ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে জমি কিনে নেওয়ার অভিযোগ উঠল খড়গপুর একনম্বর
ব্লকের বড়কোলা ও কলাইকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি মৌজায়৷ অভিযোগের তির রশ্মি
মেটালিক্স কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বড়কোলা ও কলাইকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের
সামরাইপুর, নন্দারচক, খান্ডারচক বহরাপাট-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের
মানুষের জমি ভুল বুঝিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷ আর যাঁরা জমি দিতে রাজি হচ্ছেন না, তাঁদের কাছে
বেসরকারি সংস্থাটি দালাল পাঠিয়ে দিচ্ছে৷ তার সঙ্গে নানারকম প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে ব্যাপক
চাপ তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
জমি দখলের বিরোধিতা করার জন্য অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের
জেলা সভাপতি তারক বাগকে ইতিমধ্যে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ৷
তবে এই চিঠি তাঁকে গত বছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু সেই সময়ে
তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপারকে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ৷ তাই ফের
বৃহস্পতিবার তিনি জেলা পুলিশ সুপারকে ওই চিঠিগুলির বিষয়ে নতুন করে অভিযোগ জানিয়েছেন৷
তিনি সাফ জানিয়েছেন, এইরকমভাবে রশ্মি মেটালিক্স কারখানা কর্তৃপক্ষ জুলুমবাজি করলে বাধ্য
হয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন৷ সামরাইপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজিত
কারকের অভিযোগ, তাঁদের জমিতে বছরে দু’বার ধান চাষ করা হয়৷ এই বিরাট জমি নেওয়ার জন্য এখন কারখানা কর্তৃপক্ষ
দালালদের ভিড়িয়ে দিয়েছে৷ তারাই এখন চাপ সৃষ্টি করছে জমিটা বিক্রি করে দিতে৷ জমি দিতে
রাজি না হওয়ায় এখন কারখানা কর্তৃপক্ষ পাশের কেনা জমির উপরে কারখানার অন্য একটা ইউনিট
থেকে ছাই নিয়ে এসে ঢেলে রাখছে৷ আর এর ফলে তাঁর জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে
আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি৷
ধুলিয়াচকের বাসিন্দা দিলীপ কোটাল জানিয়েছেন, খাঞ্জারচকে তাঁদেরও
জমি রয়েছে৷ উপযুক্ত দাম না পেলে জমি বেচবেন না৷ সামরাইপুরের বাসিন্দা গৃহশিক্ষক রাজীব
মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁরা জমি দিতে রাজি নন৷ কিন্তু দালালরা তাঁদের পরিবারের উপর রীতিমতো
চাপ সৃষ্টি করছেন জমি বিক্রি করে দিতে৷ রশ্মি মেটালিক্সের এক পদস্থ কর্তা মুকুটমণি
ঘোষ বলেন, “এইসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন৷ যাঁরা জমি দিয়ছেন তাঁরা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন৷
কোনও ভয় দেখানো কিংবা প্রলোভন দেওয়া হয়নি৷ খড়গপুরের মহকুমা শাসক সুদীপ সরকার বলেন,
“এই ধরনের জমি দখলের অভিযোগের চিঠি এসেছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে৷”জেলা পুলিশ সুপার অলোক
রাজোরিয়া বলেন, “প্রাণনাশের হুমকির কোনও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে৷ তবে খড়গপুর গ্রামীণ
থানায় জমি জবরদখল নিয়ে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
সৌজন্য – সংবাদ প্রতিদিন, ২৪/০২/২০১৮।
No comments:
Post a Comment