কাঁকসা ১৮ জুন, ২০১৭
নিয়মিত প্রচার, শিবির থেকে
ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা — গ্রামে কুসংস্কার দূর করতে এই ধরনের কর্মসূচির
উপরে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। সম্প্রতি কাঁকসার গোপালপুরের মনেরকোঁদা গ্রামে ডাইনি অপবাদে
এক মহিলা ও তাঁর পরিবারকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পরে সেখানে নিয়মিত নানা সচেতনতামূলক
অনুষ্ঠানের উদ্যোগ হয়েছে।
মাসখানেক আগে ওই আদিবাসী গ্রামে
ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে হেনস্থার
মুখে পড়েন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান অর্পিতা ঢালি। তিনি জানান, গ্রামবাসীদের একাংশ
কোনও কথাই শুনতে চাইছিলেন না। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। পর দিন পুলিশ-প্রশাসনের
কর্তারা গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের কুসংস্কারের বিষয়টি বোঝান। আক্রান্ত মহিলাকে বাড়ি
ফেরানো হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,
এই ঘটনার পরেই গ্রামে গিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। ওই গ্রামে একটি স্বাস্থ্যপরীক্ষা
শিবিরের আয়োজনও করা হয়েছে। কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস দূর করতে আলোচনারও আয়োজন হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসায় একশোটিরও বেশি আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। সেগুলির
বেশির ভাগই জঙ্গলে ঘেরা এলাকায়। অনেক গ্রামে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে না। বিডিও অরবিন্দ
বিশ্বাস জানান, শিক্ষার অভাবের কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। তাই তাঁরা গ্রামে-গ্রামে
গিয়ে ছোটদের স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া গ্রামের বড়দেরও এ সব নিয়ে বোঝানো
হবে।
প্রশাসনের কর্তারা মেনে নেন,
অনেক গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা বলে কিছু নেই। তাই সেখানে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষার
ব্যবস্থা করা হবে। অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘শুরুটা করা হচ্ছে মনেরকোঁদা গ্রাম থেকেই। কুসংস্কার
যাতে দানা বাঁধতে না পারে, সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফেও বিভিন্ন
সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা মনেরকোঁদায় ঘুরে এসেছে।
মঞ্চের কাঁকসা কেন্দ্রের সম্পাদক অরুণকিরণ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমরা মানুষকে
সচেতন করার চেষ্টা নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছি। কাঁকসার গ্রামগুলিতে নানা কর্মসূচির পরিকল্পনাও
নেওয়া হয়েছে।’’
http://www.anandabazar.com/district/bardhaman/awareness-program-happened-against-superstitions-1.630048?ref=bardhaman-new-stry
No comments:
Post a Comment