর সঙ্গে ঠিক কী হয়েছে, বোঝা
যাচ্ছে না। তবে পুলিশ খোঁজ খবর শুরু করেছে। ওই মহিলা কথা বলতে পারলেই বিষয়টি পরিষ্কার
হয়ে যাবে।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৪/০৩/২০১৮।
No comments:
Post a Comment