আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে তফশিলি জাতি - উপজাতি (SC/ST) দের জন্য আসন সংরক্ষণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের
দ্বারস্থ হবে তফশিলি জাতীয় কমিশন৷
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে দলিতদের তথা তফশিলি জাতি - উপজাতি (SC/ST)-দের জন্য আসন সংরক্ষণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের
দ্বারস্থ হতে চলেছে তফশিলি জাতীয় কমিশন৷ বিশেষ সূত্রের খবর, সংরক্ষণের বিষয়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (Aligarh Muslim
University – AMU) কতৃপক্ষ অনড় থাকার কারণেই জাতীয় তফশিলি কমিশনের (National
Commission for Schedule Caste) এই সিদ্ধান্ত। আলিগড় মুসলিম
বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবি করলেও তাদের কাছে এই
মর্মে কোনও দস্তাবেজ বা কেন্দ্রীয় নথি নেই। শীর্ষ আদালতে দায়ের করা আবেদনে এ কথাই
উল্লেখ করবে জাতীয় তফশিলি কমিশন৷ তা ছাড়া, এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর কেন্দ্রীয় অনুদানও গ্রহণ করে থাকে৷ সেক্ষেত্রে
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় কেন তফশিলি জাতি -
উপজাতি (SC/ST) জন্য আসন সংরক্ষণ করবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় তফশিলি কমিশন৷ চলতি মাসেই শীর্ষ আদালতে দায়ের করা
হতে পারে এই আবেদন৷ লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় তফশিলি কমিশনের এই উদ্যোগকে অত্যন্ত
তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন শীর্ষ আদালতের আইনজীবীরা৷ এক বর্ষীয়ান আইনজীবীর কথায়, ‘এটা শিক্ষায় গেরুয়াকরণের প্রয়াস মাত্র।’
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথই প্রথম সোচ্চার হয়েছিলেন আলিগড়
মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে তফশিলি জাতি - উপজাতি (SC/ST)
সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে৷ তাঁর যুক্তি ছিল, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তফশিলি জাতি - উপজাতি (SC/ST)দের জন্য আলাদা আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে পারে, তা হলে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বা আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই
ব্যবস্থা থাকবে না কেন?
সেই সুরেই সুর মিলিয়েছে জাতীয় তফশিলি কমিশন৷ সম্প্রতি
নয়াদিল্লিতে জাতীয় তফশিলি কমিশনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আলিগড় মুসলিম
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য তারিক মনসুর৷ দেড় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে কোনও ইতিবাচক বার্তা
মেলেনি। জাতীয় তফশিলি কমিশনের চাপে নতিস্বীকার করেননি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার৷ জাতীয় তফশিলি কমিশনের তরফে অধ্যক্ষ ও বিজেপি সাংসদ রাম
শঙ্কর কাঠেরিয়া আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সংখ্যালঘু শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের দাবির স্বপক্ষে কেন্দ্রীয় নথি দেখতে চান৷ সূত্রের খবর, এমন কোনও নথি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল না৷ বৈঠকে
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানান, তারা ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় কোনও ভাবেই সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায়
পড়ে না৷ এর পরই ওঠে কেন্দ্রীয় অনুদানের প্রশ্ন৷ এই বিশ্ববিদ্যালয় কেন তফশিলি জাতি
- উপজাতি (SC/ST)-দের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা
করবে না,
তা নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়৷ এর পরেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার৷
জাতীয় তফশিলি কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষের আচরণে সকলেই ক্ষুব্ধ৷ গত দশ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সাত হাজার কোটি টাকা অনুদান নিয়েছে৷ এখন তফশিলি জাতি -
উপজাতি (SC/ST)-দের সংরক্ষণ দিতে আপত্তি কেন? আমাদের অধ্যক্ষ স্থির করেছেন, অবিলম্বে ইউজিসি(UGC)-কে চিঠি লিখে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া অনুদান
স্থগিত করার কথা জানাবেন৷ দু’সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় তফশিলি
কমিশনের সব সদস্যদের নিয়ে বিশেষ বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷’
সৌজন্য – এই সময়, ১১/০৮/২০১৮।
No comments:
Post a Comment