নয়াদিল্লি : নার্সারি থেকে
একেবারে পিএইচডি পর্যন্ত মেয়েদের বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ দেবে পাঞ্জাব সরকার৷
মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং মঙ্গলবার বিধানসভায় এই ঘোষণা করেছেন৷ আগামী ১ জুলাই
থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে৷
সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত
স্কুলে নার্সারি থেকে দ্বাদশ এবং তারপরে কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের
খরচ সম্পূর্ণ মকুব করার সিদ্ধান্ত কার্যত নজিরবিহীন৷ শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকলেরই বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ পাওয়ার কথা৷ তারপরে মূলত
দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য নানা সরকারের নানা প্রকল্প আছে৷ কোনও পরিবারের
একমাত্র কন্যাসন্তান সিবিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষা ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর
পেয়ে পাশ করলে একাদশ -দ্বাদশের জন্য স্কলারশিপ দেওয়া হয়৷ তবে এ রকম বিচ্ছিন্ন
প্রকল্প নয়৷ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, মেয়েদের পড়াশোনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব
দিচ্ছেন তাঁরা৷ নির্বাচনী প্রচারে দেওয়া প্রতিশ্রীতি পূরণ করে মেয়েদের ক্ষমতায়নের
একগুচ্ছ প্রকল্প নিচ্ছে রাজ্য সরকার৷ দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ
দেওয়ার জন্য আগেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন৷ এর মধ্যে একটি প্রকল্প অনুযায়ী
মেয়েদের থেকে লোকাল ফান্ড নেওয়া নিষিদ্ধ৷ মঙ্গলবারের এই ঘোষণার পরে ছাত্রীদের
পঠনপাঠনের জন্য অ্যাডমিশন ফি,
অ্যামালগামেটেড
ফান্ড, পিটিএ এবং স্পোর্টস ফিও
নেওয়া যাবে না৷ ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী পাঞ্জাবে ১০০ জন মেয়ে প্রতি ছেলের সংখ্যা
১১৭-রও বেশি৷ যার অর্থ, রাজ্যে পুত্রসন্তানের
জন্মহার অনেক বেশি বা এক বছর বয়সের আগেই কন্যাসন্তানদের মৃত্যুহার স্বাভাবিকের
অনেক উপরে৷ কন্যাভ্রূণ হত্যার পাশাপাশি সাক্ষরতার হারেও ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা
অনেকটাই পিছিয়ে৷ সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পাঞ্জাবে
সাক্ষরতার হার ৬৯.৭ শতাংশ৷ ছেলেদের ক্ষেত্রে এই হার ৭৫.৪ শতাংশ৷ সে জায়গায় মেয়েরা
আছে ৬৩.৪ শতাংশে৷ এই পরিস্থিতিতে অমরিন্দরের উদ্যোগ এবং সরকারি ঘোষণাকে স্বাগত
জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ মেয়েদের পড়াশোনার খরচ মকুবের পাশাপাশি একাদশ-দ্বাদশের
লাখদেড়েক ছাত্রী বিনামূল্যে সাইকেল পাচ্ছে কি না, তাও
দেখা হবে৷ শিক্ষা দফতরের কাজকর্মের
মূল্যায়ন হবে বলেও সরকার জানিয়েছে৷
সেই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থার
সামগ্রিক উন্নতির জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করছে রাজ্য সরকার৷ বিনামূল্যে পাঠ্যবই
বিতরণের সঙ্গে বইগুলি ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হবে৷ সরকারি স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক
চালু এবং সরকারি স্কুল কলেজগুলিতে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই পরিষেবা দেওয়ার কথাও জানান
তিনি৷ প্রয়োজন অনুযায়ী স্কুলে আসবাব, বাসনপত্র
দেওয়ার জন্যও ভাল মতো অর্থবরাদ্দ করেছে সরকার৷ জুলাই থেকে প্রত্যেক এডুকেশনাল
ব্লকে দু’টি করে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক
স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করবে সরকার৷ যদিও যথাযথ পরিকল্পনা এবং যোগ্য শিক্ষক
নিয়োগ না করে এই উদ্যোগ নেওয়া হলে কতখানি সফল হবে, তা
নিয়ে সংশয় আছে৷
সৌজন্য - এই সময়,
২১/০৬/২০১৭।
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=32626&boxid=135933970
No comments:
Post a Comment