আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা সামাজিক উন্নয়নে কেন্দ্রের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য
সরকার একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক বিদ্যালয়। বিভিন্ন বেসরকারি
সংস্থা এগিয়ে এলে তাদের আর্থিক সাহায্য করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই
রকমেই এক বিদ্যালয়েই শারীরিক অত্যাচারের শিকার আদিবাসী শিশুরা। ঘটনাটি বোলপুরের মির্জাপুরের ‘বিবেকানন্দ এডুকেশনাল
কালচারাল অ্যান্ড সোশ্যাল ইনস্টিটিউট’ নামের এক
বেসরকারি বিদ্যালয়ে। এখানে শিশুদের গরুর গোয়াল পরিষ্কার, বালি সিমেন্ট মাখানোর কাজ করানো হচ্ছে। এমনকী, লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে বাচ্চাদের। পুরো বিষয়টির ভিডিও সামনে আসতেই ক্ষোভে
ফেটে পড়েন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ডিঙ্গল শিশুদের মারধরের অভিযোগ
স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর বক্তব্য, তিনি স্থানীয়
শাসক দলের রাজনীতির শিকার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে ১৩ নভেম্বর
মির্জাপুরে ‘বিবেকানন্দ এডুকেশনাল কালচারাল
অ্যান্ড সোশ্যাল ইনস্টিটিউট’ বিদ্যালয়ের উদ্বোধন হয়।
বর্তমানে এখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আদিবাসী শিশুদের ইংরেজি মাধ্যামে
পড়ানো হয়। ১৯০ জন ছাত্র রয়েছে এবং ২৩ জন স্থায়ী-অস্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন। স্থানীয়
বাসিন্দাদের অভিযোগ,
এই আদিবাসী শিশুদের পারিবারিক এবং আর্থিক অসহায়তার সুযোগ
নিয়ে বিদ্যালয়ের ভিতর বিভিন্ন ধরনের কাজ করানো হয়।
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাচ্চারা গরুর
গোয়াল ঘর পরিষ্কারের কাজ করছে। কয়েকটি বাচ্চা বালি-সিমেন্ট মাখাচ্ছে। সব থেকে
নির্মম অত্যাচার,
৮-১০ জন বাচ্চাকে পরপর সারি দিয়ে দাঁড় করিয়ে লাঠি দিয়ে
পেটানো হচ্ছে। বাচ্চারা অনেকেই চিৎকার করছে। আর এই কাজ করছেন বিদ্যালয়ের সম্পাদক
শৈলেন্দ্রনাথ ডিঙ্গল।
এদিকে এই বিষয়টি সামনে আসতেই ক্ষোভে
ফেটে পড়েন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী আনন্দ গোপাল রক্ষিত বলেন, ‘‘বাচ্চাদের পরিমাণ মতো খাবার দেওয়া হয় না। বিভিন্ন কাজ করানো হয়, না করলেই মার। ছোট ছোট বাচ্চাগুলি প্রাণের ভয়ে চিৎকার করতে পারে না।’’
স্থানীয় আদিবাসী নেতা ভিম কিসকু বলেন, ‘‘বিদ্যালয় যখন
তৈরি হয়,
তখন শুনেছিলাম অনাথ আদিবাসী বাচ্চাদের পড়ানো হবে। কিন্তু
এখন দেখছি বাচ্চাদের মারধর করা হচ্ছে, কাজ করানো হচ্ছে।
আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।’’
অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ডিঙ্গল বলেন, ‘‘বাচ্চারা দুষ্টমি করেছিল। তাই তাদের একটু মারধর করা হয়েছে। গোপনে সেই ছবি তোলা
হয়েছে। আমি তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর রাজনীতির শিকার।’’
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ প্রথম থেকে এই বিদ্যলয়কে
সাহায্য করেছেন। সম্প্রতি তিনি ৫ বিঘা জমি বিদ্যালয়কে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তার
পর থেকেই এই আশ্রম দখলের চেষ্টা চলছে।
বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোধারা বলেন, পুরো বিষয়টি
শুনেছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার ভিডিও লিংক –
সৌজন্য – এবেলা, ২০/০৮/২০১৮।
No comments:
Post a Comment