আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার স্কুলগুলিতে সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার পরিকাঠামোর
দাবীতে অনির্দিষ্ট কালের অবস্থান বিক্ষোভ আদিবাসীদের। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার স্কুলগুলিতে সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক
নিয়োগ ও সাঁওতালি শিক্ষার পরিকাঠামোর দাবিতে গত সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ থেকে অনির্দিষ্ট
সময়ের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস মেদিনীপুর শহরের শিক্ষা
ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলেন আদিবাসীরা। আদিবাসীদের দুটি
জনপ্রিয় সামাজিক সংগঠন আদিবাসী সোশিও এডুকেশনাল কালচারাল অ্যাসোশিয়েশন
(Adibasi Socio-Educational & Cultural Association -
ASECA) ও ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল (Bharat Jakat Majhi
Pargana Mahal - BJMPM) এর নেতৃত্বে আদিবাসীরা অবস্থান আন্দোলন শুরু
করেছেন সোমবার ২৩/০৭/২০১৮ সকাল দশটা থেকে। আদিবাসী সংগঠন দুটির দাবি, লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি
না পাওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষার পর্যাপ্ত পুরোপুরি
পরিকাঠামোর দাবিতে সোমবার বেলা দশটা থেকে জেলার শিক্ষা ভবন ঘেরাও করে অবস্থান
বিক্ষোভ শুরু করেছেন কয়েক হাজার আদিবাসী পুরুষ ও মহিলা।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলের ভিতরে
থাকা আদিবাসী এলাকায় বহু বিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি হরফে পঠন-পাঠন শুরু করা হয়েছে। কিন্তু আদিবাসীদের অভিযোগ, প্রাথমিক
বিদ্যালয়গুলিতে এই পরিকাঠামো চালু করা হলেও সেখানে প্রকৃত সাঁওতালি শিক্ষক নেই। তা ছাড়া, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি থেকে বেরিয়ে আদিবাসী
ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলেই আর সাঁওতালি শিক্ষা পাচ্ছে
না। কারণ, উচ্চ
বিদ্যালয় স্তরগুলিতে সাঁওতালি শিক্ষা পরিকাঠামো নেই। তাই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় এই বিষয়ে পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর
দাবি উঠেছে।
ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা
কমিটির ‘গডেৎ’ তথা আহ্বায়ক রাইসেন হাঁসদা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে বলেছিলেন, জঙ্গলমহলের অনেক
উন্নতি করা হবে। কিন্তু কোথায় সেই প্রকৃত উন্নতি? যেখানে জঙ্গলমহলের
মূল বাসিন্দাদেরই তাদের শিক্ষায় শিক্ষিত করার সঠিক উদ্যোগ নেই। সবাই আদিবাসীদের নিয়ে রাজনীতি করছে, কিন্তু আদিবাসীদের ক্ষোভ কোথায় সেটা সরকার বুঝতে চাইছে না। আমরা তাই এই শিক্ষার প্রকৃত পরিকাঠামো, শিক্ষক ও আলাদা সাঁওতালি
বোর্ড গঠনের দাবিতে এই অবস্থান শুরু করলাম। প্রকৃত অর্থে দাবি আদায় না হলে এই অবস্থান চলবে।"
মেদিনীপুর শহরের কোতোয়ালি থানার পুলিশের পক্ষ থেকে আদিবাসী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে
কয়েক দফা কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। তবে কোনও সুষ্ঠু সমাধানের রাস্তা এখনও বেরিয়ে আসেনি। ফলে অবস্থান বিক্ষোভ অব্যাহত। ডিআই (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সৌজন্য – সারি কাথা।
No comments:
Post a Comment