নারী
পাচারের রুখতে এক সময় যিনি পুলিশকে নিয়মিত তথ্য দিতেন, তাঁকেই ওই অপরাধ সংক্রান্ত একটি
মামলায় গ্রেন্তার করল পুলিশ৷ বাগুইআটি এলাকার পানশালাগুলিতে নারীপাচার চলছে বলে দীর্ঘদিন
ধরে ফেসবুকে এর বিরুদ্ধে প্রচার চালাতেন রাজীব সরকার৷ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার
হিসেবে নিজেকে দাবি করা রাজীবের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ, এলাকার নারী পাচারে যুক্তদের
কাছ থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তাঁর বিরুদ্ধে৷ শুক্রবার ধৃতকে ব্যারাকপুর
আদালতে পেশ করবে বাগুইআটি থানার পুলিশ৷ কখনও পানশালার আড়ালে দেহ ব্যবসার অভিযোগ, কখনও
কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় পানশালা থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্থানীয় বাসিন্দাদের
কাছে নীতি পুলিশ হিসেবে নিজের ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিলেন এই রাজীব৷ পানশালার বিরুদ্ধে
তিনটে মামলাও করেছেন তিনি৷ এমনকি, ২০১৫-র ২০ জুলাই গভীর রাতে নিজের বাড়ির সামনে ওই
পানশালার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য তাঁকে প্রহূত হতে হয়েছিল বলেও দাবি করেছিলেন
দেশবন্ধুনগরের বাসিন্দা৷ গত ২৩ মে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান
সন্তোষ পাণ্ডে সেই ব্যক্তির কথা তুলে জানিয়েছিলেন, পানশালা সংক্রান্ত মামলার তদন্তে
নেমে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি পানশালা মালিক এবং ডাউন টাউন গোষ্ঠীর অনত্যম কর্ণধার
জগজিত্ সিংয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন রাজীব৷ ২০১৫-র অগস্ট থেকে ৮ বার ২৫ হাজার টাকা
করে মোট ২ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে রাজীবের অ্যাকাউন্টে৷ রাজীব দাবি করেছিলেন, ‘এনজিও থেকে
আমার চাকরি চলে যাওয়ার পর জগজিত্ সিং আমাকে তাঁর সংস্থায় কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ
করেছিলেন৷ সেই সূত্রেই টাকা পেয়েছি৷’ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদেও এই দাবি করেন রাজীব৷ এতেই
সন্দেহ বাড়ে গোয়েন্দাদের৷ কমিশনারেটের এক কর্তা এ দিন জানান, পানশালায় কনস্যালট্যান্ট
হিসেবে রাজীবকে নিয়োগের বিষয়টি থেকেই পরিষ্কার হয় নেপথ্যে অন্য কোনও গল্প রয়েছে৷ সে
কারণেই দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ৷ সূত্রের দাবি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে
হাতিয়ার করেই লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন রাজীব৷ কখনও বা সেই টাকা এসেছে আইনি ঝামেলা থেকে
পানশালা মালিককে বাঁচিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসেবে৷ তাঁর স্বেচাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠানে
বহুবার দেখা গিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্তাদের৷ যা থেকেই পরিষ্কার, পুলিশকর্তাদের
সঙ্গে ভালো রকমের যোগাযোগ রেখে চলতেন রাজীব৷ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘রাজীবের সঙ্গে
আর কে কে যুক্ত, কোনও পুলিশকর্মী ওকে এই ঘটনায় সাহায্য করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা
হচ্ছে৷’
এই
সময়।
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=32509&boxid=14475394
No comments:
Post a Comment