Sunday, July 28, 2019

পশ্চিম মেদিনীপুরে ডাইন অপবাদে আদিবাসী দম্পতির উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ।


ডাইন অপবাদ দিয়ে এক আদিবাসী দম্পতির উপর অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর ব্লকের গুড়গুড়িপালের শিরিষডাঙায়। অভিযোগের তির পরিজনেদেরই একাংশের বিরুদ্ধে। গত শনিবার ২৭/০৭/২০১৯ এই ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হচ্ছে।’’
পুলিশের কাছে শিরিষডাঙার বাসিন্দা গুরুদাস মান্ডি অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, দিন কয়েক ধরে ডাইন অপবাদ দিয়ে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী বুধন মান্ডির উপর অত্যাচার চালাচ্ছেন তাঁরই ভাই রঘুনাথ মান্ডি-সহ কয়েকজন। তাঁদেরকে ঘরছাড়াও করা হয়েছে। কিছুটা দূরে এক আত্মীয়ের ঘরে আছেন গুরুদাসরা। গুরুদাসের দাবি, দিন কয়েক আগে ভাই তাঁদের কেশিয়াড়ির খড়িকার কাছে এক গুণিনের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। ওই গুণিন তাঁদের ডাইন ঠাওরেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের একাংশের অনুমান, ঘটনার পিছনে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ থাকতে পারে। গুরুদাসেরও অভিযোগ, ‘‘আমাদের ঘর থেকে তাড়িয়ে যাবতীয় সম্পত্তি দখল করতেই এ সব করছে ভাই।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, রঘুনাথের ছেলে জ্বরে ভুগছিল। ডাক্তার দেখিয়েও জ্বর সারেনি। এরপরই গুরুদাস এবং বুধনকে ডাইন সন্দেহ করেন রঘুনাথ। জোর করেই দাদা-বৌদিকে গুণিনের কাছে নিয়ে যান। আগামী সপ্তাহে ওই গুণিনের না কি শিরিষডাঙায় আসার কথাও রয়েছে।
ডাইন অপবাদে মারধর, নির্যাতনের ঘটনা হামেশাই সামনে আসে। এই কুসংস্কারে দাঁড়ি টানতে সরকারি উদ্যোগে প্রচারও হয়। তবে সেই প্রচার বা সচেতনতা শিবিরে যে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না, মেদিনীপুর শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে শিরিষডাঙার ঘটনাই তার প্রমাণ। গুরুদাস বলেন, ‘‘ঘরে থাকলে হয়তো প্রাণেই মেরে দেওয়া হত।’’
স্থানীয় মণিদহ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। সম্পত্তি হাতানোর পরিকল্পনা থেকে থাকতে পারে বলে শুনছি। পুলিশ সবদিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করছে। আমরা এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার করব।’’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের আশ্বাস, ওই দম্পতিকে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।
সংবাদ সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা ও সংবাদ প্রতিদিন, ২৮ জুলাই, ২০১৯।

No comments:

Post a Comment