Monday, July 29, 2019

প্রয়াত নকশাল নেতা সন্তোষ রানার স্মরণসভায় একসঙ্গে ডান-বাম-ঝাড়খণ্ডী রাজনৈতিক নেতারা।

প্রয়াত নকশাল নেতা ও আনন্দ পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক সন্তোষ রানার স্মরণসভায় এক সঙ্গে যোগ দিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী ডান-বাম-ঝাড়খণ্ডী রাজনৈতিক নেতারা।

সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন নকশাল নেতা ও আনন্দ পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক সন্তোষ রানা। গত শনিবার (২৭/০৭/২০১৯) প্রয়াত সন্তোষ রানার স্মরণসভার আয়োজন করলেন তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীরা। শনিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরের দেবেন্দ্রমোহন মঞ্চে আয়োজিত ওই স্মরণসভায় ছিলেন বিভিন্ন বামপন্থী ও ঝাড়খণ্ডী সংগঠনের নেতারা। একই মঞ্চে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য নেতা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তাদের অনেকে তাঁদের সামনেই রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন।
এ দিন সিপিআইএমএল (রেড স্টার)-এর নেতা প্রদীপ সিংহঠাকুর তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘আট বছর আগে যাঁরা রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছেন, তাঁরাও জঙ্গলমহলের আদিবাসী-মূলবাসীদের উন্নয়ন করতে পারেননি। একটা সবুজসাথী সাইকেল দিয়ে উন্নয়ন হয় না।’’ এত বছর পরেও জঙ্গলমহলের আদিবাসীরা কেন মাতৃভাষায় উপযুক্ত ভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রদীপ। পরের বক্তা মন্ত্রী পূর্ণেন্দু অবশ্য এই প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি বলেন, ‘‘সন্তোষদা নেই। তবে তাঁর কাছ থেকে আমাদের এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। অন্যের দোষ দেখার আগে নিজেকে ভাল করে বিচার করা উচিত। সন্তোষদার কাছে থেকে এটা আমি শিখেছি।’’ পূর্ণেন্দুর মতে, শাসক না হলেও কমিউনিস্টরা এক ধরনের শাসন চালান এবং সেখানে গণতন্ত্র কন্ঠরুদ্ধ হয়। এটা সন্তোষ রানা নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।  তাঁর কথায়, ‘‘বিপ্লব বহমান, ঝটকা আসে। অনেক পরিবর্তন হয়। তার মধ্যে দিয়ে রাস্তা খুঁজে এগিয়ে চলা হচ্ছে বিপ্লবের দিকে এগোবার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় প্রশ্ন। সেই চিন্তা ভাবনার ক্ষেত্রে সন্তোষদা সহায়ক হতে পারেন। এটাই তাঁর আজকের প্রাসঙ্গিকতা।’’
এ দিন অন্যদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের প্রবীণ নেতা ডহরেশ্বর সেন, ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ রূপচাঁদ মুর্মু, ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির নেতা আদিত্য কিস্কু, অসিত খাটুয়া, আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো প্রমুখ।
একই মঞ্চে অন্য বক্তা রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে গেলেও তিনি সেই সরকারের মন্ত্রী হিসেবে কিছু বললেন না কেন? এই প্রশ্নের জবাবে পূর্ণেন্দুর উত্তর, ‘‘সন্তোষ রানার স্মরণসভায় এসেছি। কারও বিরোধিতা করা আত্মপক্ষ সমর্থনের জায়গা এটা নয়। মানুষই শেষ কথা বলবে।’’
সংবাদ সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৮ জুলাই, ২০১৯।

No comments:

Post a Comment