Saturday, February 24, 2018

ভয়, প্রলোভন দেখিয়ে আদিবাসীদের জমি কেনার অভিযোগ বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে।


ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে জমি কিনে নেওয়ার অভিযোগ উঠল খড়গপুর একনম্বর ব্লকের বড়কোলা ও কলাইকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি মৌজায়৷ অভিযোগের তির রশ্মি মেটালিক্স কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরু‌দ্ধে। অভিযোগ, বড়কোলা ও কলাইকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামরাইপুর, নন্দারচক, খান্ডারচক বহরাপাট-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জমি ভুল বুঝিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷ আর যাঁরা জমি দিতে রাজি হচ্ছেন না, তাঁদের কাছে বেসরকারি সংস্থাটি দালাল পাঠিয়ে দিচ্ছে৷ তার সঙ্গে নানারকম প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে ব্যাপক চাপ তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
জমি দখলের বিরোধিতা করার জন্য অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের জেলা সভাপতি তারক বাগকে ইতিমধ্যে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ৷ তবে এই চিঠি তাঁকে গত বছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু সেই সময়ে তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপারকে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ৷ তাই ফের বৃহস্পতিবার তিনি জেলা পুলিশ সুপারকে ওই চিঠিগুলির বিষয়ে নতুন করে অভিযোগ জানিয়েছেন৷ তিনি সাফ জানিয়েছেন, এইরকমভাবে রশ্মি মেটালিক্স কারখানা কর্তৃপক্ষ জুলুমবাজি করলে বাধ্য হয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন৷ সামরাইপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজিত কারকের অভিযোগ, তাঁদের জমিতে বছরে দুবার ধান চাষ করা হয়৷ এই বিরাট জমি নেওয়ার জন্য এখন কারখানা কর্তৃপক্ষ দালালদের ভিড়িয়ে দিয়েছে৷ তারাই এখন চাপ সৃষ্টি করছে জমিটা বিক্রি করে দিতে৷ জমি দিতে রাজি না হওয়ায় এখন কারখানা কর্তৃপক্ষ পাশের কেনা জমির উপরে কারখানার অন্য একটা ইউনিট থেকে ছাই নিয়ে এসে ঢেলে রাখছে৷ আর এর ফলে তাঁর জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি৷
ধুলিয়াচকের বাসিন্দা দিলীপ কোটাল জানিয়েছেন, খাঞ্জারচকে তাঁদেরও জমি রয়েছে৷ উপযুক্ত দাম না পেলে জমি বেচবেন না৷ সামরাইপুরের বাসিন্দা গৃহশিক্ষক রাজীব মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁরা জমি দিতে রাজি নন৷ কিন্তু দালালরা তাঁদের পরিবারের উপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করছেন জমি বিক্রি করে দিতে৷ রশ্মি মেটালিক্সের এক পদস্থ কর্তা মুকুটমণি ঘোষ বলেন, “এইসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন৷ যাঁরা জমি দিয়ছেন তাঁরা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন৷ কোনও ভয় দেখানো কিংবা প্রলোভন দেওয়া হয়নি৷ খড়গপুরের মহকুমা শাসক সুদীপ সরকার বলেন, “এই ধরনের জমি দখলের অভিযোগের চিঠি এসেছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে৷জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “প্রাণনাশের হুমকির কোনও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে৷ তবে খড়গপুর গ্রামীণ থানায় জমি জবরদখল নিয়ে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
সৌজন্য – সংবাদ প্রতিদিন, ২৪/০২/২০১৮।

No comments:

Post a Comment