৯ ই আগস্ট আন্তর্জাতিক
আদিবাসী দিবস ও আদিবাসী অধিকার
বিষয়ক রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণাপত্র।
(International Day of the World's Indigenous Peoples & United Nations Declaration on the Rights of Indigenous
Peoples)
৯ আগষ্ট আন্তর্জাতিক
আদিবাসী দিবসে সকলকে শুভেচ্ছা। আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে
বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হচ্ছে এই দিনটি। ২০১৮ সালের আদিবাসী দিবসের
প্রতিবাদ্য বিষয় হলো - Indigenous
Peoples Migration and Movement অর্থাৎ ‘‘আদিবাসী
জাতিসমূহের দেশান্তর রোধ ও অধিকারের আন্দোলন’’।
সংযুক্ত
রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার উন্নয়ন ও সংরক্ষণ সাব-কমিশনের আদিবাসী জনগণ সম্পর্কিত
কর্মদল তাদের প্রথম সভায় ১৯৯৪ সালে ৯ আগস্টকে আদিবাসী দিবস পালনের ঘোষণা করে।
পাশাপাশি বিভিন্ন রাষ্ট্রকে তা পালনের আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘের
তথ্যানুসারে,
বিশ্বের ৭০টি দেশে প্রায় ৩৭ কোটি আদিবাসী রয়েছে। এদের মধ্যে
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ইন্ডিয়ান, অস্ট্রেলিয়ার ইনুইট বা
এস্কিমোস, উত্তর ইউরোপের সামি, নিউজিল্যান্ডের
মাওরি অন্যতম। মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ আদিবাসী আছে বলিভিয়ায়। পেরু ও গুয়াতেমালায়
অর্ধেক লোকই আদিবাসী। চীন, মায়ানমারেও বহু আদিবাসী রয়েছে।
ভারতে প্রায়
১০.৪ কোটি আদিবাসী জনগণ বসবাস করেন যা ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.৬ %।
পশ্চিমবাংলায় প্রায় ৬০ লক্ষ আদিবাসীর বাস যা পশ্চিমবাংলার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬
%। মূলধারার জনগোষ্ঠীর থেকে আদিবাসীদের পৃথক জীবন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস আছে। পশ্চিমবাংলায় মোট ৪০ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ‘Schedule
Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ হিসেবে
তালিকাভুক্ত করা হয়েছে সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদান করার জন্য।
পশ্চিমবঙ্গে
তালিকাভুক্ত আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি
উপজাতি’ গোষ্ঠীগুলি – ১) ASUR, ২) KORWA, ৩) BAIGA, ৪) LEPCHA,
৫) BEDIA, BEDIYA, ৬) LODHA, KHERIA,
KHARIA, ৭) BHUMIJ, ৮) LOHARA, LOHRA, ৯) BHUTIA, SHERPA, TOTO, DUKPA, KAGATAY, TIBETAN, YOLMO, ১০) MAGH, ১১) BIRHOR, ১২) MAHALI,
১৩) BIRJIA, ১৪) MAHLI, ১৫)
CHAKMA, ১৬) MAL PAHARIYA, ১৭) CHERO,
১৮) MECH, ১৯) CHIK BARAIK, ২০) MRU, ২১) GARO, ২২) MUNDA,
২৩) GOND, ২৪) NAGESIA, ২৫)
GORAIT, ২৬) ORAON, ২৭) HAJANG,
২৮) PARHAIYA, ২৯) HO, ৩০)
RABHA, ৩১) KARMALI, ৩২) SANTAL,
৩৩) KHARWAR, ৩৪) SAURIA PAHARIA, ৩৫) KHOND, ৩৬) SAVAR, ৩৭) KISAN,
৩৮) LIMBU, ৩৯) KORA, ৪০)
TAMANG।
পশ্চিমবঙ্গের
৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২ টি আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST)
বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত –
ঝাড়গ্রাম ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসন দুটি। পশ্চিমবাংলার মোট ২৯৪ টি
বিধানসভার আসনের মধ্যে ১৬ টি বিধানসভা আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule
Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য
সংরক্ষিত – ১) Kumargram, ২) Kalchini,
৩) Madarihat, ৪) Mal, ৫)
Nagrakata, ৬) Phansidewa, ৭) Tapan,
৮) Habibpur, ৯) Sandeshkhali, ১০) Nayagram, ১১) Keshiary, ১২)
Binpur, ১৩) Bandwan, ১৪) Manbazar,
১৫) Ranibandh, ১৬) Raipur।
ভারতীয়
সংবিধান অনুসারে শিক্ষা,
চাকরি ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৬% আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule
Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য
সংরক্ষিত। প্রতিটি সরকারী প্রকল্প রুপায়নের ক্ষেত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule
Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের অগ্রাধিকার
দেবার কথা সরকারী গাইডলাইনে পরিষ্কার ভাবে বলা থাকে। এত সুযোগ সুবিধা ও সুরক্ষা
কবচ থাকা সত্ত্বেও আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের যথাযথ উন্নয়ন হচ্ছে না।
সরকারী পরিকল্পনা ও বঞ্চিত আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ মানুষদের মধ্যে বিশাল ফারাক থেকে
যাচ্ছে।
১৯৮২ সালের ৯
আগষ্ট সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের (UNO) আদিবাসী
জনগোষ্ঠী বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল
আদিবাসীদের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রসার ও সংরক্ষণ এবং আদিবসীদের
মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করা। এই স্মরণীয় দিনটিকে সংযুক্ত
রাষ্ট্রসংঘ (UNO) ৯ ই আগস্ট দিনটিকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী
দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৩ সালকে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘ (UNO)
সাধারণ পরিষদ থেকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী বর্ষ ঘোষণা করা হয়। অপর এক ঘোষণায়
১৯৯৫-২০০৪ আদিবাসী দশক ঘোষণা করা হয়। উদ্দেশ্য হলো আদিবাসীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও মানবিক অধিকারের ক্ষেত্রে আদিবাসী
জনগোষ্ঠীকে যে সমস্ত সমস্যার মুখোমুখী দাঁড়াতে হয় সে সব সমস্যা উত্তরণে
আন্তর্জাতিক সাহায্যের হাতকে আরও শক্তিশালী করা। যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রথম দশক
ঘোষণা করা হয়েছিল কিন্তু এক দশক পর দেখা গেল উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু অর্জিত হয়নি।
ফলে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘ (UNO)-এর সাধারণ পরিষদ ২০০৫-২০১৪
সময়কালকে দ্বিতীয় আদিবাসী দশক হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই বিগত দুই দশক সংযুক্ত
রাষ্ট্রসংঘ (UNO)-এর উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী আদিবাসীদের মানবিক
অধিকার সংহত করে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘ (UNO)-এর সদস্যদেশগুলির
কাছে তাদের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অঙ্গীকার আদায়ে সযত্ন প্রয়াস চলছে।
কারা আদিবাসী? এ
প্রসঙ্গে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘ (UNO) আদিবাসীদের চিহ্নিত করতে
নিন্মোক্ত কতগুলো বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছে।
1)
জনগোষ্ঠীর একটা ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা আছে।
যেমন - পূর্বপুরুষের ভূমি পুরো বা অংশতঃ দখল করে আছে; ভূমির
যৌথ মালিকানা রয়েছে; সুনির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রতিফলন আছে;
নির্দিষ্ট ভাষা রয়েছে; দেশের বা বিশ্বের কোন
একটা সুনির্দিষ্ট অংশের বাসিন্দা; ও এ সম্পর্কিত অন্যান্য
উপাদানসমূহ।
2)জাতিরাষ্ট্র গঠনে
যাদের অংশীদারিত্ব নেই।
3)জনগোষ্ঠীর মধ্যে
উপনিবেশিকতা বা আগ্রাসনের ইতিহাস রয়েছে।
4)যারা এখনও জনগোষ্ঠী
হিসেবে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে এবং বর্তমানে এরা অন্য আধিপত্যকারী সমাজ হতে
ভিন্ন।
5)নিজেদের সমাজের মধ্যে
অনাধিপত্যতা চর্চা করছে।
6)তাদের ভূখন্ড ও জাতি
পরিচিতি সংরক্ষণ,
উন্নয়ন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে স্থানান্তর করার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে।
7)সর্বোপরি যারা
আদিবাসী হিসেবে নিজেদের চিহ্নিত করে (আত্মচিহ্নিতকরণ)।
২০০৭ সালের
১৩ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘ (UNO)-এর সাধারণ পরিষদে
সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে আদিবাসী অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র বা United Nations Declaration on the Rights of Indigenous
Peoples অনুমোদিত হয়। ঘোষণায় আদিবাসীদের নিম্নোক্ত
উল্লেখযোগ্য অধিকারসূহ নিশ্চিত করা হয়েছে।
· আত্মনিয়ন্ত্রণের
অধিকার; সেই অধিকার বলে তাদের অবাধে রাজনৈতিক মর্যাদা
নির্ধারণ, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে;
· আদিবাসীদের
ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন, দখলীয় কিংবা অন্যথায়
ব্যবহার্য্য কিংবা অধিগ্রহণকৃত জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের অধিকার;
· ভূমি
ও ভূখন্ডের, সম্পদ ও তাদের পরিবেশ সংরক্ষণে সমষ্টিগত অধিকার;
· রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও উন্নয়নের অধিকার,
· আইন
প্রনয়ণে ও প্রশাসনিক কাজে অংশগ্রহণের অধিকার;
· স্বাস্থ্যসেবার
ও নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী ঔষধ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পদ্ধতি চর্চার অধিকার;
· সাংস্কৃতিক,
আধ্যাত্মিক ও ভাষাগত পরিচিতি, ধর্মীয় ঐতিহ্য
সম্পর্কিত অধিকার,
· মাতৃভাষার
মাধ্যমে শিক্ষা ও তথ্য অধিকার;
· নিজস্ব
প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, স্বাতন্ত্র প্রথা পদ্ধতি চর্চা,
পরিচর্যার অধিকার;
· নিজস্ব
প্রথা ও ঐতিহ্য মোতাবেক আত্ম-পরিচয়ের অধিকার;
· আদিবাসীদের
স্বেচ্ছা-সন্মতি ব্যতিরেকে তাদের ভুমি ও ভূখন্ডে সামরিক কার্যক্রম হাতে নেয়া যাবে
না - এ অধিকার;
· রাষ্ট্র
ও আদিবাসীদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির স্বীকৃতি, পর্যবেক্ষণ ও
বাস্তবায়নের অধিকার;
· গণহত্যা,
জোরপূর্বক স্থানান্তর ও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে পূর্ণ নিশ্চয়তার অধিকার;
· নারী,
