Tuesday, June 6, 2017

Police firing on farmers protest rally in Madhya Pradesh, 5 dead. রক্তাক্ত মধ্যপ্রদেশ, কৃষক বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, হত ৫।



ইন্দোর : এক দিকে যখন ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার কথা বলছেন নরেন্দ্র মোদী, তখন মধ্যপ্রদেশে আয় বৃদ্ধির দাবিতে ও কৃষি ঋণ মকুবের আন্দোলন করতে গিয়েই পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিতে হল ৫ কৃষককে৷ জখম হলেন আরও কয়েক জন৷ পিপলিয়া, রতলাম, মন্দসৌরের মতো জায়গায় আন্দোলনকারীদের হঠাতে মঙ্গলবার নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ কার্ফু জারি করা হয় চারটি জায়গায়, উজ্জয়িনী সহ একাধিক জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়৷ এলাকায় মোতায়েন হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী৷ ৫ কৃষকের মৃত্যু ঘিরে যখন তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশজুড়ে, ঠিক তখনই বিতর্ক ধামাচাপা দিতে বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, পুলিশ নয়, গুলি চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা ! দিনের শেষে যা বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালে৷ তড়িঘড়ি মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করে, নিহতদের পরিবারকে এক কোটি করে ও আহতদের ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ নিহতদের পরিবারের একজনকে চাকরির প্রতিশ্রীতিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান৷ তবে এর পিছনে কংগ্রেসের হাত আছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি৷ টুইটে চৌহান জানান, এর বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ ডাল, পেঁয়াজ সহ অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের সহায়ক মূল্যের দাবিতে ১ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নেমেছেন পশ্চিম মধ্যপ্রদেশের কৃষকরা৷ মন্দসৌর, রতলাম এবং পিপলিয়া মান্ডি এলাকায় আচমকাই পথে নেমে গাড়ি ভাঙচুর করতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা৷ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ১০ টিরও বেশি ট্রাক এবং ৩টি বাইকে৷ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় রাস্তায় পাশের দোকানপাট৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কিছু জায়গায় প্রবল লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ কাঁদানে গ্যাসের সেলও ফাটানো হয়৷ এতে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়৷ দালোডা এলাকায় রেললাইন উপড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন ক্ষুব্ধ কৃষকেরা৷ পুলিশের দাবি, তখনই গুলি চালাতে বাধ্য হয় তারা৷ ঘটনাস্থলেই মারা যান ২ আন্দোলনকারী৷ পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও ৩ জনের৷ একই ছবি ধরা পড়েছে ইন্দোরে৷ আন্দোলনকারী কৃষকদের দাবি, তাঁদের দুর্দশার কথা কারও কানে যাচ্ছে না৷ প্রতিশ্রুতি ছাড়া সরকার কিছু দিতেই রাজি নয়৷ চৌহান এ দিনের দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনকঘটনায় ব্যথিতহলেও তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা আলোচনায় সমস্যা সমাধানে সবসময়ই আগ্রহী৷ কিন্তু এ দিন সমাজবিরোধীরা এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে৷প্রতিবাদে আজ, বুধবার বন্ধ ডেকেছে বেশ কিছু কৃষক সংগঠন৷ কংগ্রেস তাকে সমর্থন করছে৷ কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে কী এমন হল যার জন্য পুলিশ গুলি চালাল ? উজ্জয়িনী ডিভিশনের কমিশনার ও এম ঝায়ের বক্তব্য, দুপুর ২টো নাগাদ পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়৷ তখন গুলি চালানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না৷ আন্দোলনকারীদের পাল্টা দাবি, পরিস্থিতি বিগড়ে যাওয়ার দায় সরকারেরই৷ কদিন আগে চৌহানই সহায়ক মূল্যের জন্য তহবিল গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন৷ যদিও, তা এখনও গড়া হয়নি৷ যাতে কৃষকদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সরকারকে এক হাত নিয়ে আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরা৷ টুইটারে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য, সরকার এখন কৃষকদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে৷ এর তদন্তে নিজেদের বিধায়কদের নিয়ে দল গড়েছে কংগ্রেস৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, ‘ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক৷ মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা রইল৷ আমরা সর্বদা আমাদের কৃষকদের পাশে রয়েছি৷চৌহানের পদত্যাগ দাবি করেছে আপ৷ কৃষক হত্যার নিন্দা করে বিবৃতি জারি করে সিপিএমের পলিটব্যুরো৷ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘বিজেপির জমানায় যাঁরাই প্রতিবাদ করেন, তাঁদের উপর গুলি চালানোই কি তাদের একমাত্র কাজ ? তা ছাড়া ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে৷ আমাদের মৌন প্রধানমন্ত্রী তো শুধু বিদেশে কারও মৃত্যু হলে বিচলিত হন!পাল্টা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কৃষকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ করছেন শিবরাজ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষকদের এই আন্দোলন এখন মোদীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কারণ তাঁরই দলের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ৷ যিনি ক্ষমতায় এসেই কৃষিঋণের একটা বড় অংশ মকুব করে দিয়েছেন৷ যে উদাহরণকে সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছেন মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের কৃষকেরা৷ ঘটনাচক্রে যেগুলিতে বিজেপিরই সরকার৷ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানিয়েছেন, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সবচেয়ে বড় কৃষিঋণ মকুব করা হবে৷ তাতে প্রায় দুকোটি কৃষক উপকৃত হবেন৷ তাতে চাপ আরও বেড়েছে শিবরাজের ওপর৷ এ দিনের ঘটনা নিঃসন্দেহে তাঁর অস্বস্তিও বাড়িয়ে দিল৷
http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=32298&boxid=151556439

No comments:

Post a Comment