Saturday, February 24, 2018

কুশমণ্ডি গণধর্ষণ কাণ্ডে তির-ধনুক নিয়ে আন্দোলনে পথে আদিবাসীরা।


কুশমণ্ডির ধর্ষণ ও নির্যাতন কাণ্ডে ধৃতদের বাড়িঘর পোড়ানোর পর এবার রাস্তায় নেমে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করল আদিবাসীরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে দিনভর বিক্ষোভ, মিছিল, রাস্তা অবরোধ এবং পথসভায় শনিবার কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় স্বাভাবিক জীবনযাপন। যদিও আগেভাগে পুলিশ কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে রাখায় বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সকাল থেকেই গঙ্গারামপুর এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের আদিবাসী মানুষজন। হাতে তির-ধনুক নিয়ে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। এরপর গঙ্গারামপুর বাসস্ট্যান্ড চৌমাথা এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ সভা করা হয়। সেই সভায় অবশ্য শামিল হন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। তিনি সকলকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের আরজি জানান। আদিবাসীদের এই আন্দোলনের জেরে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়ক। দীর্ঘক্ষণ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু যানবাহন। ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন আদিবাসী মহিলা ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং দোষীদের ফাঁসির দাবি তোলা হয়।
আন্দোলনকারী আদিবাসী সংগঠন আসেকার সভাপতি নৃপ্রেন্দ্রনাথ হেমব্রম বলেন, “গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কুশমণ্ডিতে আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গঙ্গারামপুরে ধিক্কার মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। রুখে না দাড়ালে দিন দিন আমাদের সম্প্রদায়ভূক্ত মহিলাদের বারবার ধর্ষণ ও নির্যাতন আটকানো যাবে না। এর আগে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, কুশমণ্ডির লোহাগঞ্জ এবং তারপর ফের দেহাবন্দ এলাকা তার প্রত্যক্ষ উদাহরণ। দোষীদের ফাঁসি দিলে পরবর্তীতে আর কেউ এই ধরনের কাজ করার সাহস পাবে না।
মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, কুশমণ্ডির ঘটনা নিন্দনীয়। ঘটনায় জড়িত দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। হিংসা নয়, শান্তিতে আন্দোলন চলুক সেই আবেদন তিনি। দোষীদের শাস্তি হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্যদিকে, শুক্রবার ধৃতদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার সময় থেকেই কুশমণ্ডির দেহাবন্ধ এলাকায় বিরাট পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শনিবারও গোটা এলাকা থমথমে ছিল। স্থানীয় থানার অফিসারদের পাশাপাশি বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে এলাকায় টহল দিচ্ছেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে এদিন মালদহ মেডিক্যালে কুশমণ্ডির নির্যাতিতাকে দেখতে যান রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক খগেন মুর্মু এবং দলের মালদহ জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ওই নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। ফলে হাসপাতালেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাংসদ। কিছুক্ষণ হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে আসেন তাঁরা।
সৌজন্য – সংবাদ প্রতিদিন, রাজা দাস, ২৫/০২/২০১৮।

No comments:

Post a Comment