কেরোসিন নেহাত কম পড়েছিল। এটাই আক্ষেপ দুই
কিশোরের! কারণ, ধর্ষিতা কিশোরী ঘটনাস্থলেই পুড়ে মরে গেলে হয়তো ‘বেঁচে’যেত তারা। নির্ভয়া-কাণ্ডের
মতোই অসমের নগাঁও জেলার বটদ্রবায় এক কিশোরীর গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে গোটা রাজ্য উত্তপ্ত।
গত শুক্রবারের ওই ঘটনায় ধৃত দুই কিশোরকে জেরা করে যে ছবিটি আজ উঠে এসেছে, তাতে পুলিশও
হতবাক। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরায় ছেলে দু’টি জানিয়েছে, তিন জন মিলে গোটা কাণ্ড ঘটিয়েছে তারা। গণধর্ষণে
নেতৃত্ব দিয়েছিল এক সন্তানের বাবা, ২১ বছর বয়সি স্থানীয় এক যুবক। নাম জাকির হুসেন।
বটদ্রবার লালুং গ্রামে পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি তিন জনে।
মেয়েটির গায়ে কেরোসিন ঢেলে, আগুন লাগিয়ে দিয়ে মজাও দেখেছিল তারা। কিন্তু ঘটনাস্থলে
মৃত্যু হয়নি কেরোসিন কম পড়ায়। মারা যাওয়ার আগে তিন ধর্ষণকারীর নামই বলে গিয়েছিল মেয়েটি।
তারই সূত্রে দুই কিশোর ধরা পড়লেও প্রধান অভিযুক্ত জাকির ও তার পরিবার বেপাত্তা হয়ে
হয়ে যায়। তার ফোনের কল রেকর্ড দেখে তাঁকে আজ ন’গাঁওয়ের ইটাপাড়া লাউগাঁও থেকে ধরা হয়েছে। ধৃত দুই কিশোরকে জুভেনাইল
আদালতে তোলা হয়েছে।
একে চেনা মুখ, তার উপরে এত কম বয়স। তা সত্ত্বেও
যে ভাবে দুই নাবালক ওই বালিকার উপরে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল, তার
বিবরণ ও এবং তাদের আক্ষেপের বিষয় শুনে স্তম্ভিত গোটা নগাঁও। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জেলার পুলিশ সুপার শঙ্করব্রত রায়মেধিকে নিজে ঘটনার
তদন্ত করার নির্দেশ দেন। তদন্ত তদারক করছেন দুই এডিজি মুকেশ অগ্রবাল ও হরমিত সিংহ।
আজও ওই ঘটনার প্রতিবাদে নগাঁওয়ে দলমত নির্বিশেষে
বিরাট প্রতিবাদ মিছিল হয়। এই এলাকায় পরপর কয়েকটি ধর্ষণ হওয়ায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের
দিকে আঙুল তুলছেন রাজ্যের কয়েক জন বিধায়ক। দাবি উঠছে, ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আইন
করতে হবে।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৬/০৩/২০১৮।
No comments:
Post a Comment