প্রিয় পান্তা
ভাত খেয়েই প্রচারে বেরচ্ছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)
এবং ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির জোট প্রার্থী বীরবাহা হাঁসদা।
এ বার ঝাড়গ্রাম
লোকসভা আসনে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) এবং ঝাড়খণ্ড অনুশীলন
পার্টির জোট প্রার্থী হয়েছেন বীরবাহা হাঁসদা। তিনি প্রার্থী
হওয়ায় শাসক ও বিরোধী শিবিরে ভোট কাটাকুটি হিসেব-নিকেশ শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসকের অভিযোগ, বিরোধীদের
সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই প্রার্থী হয়েছেন সাঁওতালি সিনেমার এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। বিরোধীদের বক্তব্য, বীরবাহা
প্রার্থী হওয়ায় আদিবাসী ভোট কাটাকুটি খেলায় শাসকের লাভ হবে। যদিও বীরবাহা
জানাচ্ছেন বড় রাজনৈতিক দল তৃণমূল আর বিজেপি কেউই আদিবাসীদের ভালর কথা ভাবে না। আদিবাসীদের তারা
ব্যবহার করে।
তাই
আদিবাসীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। বীরবাহা বলেন, ‘‘জঙ্গমহলের
আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার আন্দোলনকে সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই রাজনৈতিক
ভাবে প্রচারে আসতে চাই। সেই জন্য লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছি।’’
রুটিন ডায়েট
চার্ট পান্তা ভাতের তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে প্রচারে যাচ্ছেন সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা
বীরবাহা হাঁসদা।
পরণে
আদিবাসী প্রথার পাঞ্চি শাড়ি। প্রসাধনহীন মুখে স্নিগ্ধ হাসি।
সাঁওতালি সিনেমার
এই অভিনেত্রী দু’বেলা ভাত খান। সকালে ও দুপুরে পান্তা ভাত আর রাতে গরম ভাত। ভোটের প্রচারেও
খুব একটা হেরফের হচ্ছে না এই রুটিনের। বীরবাহা জানালেন, রোজ সকাল
৬ টায় ঘুম থেকে উঠে পড়েন তিনি। ব্যায়ামের পরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরে স্নান
সেরে পাঞ্চি শাড়ি পরে তৈরি হয়ে যান প্রচারে বেরোনোর জন্য। কর্মীরাও ততক্ষণে
এসে পড়েন।
ঝাড়গ্রাম
শহরের বিদ্যাসাগর পল্লির বাড়ির উঠোনে অপেক্ষায় থাকে বীরবাহার নিজস্ব সাদা রঙের গাড়ি (বলেরো)। বীরবাহা বলেন, ‘‘নিজেকে
সুন্দর করে রাখতে স্নিগ্ধ মনে খাওয়া দরকার। তাই আমি হাসিমুখেই খাই।’’ খাওয়া
শেষ করে প্রচারে বেরোন বীরবাহা। সঙ্গে ঝোলা ব্যাগে নেন টিফিন বক্স ভর্তি মুড়ি আর
চারটি বড় জলের বোতল। বাড়ির বাগানের কাঁচা আম খান কতক। নুন লঙ্কা গুঁড়োও
কাগজের প্যাকেটে করে সঙ্গে রাখেন অভিনেত্রী। প্রচারে বেরিয়ে কখনও লিকার চা আর শুকনো মুড়ি। তবে দুপুরে কোনও
গ্রামে পরিচিত জনের বাড়ি পেলে সেখানে একবাটি পান্তা ভাত আর কাঁচা পেঁয়াজ দিয়ে লাঞ্চ
সরেন।
এই সময় জঙ্গল
মহলে কেন্দু গাছের কেঁদ ফল পাকার মরসুম। প্রচারে গিয়ে জঙ্গলে প্রান্তরে গাছ থেকে পাকা কেঁদ
ফল পেড়েও খান বলে জানান বীরবাহা। সেই ফলের মিষ্টি স্বাদে মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। সন্ধ্যের আগেই
প্রচার থেকে ফিরে ঠান্ডা জলে স্নান। তারপর লিকার চা খেয়ে মা ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)
সভানেত্রী ও প্রাত্তন বিধায়িকা চুনিবালা হাঁসদার সঙ্গে হাঁটতে বেরোন
বীরবাহা।
বাইরের
খাবার প্রায় খান না। ইচ্ছে হলে কখনও বাড়িতে পেঁয়াজি বানিয়ে খান। তবে রাতে চাই
গরম ভাত।
সঙ্গে
চার রকম আনাজ আর মাছের নানা পদ। তবে সুস্থ আর সতেজ থাকতে পান্তা ভাত তাঁর চাই।
সৌজন্য – আনন্দবাজার
পত্রিকা, ২৭/০৪/২০১৯।
No comments:
Post a Comment