ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পূর্ব সিংভুম জেলার দেওঘর গ্রামের বাসিন্দা অশোক সরেন। ২৯ বছর
বয়সী এই আদিবাসী তিরান্দাজ ২০০৮ সালে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান গেমসে
দুটো সোনার পদক ও একটি রুপোর পদক জিতেছিলেন। তার আগে ২০০৭-এ রাজ্য স্তরের সিনিয়র
তিরন্দাজি চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছিলেন এই অশোক। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের মান তুলে
ধরলেও পরবর্তীকালে কোনরকম সরকারী বা বেসরকারি সাহায্য পাননি অশোক সরেন। খুবেই সাধারণ
ও দরিদ্র ঘর থেকে উঠে এসেছেন অশোক সরেন। বাবা মা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। বর্তমানে
কাকার সঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি সেই কাকাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। দারিদ্র্যের অভাবে কাকা কে
ঠিক মতন চিকিৎসাও করাতে পারেননি। একটু সরকারী সাহায্যের আসায় দফতরে দফতরে ঘুরেছেন,
কিন্তু কোথাও সাহায্য পাননি। দারিদ্র্যের জ্বালায় নিজের প্রিয় তির-ধনুক টিকেও বিক্রি
করে দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দিন মজুরির কাজ করতে শুরু
করেন। কখনও রাস্তা কাটার কাজ, তো কখনও পুকুর কাটার কাজ করছিলেন। তিরান্দাজিকে বিদায়
জানিয়ে ফেলেছিলেন।
কিন্তু সম্প্রতি ভাগ্য সহায় হয় অশোক সরেনের। সম্প্রতি সরাইকেলা-খোরসোয়া এলাকার
একটি স্কুলে তিরান্দাজি শেখানোর ৮০০০ টাকা মাইনের চাকরি পান। সম্প্রতি অশোক সরেনের
বিষয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর জানতে পারেন। জানার পর কেন্দ্রীয়
ক্রীড়া মন্ত্রী অশোক সরেনকে ৫ লক্ষ টাকা সরকারী অনুদান দেবার কথা ঘোষণা করেন।
এর আগে অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত তিরন্দাজ লিম্বা রামের সঙ্গেও একই ব্যাপার হয়েছিল।
তিনি অসস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর দিকে সরকার ঘুরেও তাকায়নি। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার
পর, তাঁর অসুস্থতার খবর জানাজানি হওয়ার পর লিম্বা সরকারের তরফে অনুদান পান। এবারও অশোক
সরেনের খবর চাওর হতে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন।
No comments:
Post a Comment