বয়স্ক, শিশু, যুবক ও
প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের অধিকার;
· সহিংসতা
ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিশ্চয়তা প্রদানের অধিকার।
আদিবাসী অধিকার
বিষয়ক সংযুক্ত
রাষ্ট্রসংঘ (UNO)-এর
ঘোষণাপত্র (United Nations Declaration on the
Rights of Indigenous Peoples)
অনুচ্ছেদ– ১: সংযুক্ত
রাষ্ট্রসংঘ (UNO) সনদ, সার্বজনীন মানবাধিকার
ঘোষণাপত্র এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনসমূহে স্বীকৃত সকল প্রকার মানবাধিকার ও
মৌলিক স্বাধীনতা ব্যক্তিগতভাবেই হোক অথবা সমষ্টিগতভাবে হোক, আদিবাসীদের
পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ২: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীসমূহ অন্য সকল জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তির মতোই স্বাধীন ও সমান এবং তাদের অধিকার
উপভোগ করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তাদের আদি
উৎপত্তি অথবা পরিচয়ের ভিত্তিতে যেকোন বৈষম্য থেকে মুক্তি লাভের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৩: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকার রয়েছে। এই অধিকারবলে তারা অবাধে তাদের
রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ এবং অবাধে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত
রাখতে পারবে।
অনুচ্ছেদ- ৪: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার উপভোগের বেলায়,
তাদের আভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ে তথা স্বশাসিত কার্যাবলীর
অর্থায়নের পন্থা ও উৎস নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের স্বায়ত্ত্বশাসন বা স্বশাসিত
সরকারের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৫: আদিবাসী
জনগন যদি পছন্দ করে তাহলে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে
অংশগ্রহণের পূর্ণ অধিকার রেখে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক,
আইনগত, অর্থনৈতিক, সামাজিক
এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অক্ষুন্ন রাখা ও শক্তিশালীকরণের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৬: আদিবাসী
ব্যক্তির জাতীয়তা লাভের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৭: ১.
আদিবাসী ব্যক্তির তার জীবন, শারীরিক এবং মানসিক
মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত নিরপত্তা লাভের অধিকার
রয়েছে।
২. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠী হিসেবে
স্বাধীনভাবে, শান্তিতে ও নিরাপদ
ভাবে জীবন যাপনের অধিকার রয়েছে এবং জোরপূর্বক একগোষ্ঠীর শিশুদের অন্য কোন
গোষ্ঠীতে সরিয়ে নেওয়াসহ গণহত্যা অথবা অন্য কোন প্রকার সহিংস কর্মকান্ডের শিকার
করা যাবেনা।
অনুচ্ছেদ- ৮: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তিকে জবরদস্তিমূলকভাবে অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে একীভুত
করা বা তাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করা যাবে না।
২. রাষ্ট্র আদিবাসীদের বিরুদ্ধে নিম্নোক্ত কার্যক্রম নিবৃত্ত ও
প্রতিকারের জন্য কার্যকরী কর্মকৌশল গ্রহণ করবে- (ক) তাদের স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠীর
মর্যাদা বা সাংস্কৃতিক মূলবোধ কিংবা আত্মপরিচয়কে বিপন্ন করার লক্ষ্যে অথবা
প্রভাবিত করে এমন যে কোন কার্যক্রম;
(খ) তাদের ভূমি, ভূখন্ড অথবা সম্পদ থেকে
বিতাড়িত করার লক্ষ্যে অথবা প্রভাবিত করে এমন যে কোন কার্যক্রম; (গ) তাদের অধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে অথবা প্রভাবিত করে এমন যে
কোন জবরদস্তিমূলক জনগোষ্ঠী স্থানান্তর কার্যক্রম; (ঘ) যে কোন
প্রকার একীভূতকরণ বা অঙ্গীভূতকরণ কার্যক্রম; (ঙ) তাদের
বিরুদ্ধে জাতিগত কিংবা নৃতাত্ত্বিক বৈষম্য ত্বরান্বিত করা বা উস্কে দেয়ার লক্ষ্যে
পরিকল্পিত যে কোন অপপ্রচারণা।
অনুচ্ছেদ- ৯: আদিবাসী
জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তির তাদের ঐতিহ্য ও প্রথা অনুসারে আদিবাসী সম্প্রদায় বা জাতির
সদস্য হওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার উপভোগ করার ক্ষেত্রে কোন প্রকার বৈষম্য করা
যাবে না।
অনুচ্ছেদ- ১০: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূমি কিংবা ভূখন্ড থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে উৎখাত করা যাবে না। আদিবাসী
জনগোষ্ঠীকে তাদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়া কোনভাবে অন্য এলাকায়
স্থানান্তর করা যাবে না এবং ন্যায্য ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে সমঝোতা সাপেক্ষে
স্থানান্তর করা হলেও, যদি কোন সুযোগ থাকে,
পুনরায় তাদেরকে স্ব-এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ১১: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রথা চর্চা করা ও পুনরুজ্জীবিত করার
