মদ খাওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে ছেলেকে কুপিয়ে
খুন করার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। রবিবার (১৮/০৩/২০১৮) রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি
ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলা থানার বাজারগাঁও ২ পঞ্চায়েতের মাঝোক এলাকায়। পুলিশ
জানিয়েছে, নিহতের নাম মঙ্গল সোরেন (২৫)।
এ দিন গভীর রাতে বাড়ি থেকে মঙ্গলের রক্তাক্ত
দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহটি করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা
তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মঙ্গলকে খুনের অভিযোগে রাতেই পুলিশ বাড়ি থেকে তাঁর বাবা
মুলাই সোরেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সোমবার মঙ্গলের মা সইলি মুর্মুর লিখিত
অভিযোগের ভিত্তিতে মুলাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডালখোলা থানার ওসি মনোজিৎ দাসের দাবি,
কী কারণে অভিযুক্ত তাঁর ছেলেকে খুন করলেন, তা জানতে এ দিন ধৃতকে ইসলামপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয়
আদালতের মাধ্যমে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে
খুনের কাজে ব্যবহৃত একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মুলাই ও সইলির চার ছেলের মধ্যে
মঙ্গল সব চাইতে বড়। এক বছর আগে মঙ্গলের সঙ্গে চাকুলিয়া থানার গণ্ডাল এলাকার বাসিন্দা
তালামিয়া মুর্মু নামে এক তরুণীর বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা
চেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তালামিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন বলে অভিযোগ।
পুলিশের দাবি, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে কয়েক মাস আগে তালামিয়া বাপের বাড়ি চলে যান।
স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার পর থেকে পেশায় দিনমজুর মঙ্গল মানসিক অবসাদে নিয়মিত মদ্যপান
করে বাড়িতে ফিরে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে গোলমাল করত বলে অভিযোগ। মদ্যপানের প্রতিবাদ
করায় পেশায় চাষি মুলাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই তাঁর ছেলে মঙ্গলের মারপিট লেগে থাকত।
মঙ্গলের মা সইলির দাবি, রবিবার রাতে তিনি প্রতিবেশী
এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁর তিন ছেলেও বাড়িতে ছিলেন না। সেই সময়
মঙ্গল মদ্যপান করে বাড়িতে ফিরলে বাবা মুলাইয়ের সঙ্গে তাঁর গোলমাল চরমে ওঠে। দু’জনের মধ্যে মারপিটও
বেধে যায়। সেই সময় মুলাই রান্নাঘর থেকে খড়ি কাটার একটি দা দিয়ে মঙ্গলের ঘাড়ে ও পিঠে
আঘাত করেন বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির উঠোনে লুটিয়ে পড়েন মঙ্গল। চিৎকার চেঁচামেচিতে
প্রতিবেশীরা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি দেখার পর পুলিশে খবর দেন। সইলি বলেন, ‘‘ছেলে
মানসিক রোগী। দীর্ঘ দিন ধরে ওর চিকিৎসা চলছে। তাই ও মদ্যপান করলেও ওকে মারধর না করার
জন্য স্বামীকে বহু বার বলেছি। কিন্তু স্বামী সে কথা শোনেননি। রবিবার রাতে স্বামী মাথা
ঠান্ডা রাখতে না পেরে ছেলেকে কুপিয়ে খুন করে ফেলেছেন।”
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ২০/০৩/২০১৮।
No comments:
Post a Comment