Thursday, June 15, 2017

Trinamul Congress agrees to change the route of proposed train line in Vaba Dighi, TMC MLA wrote to Rail. ভাবা দিঘি বাঁচিয়ে লাইন পাতায় রাজি, রেলকে চিঠি তৃণমূল বিধায়কের।


দীর্ঘদিন ধরে নানা হম্বিতম্বি করার পর অবশেষে ভাবাদিঘির রেল প্রকল্প নিয়ে সুর নরম করল তৃণমূল৷ গোঘাটের তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদার পূর্ব রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে সম্প্রতি এক চিঠিতে দিঘি বাঁচিয়ে রেল লাইন করার কথা বলেছেন৷ চিঠিতে তিনি রেলকর্তার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘দিঘি বাঁচিয়ে যদি আপনাদের পক্ষে রেল লাইন করা সম্ভব হয়, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই৷ আমরা চাই, তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর লাইনের ওই সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক৷’ সূত্রের খবর, রেল বিধায়ককে তাঁর চিঠির জবাবে লিখিত ভাবে কিছু জানায়নি৷ তবে মৌখিক ভাবে তাঁকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে লাইন ঘোরানো সম্ভব নয়৷ স্থানীয় বিধায়কের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটি৷ তার অন্যতম মুখপাত্র স্বপন রায় বলেন, ‘এত দিনে তাহলে ঘুম ভাঙল ? আমরা তো এই কথাই প্রথম থেকে বলে আসছি৷ আমরা রেল লাইনের জন্য দিঘির উত্তর পারের জায়গা ছেড়ে দেব৷’ ভাবাদিঘির মানুষ দিঘি বাঁচিয়ে রেল লাইন করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন৷ সেই আন্দোলনকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের তাবড় নেতা-মন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে কটাক্ষ করেছেন৷ মাস তিনেক আগে বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘ওটা আমার স্বপ্নের প্রকল্প৷ আমাকে কেউ চমকাতে আসবেন না৷ ওই জায়গা দিয়েই রেল লাইন হবে৷ দরকার হলে পাশ দিয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ দিঘি কাটিয়ে দেব৷’ মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রয়োজনে আলোচনায় বসার কথাও বলেছিলেন৷ যদিও তার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি বা সরকারের তরফ থেকে কেউ আন্দোলনকারীদের আলোচনার টেবিলে ডাকেননি৷ এর আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ও গোঘাটে গিয়ে নানা প্রতিশ্রীতি দিয়ে এসেছিলেন৷ তবে তিনিও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেননি৷ বিধায়ক রেলকে লেখা চিঠিতে জানান, তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প গোঘাট স্টেশনের অনতিদূরে ভাবাদিঘির পারে গিয়ে অংশীদারদের কিছু অংশের বাধায় থমকে গিয়েছে৷ তারা কোনও ভাবেই দিঘির উপর দিয়ে প্রকল্প নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিল না৷ এই অবস্থায় রেলের কাজ দ্রুত শুরু করার স্বার্থে মানুষদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে একগুচ্ছ প্রতিশ্রীতি দেওয়া হয়েছে৷ তা পূরণ হলে আন্দোলনকারীরা রেলের কাজ শুরু করতে দিতে রাজি আছেন৷ মানস বলেন, ‘রেলের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা মানুষকে বুঝিয়ে ছিলাম, দিঘির দুই প্রান্তের কাজ যেখানে প্রায় শেষ, সেখানে রেলের পক্ষে অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন করা অসম্ভব৷ তার পরও কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বলছে, রেল মনে করলে অ্যালাইমেন্ট বদল করে দিঘির জল বাদ দিয়ে উত্তর পারের ডাঙার উপর লাইন ঘোরাতে পারে৷ আমরা নাকি তাতে বাধা দিচ্ছি৷’ এই অবস্থায় তৃণমূল বিধায়ক জানাচ্ছেন, রেল যদি দিঘি বাঁচিয়ে রেল লাইন করতে পারে, তাহলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই৷ এদিকে বুধবারই ভাবাদিঘি নিয়ে কলকাতায় পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দ্র রাওয়ের সঙ্গে আলোচনা করেন সেভ ডেমোক্র্যাসির এক প্রতিনিধিদল৷ তাঁদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদেরও কয়েক জন ছিলেন৷ রেলকর্তা তাঁদের জানান, রেল বিষয়টি নিয়ে ভাবছে৷ বৃহস্পতিবার গোঘাটের বিধায়ক বলেন, ‘যাতে রেলের কাজ দ্রুত শেষ করা যায়, তার জন্যই আমি চিঠি দিয়েছি৷ আমরা বাগড়া দিচ্ছি বলে একটা প্রচার চলছে৷ আমরাও চাই, দিঘি বাঁচুক৷ রেল লাইনটি হলে সাধারণ মানুষের উপকার হবে৷’ গত ১৬ মার্চ, ২০১৭ ভাবাদিঘি নিয়ে প্রথম আন্দোলনের সূচনা হয়৷ তাতে মারধর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া, গাড়ি ভাঙচুর সবই চলে৷ পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মারামারি হয়৷ তার পর দীর্ঘ প্রায় তিন মাস রেলের কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে৷
দেবাশিস দাশগুন্ত ও দিব্যেন্দু সরকার, এই সময়।

http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=32508&boxid=144254875

No comments:

Post a Comment