অধিকার রয়েছে। এই অধিকারের মধ্যে তাদের সংস্কৃতির অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ
অভিব্যক্তি, যেমন প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক স্থান, শিল্পকলা, নকশা, অনুষ্ঠানাদি,
প্রযুক্তি এবং সচিত্র ও অভিনয় শিল্প ও সাহিত্য অক্ষুন্ন রাখা,
রক্ষা এবং উন্নয়ন করার অধিকার অন্তর্ভূক্ত থাকবে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসীদের সাথে যৌথভাবে প্রণীত কার্যকর কর্মকৌশল
গ্রহণের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সম্পদ, যা আদিবাসীদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ব্যতীত কিংবা তাদের আইন,
ঐতিহ্য ও প্রথা লঙ্ঘন করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে সেগুলোকে
সম্মানজনকভাবে পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে কার্যকর প্রতিবিধানের উদ্যোগ নেবে।
অনুচ্ছেদ- ১২: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য, প্রথা ও উৎসব বিশ্বাস করা, পালন করা, উন্নয়ন করা এবং শিক্ষা প্রদানের অধিকার;
তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থানসমূহ অক্ষুন্ন রাখা, রক্ষা করা এবং একান্তভাবে চর্চার প্রবেশাধিকার; উৎসব
আচারাদির বস্তসামগ্রী ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং তাদের পূর্বপুরুষের
দেহাবশেষ ফিরিয়ে পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
২. রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে প্রণীত
ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ ও কার্যকর
কর্মকৌশলের মাধ্যমে উৎসব আচারাদির বস্তসামগ্রী লাভ করা এবং/কিংবা দেহাবশেষ ফিরিয়ে
পাওয়ার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ১৩: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ইতিহাস, ভাষা, অলিখিত প্রথা, দর্শন,
লিখিত পদ্ধতি ও সাহিত্য পুনরুজ্জীবিত করা, ব্যবহার
করা, উন্নয়ন করা ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে হস্থান্তর করা
এবং জনগোষ্ঠী, স্থান ও ব্যক্তির নিজস্ব নামকরণ করা ও তা বহাল
রাখার অধিকার রয়েছে।
২. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার যাতে রক্ষিত হয় তা নিশ্চিত করার
জন্য এবং আদিবাসীরা বুঝতে পারে ও বুঝতে সক্ষম হবে এমন রাজনৈতিক, আইনগত ও প্রশাসনিক কার্যপ্রণালী প্রয়োজনে
অনুবাদের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ১৪: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষা প্রদানের জন্য তাদের সাংস্কৃতিক
রীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ পাঠদান ও শিক্ষাপদ্ধতি অনুসারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন
এবং সেসবের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।
২. আদিবাসী ব্যক্তির, বিশেষ করে আদিবাসী শিশুদের, বৈষম্যহীনভাবে রাষ্ট্র
প্রদত্ত সকল স্তরের ও সকল প্রকারের শিক্ষা লাভের অধিকার রয়েছে।
৩. রাষ্ট্র, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে, যারা তাদের
সম্প্রদায়ের বাহিরে বসবাস করছে তাদেরসহ আদিবাসী মানুষের, বিশেষ
করে শিশুদের জন্য সম্ভবক্ষেত্রে নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভাষায় শিক্ষা লাভের সুযোগ
সৃষ্টির কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ১৫: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের মর্যাদাপূর্ণ ও বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস ও
আশা-আকাঙ্খা ধারণের অধিকার রয়েছে যা শিক্ষাব্যবস্থায় ও রাষ্ট্রীয় তথ্যভান্ডারে
যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়।
২. রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং সমাজের অন্য সকল অংশের মধ্যে
বিদ্বেষ প্রশমন করা ও বৈষম্য দূর করা এবং সহনশীলতা,
সমঝোতা ও সুসম্পর্ক ত্বরান্বিত করার জন্য সংশিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর
সাথে আলোচনাক্রমে ও যৌথভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ১৬: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করার অধিকার এবং কোনরূপ বৈষম্য
ব্যতীত অ-আদিবাসী জনগোষ্ঠী কর্তৃক পরিচালিত সকল প্রকার গণমাধ্যমে প্রবেশাধিকার
রয়েছে।
২. রাষ্ট্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যমে আদিবাসীদের
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র যাতে যথাযথ প্রতিফলিত হয় তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ
গ্রহণ করবে। কোনরূপ বাধা ব্যতীত মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে, আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র পর্যাপ্তভাবে
প্রতিফলন ঘটানোর জন্য রাষ্ট্র বেসরকারী মালিকানাধীন গণমাধ্যমগুলোকে উৎসাহিত করবে।
অনুচ্ছেদ- ১৭: ১.
আদিবাসী ব্যক্তি ও জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান আন্তর্জাতিক ও দেশীয় শ্রম আইনে স্বীকৃত সকল
প্রকার অধিকার পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসী শিশুদের ক্ষমতায়নের নিমিত্তে তাদের
শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও গুরূত্বকে বিবেচনা করে তাদেরকে অর্থনৈতিক শোষণ থেকে এবং
তাদের শিক্ষায় অনিশ্চিত কিংবা বাধাগ্রস্ত করে অথবা শিশুদের স্বাস্থ্য বা দৈহিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক,
নৈতিক বা সামাজিক অগ্রগতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন যে কোন ঝুঁকিপূর্ণ
কাজ থেকে রক্ষার জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনাক্রমে ও যৌথভাবে বিশেষ পদক্ষেপ
গ্রহণ করবে।
৩. আদিবাসী ব্যক্তিকে কাজ, চাকরী বা বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে কোন বৈষম্যমূলক শর্তারোপ করা যাবে না।
অনুচ্ছেদ- ১৮: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে, তাদের অধিকারকে প্রভাবিত করবে এমন বিষয়ে,
তথা তাদের নিজস্ব আদিবাসী সিদ্ধান্ত-নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান অক্ষুন্ন
রাখা ও উন্নয়নের জন্য, সিদ্ধান্ত নির্ধারণী প্রক্রিয়ায়
অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ১৯: রাষ্ট্র
আদিবাসীদের প্রভাবিত করতে পারে এমন আইন প্রণয়ন কিংবা প্রশাসন সংক্রান্ত পদক্ষেপ
গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পূর্বে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি
নেয়ার জন্য তাদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর সাথে আন্তরিক সদিচ্ছার সাথে আলোচনা ও সহযোগিতা করবে।
অনুচ্ছেদ- ২০: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের জীবন-জীবিকা ও উন্নয়নের নিজস্ব ধারা নিশ্চিত করার জন্য
এবং তাদের ঐতিহ্যগত ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাধীনভাবে নিযুক্ত থাকার
জন্য তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক
ব্যবস্থা বা প্রতিস্থান বজায় রাখা ও উন্নয়নের অধিকার রয়েছে।
২. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের জীবন জীবিকা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে
যে বঞ্চনার শিকার হয়েছে তার ন্যায্য ও নিরপেক্ষ প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ২১: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন তথা শিক্ষা, কর্মসংস্থান, কারিগরি
প্রশিক্ষণ, আবাসন, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার রয়েছে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার অব্যাহত
উন্নতির নিশ্চয়তা বিধানের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ এবং প্রয়োজন ক্ষেত্রে বিশেষ
পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আদিবাসী প্রবীণ, যুব, শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও
প্রয়োজনীয়তার প্রতি সবিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ২২: ১.
এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের সময় আদিবাসী প্রবীণ,
যুব, শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও
প্রয়োজনীয়তার প্রতি সবিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসী নারী ও শিশুরা যাতে সকল প্রকার সহিংসতা ও
বৈষম্য থেকে রক্ষা পায় ও তা নিশ্চয়তার সাথে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করে তার নিশ্চিত
করার জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ২৩: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর তাদের উন্নয়নের অধিকার প্রয়োগের জন্য অগ্রাধিকার বিষয় ও কর্মকৌশলের
নির্ধারণ ও প্রণয়নের অধিকার রয়েছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে স্বাস্থ্য, আবাসন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ড যা
তাদেরকে প্রভাবিত করে, সেগুলোর উন্নয়ন ও নির্ধারণের জন্য
এবং যথাসম্ভব তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব কর্মকান্ড পরিচালনা করার জন্য
সক্রিয়ভাবে জড়িত হওয়ার অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ২৪: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যবাহী ঔষধ ব্যবস্থাপনা এবং অত্যাবশক ঔষধি গাছ, জীবজন্তু ও খনিজ সম্পদ সংরক্ষণসহ তাদের
স্বাস্থ্য পরিচর্যার অধিকার রয়েছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কোন বৈষম্য ছাড়া সকল
প্রকার সামাজিক ও স্বাস্থ্য সেবা লাভের অধিকার রয়েছে।
২. আদিবাসী ব্যক্তির তাদের প্রাপ্য সর্বোচ্চ মানের দৈহিক ও
মানসিক স্বাস্থ্য সেবা উপভোগের অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্র এই অধিকার পূর্ণাঙ্গ
বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ক্রমাগত অগ্রগতির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ২৫: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা দখলীয় ও ব্যবহার্য জমি, ভূখন্ড, জল, সমুদ্র উপকূল ও অন্যান্য সম্পদের সাথে তাদের স্বাতন্ত্র্য আধ্যাত্মিক
সম্পর্ক রাখা ও সুদৃঢ়করণের অধিকার এবং এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যত প্রজন্মের নিকট তাদের
এসবের দায়িত্বসমূহ সমুন্নত রাখার অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ২৬: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন,
দখলীয় কিংবা অন্যথায় ব্যবহার্য কিংবা অধিগ্রহণকৃত জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের অধিকার রয়েছে।
২. জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের উপর,
যা আদিবাসীরা ঐতিহ্যগত মালিকানা কিংবা ঐতিহ্যগত ভোগদখল, ব্যবহার, বা অন্যথায় অধিগ্রহণের মাধ্যমে অর্জন করে
এসবের উপর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মালিকানা, ব্যবহার উন্নয়ন ও
নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।
৩. রাষ্ট্র এসব জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের আইনগত স্বীকৃতি ও রক্ষার বিধান প্রদান করবে। সংশ্লিষ্ট
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা, ঐতিহ্য এবং ভূমি মালিকানা
ব্যবস্থাপনা মেনে সেই স্বীকৃতি প্রদান করবে।
অনুচ্ছেদ- ২৭: রাষ্ট্র
সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আইন, ঐতিহ্য, প্রথা ও ভূমি
মালিকানা ব্যবস্থাপনার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করে, ঐতিহ্যগত
ভাবে মালিকানাধীন কিংবা দখলীয় বা ব্যবহার্য তাদের ভূমি, ভূখন্ড
ও সম্পদের উপর গুরুত্ব প্রদান করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার স্বীকৃতি দেয়া ও
নির্ণয় করার লক্ষ্যে একটি অবাধ, স্বাধীন, নিরপেক্ষ, উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া প্রবর্তন ও
বাস্তবায়ন করবে। এই প্রক্রিয়ায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ২৮: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ,
যা তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলকৃত বা
ব্যবহারকৃত এবং তাদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়া বেদখল, ছিনতাই, দখল বা ক্ষতিসাধন করা হয়েছে এসব যাতে ফিরে
পায় কিংবা, তা সম্ভব না হলে, একটা
ন্যায্য, যথাযথ ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায় তার প্রতিকার
পাওয়ার অধিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রয়েছে।
২. সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় অন্য কোন কিছুতে রাজী না হলে
ক্ষতিপূরণ হিসেবে গুণগত, পরিমানগত ও আইনি
মর্যাদার দিক দিয়ে সমান ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ অথবা সমান
আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বা অন্য কোন যথাযথ প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ২৯: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর পরিবেশ এবং তাদের ভূমি বা ভূখন্ড ও সম্পদের উৎপাদন সক্ষমতা
সংরক্ষণ ও রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্র কোন বৈষম্য ছাড়া এ ধরনের সংরক্ষণ ও
রক্ষা করার ক্ষেত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও
বাস্তবায়ন করবে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসিদের ভূমি বা ভূখন্ডে কোন প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ
দ্রব্যসামগ্রী গুদামজাতকরণ বা এর আবর্জনা স্তুপীকরণ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে
কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩. রাষ্ট্র আদিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা পরিবীক্ষণ, দেখাশুনা এবং পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত কার্যক্রম,
যা উল্লেখিত দ্রব্যসামগ্রী দ্বারা প্রণীত ও কার্যকর হবে তা যাতে
যথাযথ ভাবে বাস্তবায়িত হয়, প্রয়োজনানুসারে সেটা নিশ্চিত
করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৩০: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি কিংবা ভূখন্ডে সামরিক কার্যক্রম হাতে নেয়া যাবেনা, যতক্ষণ না পর্যন্ত উপযুক্ত রাষ্ট্রীয়
স্বার্থের/ জনস্বার্থের প্রয়োজন যুক্তিগ্রাহ্য হবে অথবা যদি সংশ্লিষ্ট আদিবাসী
জনগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় সম্মতি জ্ঞাপন বা অনুরোধ করে।
২. রাষ্ট্র সামরিক কার্যক্রমের জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি বা
ভূখন্ড ব্যবহারের পূর্বে যথাযথ পদ্ধতি ও বিশেষ করে তাদের প্রতিনিধিত্বকারী
প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে কার্যকর আলোচনার উদ্যোগ
গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৩১: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের সাংস্কৃতিক কৃষ্টি, ঐতিহ্যগত জ্ঞান এবং ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি তথা মানব ও বংশবিস্তার
বিষয়ক সম্পদ, বীজ, ঔষধ, প্রাণী ও উদ্ভিদ বিষয়ক সম্পদ, মৌখিক ঐতিহ্য,
সাহিত্য, নকশা, ক্রীড়া
ও ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা এবং সচিত্র ও অভিনয় কলাসহ তাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি এবং
সংস্কৃতির প্রদর্শনের চর্চা, নিয়ন্ত্রণ, সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের অধিকার রয়েছে। সাংস্কৃতিক কৃষ্টি, ঐতিহ্যগত জ্ঞান এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তিসহ তাদের
বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ বজায় রাখা, নিয়ন্ত্রণ, রক্ষা এবং উন্নয়নের অধিকারও তাদের রয়েছে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে এ সকল অধিকারগুলোর
স্বীকৃতি ও সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৩২: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ভূমি কিংবা ভূখন্ড ও অন্যান্য সম্পদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে
অগ্রাধিকার বিষয় ও কর্মকৌশল নির্ধারণ ও প্রণয়ণের অধিকার রয়েছে।
২. রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদের উপর প্রভাব বিস্তার করে এমন
কোন প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে, বিশেষ করে তাদের খনিজ,
জল কিংবা অন্য কোন সম্পদের উন্নয়ন, ব্যবহার
বা আহরণের পূর্বে স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি গ্রহণের জন্য তাদের নিজস্ব
প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা ও
সহযোগিতা করবে।
৩. রাষ্ট্র উক্তরূপ কোন কার্যক্রমের ন্যায্য ও যথাযথ
প্রতিকারের জন্য কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করবে এবং মারাত্মক পরিবেশগত, অর্থনৈতিক, সামাজিক অথবা
আধ্যাত্মিক প্রভাব কমানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৩৩: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব প্রথা এবং ঐতিহ্য মোতাবেক তাদের আত্মপরিচয় অথবা
সদস্যপদ নির্ধারণের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার যে রাষ্ট্রে বাস করে সেই রাষ্ট্রর
নাগরিকত্ব লাভ থেকে আদিবাসী ব্যক্তিদেরকে নিবৃত্ত করবে না।
২. আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব পদ্ধতি অনুযায়ী তাদের
প্রতিষ্ঠানের কাঠামো নির্ধারণ ও সদস্যপদ মনোনয়নের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৩৪: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান অনুসারে তাদের নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো
ও তাদের স্বতন্ত্র প্রথা, আধ্যাত্মিকতা,
ঐতিহ্য, কার্যপদ্ধতি, অভ্যাস
এবং যে রাষ্ট্রে তাদের বসবাস রয়েছে উক্ত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা কিংবা ঐতিহ্যের
প্রসার ঘটানো, উন্নয়ন করা ও বজায় রাখার অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৩৫: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর তাদের সমাজে ব্যক্তির দায়িত্বাবলী নির্ধারণের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৩৬: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর, বিশেষতঃ যারা
আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা বিভক্ত হয়েছে তারা অন্য প্রান্তের নিজস্ব জনগোষ্ঠী তথা
অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কার্যক্রমসহ
যোগাযোগ, সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রাখার ও উন্নয়নের অধিকার
রয়েছে।
২. রাষ্ট্র এই অধিকার কার্যকরকরণে সহযোগিতা প্রদান ও
বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে
কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৩৭: ১.
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্র কিংবা তাদের উত্তরসূরীর সাথে চুক্তি, সমঝোতা স্মারক এবং অন্যান্য গঠনমূলক
ব্যবস্থাবলীর স্বীকৃতি, প্রতিপালন এবং বাস্তবায়ন করার
অধিকার রয়েছে এবং এসব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও গঠনমূলক
ব্যবস্থাবলীর অবশ্যই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভের অধিকার রয়েছে।
২. চুক্তি সমঝোতা স্মারক ও অন্যান্য গঠনমূলক ব্যবস্থায়
সন্নিবেশিত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকারগুলোকে খর্ব ও বিলুপ্ত করার জন্য এই
ঘোষণাপত্রের কোন কিছুরই ব্যাখ্যা করা যাবে না।
অনুচ্ছেদ- ৩৮: রাষ্ট্র
এই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনাক্রমে
ও সহযোগে আইন প্রণয়নসহ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৩৯: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর এই ঘোষণাপত্রে সন্নিবেশিত অধিকারগুলো উপভোগের জন্য রাষ্ট্র থেকে ও
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সাহায্য লাভের অধিকার রয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৪০: আদিবাসী
জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্র অন্যান্য পক্ষের সাথে বিদ্যমান সংঘাত ও বিরোধ নিষ্পত্তি, তথা তাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিতগত অধিকারের উপর
হস্তক্ষেপের কার্যকর প্রতিকারের জন্য ন্যায্য ও নিরপেক্ষ পদ্ধতি গ্রহণ করা এবং তার
মাধ্যমে দ্রুত মীমাংসা লাভের অধিকার রয়েছে। এরূপ মীমাংসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা, ঐতিহ্য, নিয়মনীতি
ও আইনি ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকে যথাযথ বিবেচনায় রাখতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ৪১: জাতিসংঘের
বিভিন্ন বিভাগ ও বিশেষায়িত সংস্থাসমূহ এবং অন্যান্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহ
অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতাসহ কর্মোদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এই ঘোষণাপত্রের
বিধানাবলী পূর্ণ কার্যরূপদানে ভূমিকা রাখবে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে এমন
সব বিষয়ে তাদের নিশ্চিত অংশগ্রহনের জন্য পথ ও পন্থা গড়ে তুলতে হবে।
অনুচ্ছেদ- ৪২: জাতিসংঘ, আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরামসহ জাতিসংঘের
বিভিন্ন পরিষদ, জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থাসমূহ, তাদের দেশীয় পর্যায়ের অফিসসমূহ ও রাষ্ট্র এই ঘোষণাপত্রের বিধানাবলীর
পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ ও স্বীকৃতি প্রদান করবে এবং এই ঘোষণাপত্রের কার্যকরণের অনুগামী
কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
অনুচ্ছেদ- ৪৩: এই
ঘোষণাপত্রে স্বীকৃত অধিকারগুলো বিশ্বের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব রক্ষা, মর্যাদা ও সমৃদ্ধির জন্য ন্যূনতম মান গঠন/ প্রদর্শন
করে।
অনুচ্ছেদ- ৪৪: এই
ঘোষণাপত্রে স্বীকৃত সকল অধিকার ও স্বাধীনতা আদিবাসী নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে
সমানভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ- ৪৫: এই
ঘোষণাপত্রের কোন কিছুরই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান ও ভবিষ্যতে অর্জিত কোন অধিকার
হ্রাসকরণ ও বিলুপ্তকরণ হিসেবে ব্যাখ্যা প্রদান করা যাবে না।
অনুচ্ছেদ- ৪৬: ১.
এই ঘোষণাপত্রের কোন কিছুরই এমন ব্যাখ্যা প্রদান করা যাবে না যার অর্থ দাঁড়ায় যে, জাতিসংঘ সনদের বিরোধাত্মক কোন তৎপরতায়
প্রবৃত্ত হওয়া বা কোন কার্য সম্পাদন করার অধিকার কোন রাষ্ট্র, জনগোষ্ঠী, গোষ্ঠী বা ব্যক্তির রয়েছে অথবা সার্বভৌম
ও স্বাধীন রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখন্ডতা বা রাজনৈতিক ঐক্যের, সম্পূর্ণ
বা অংশবিশেষ, অঙ্গচ্ছেদ বা ক্ষতি করবে এমন কোন কার্যের
অধিকার রয়েছে।
২. এই ঘোষণাপত্রে ঘোষিত অধিকারগুলো উপভোগের ক্ষেত্রে, সকলের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি
সম্মান প্রদর্শন করা হবে। এই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত অধিকারগুলো উপভোগের ক্ষেত্রে
কেবল আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের দায়বদ্ধতা অনুসারে আইন দ্বারা নির্ধারিত সেসব
সীমাবদ্ধতাগুলো কার্যকর হবে। এসব সীমাবদ্ধতাগুলো অন্যদের অধিকার ও মৌলিক
স্বাধীনতার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদানে ও সম্মান প্রদর্শনে নিশ্চয়তা বিধানের
উদ্দেশ্যে এবং গণতান্ত্রিক সমাজের ন্যায্য ও অতীব বাধ্যবাধকতা প্রয়োজনীয়তা
পরিপূরণের জন্য একমাত্র অবৈষম্যমূলক ও কঠোর আবশ্যকতার ক্ষেত্রে বলবৎ হবে।
৩. এই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত বিধানাবলী ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি
সম্মান প্রদর্শন, সমতা, বৈষম্যহীনতা,
সুশাসন এবং আন্তরিক সদিচ্ছা অনুসারে ব্যাখ্যা করা যাবে।
No comments:
Post a Comment