পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের গেরোয় আদিবাসী অধ্যুষিত যে সব এলাকার উন্নয়ন থমকে থাকার
আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে সাময়িকভাবে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিডিওদের ২ কোটি টাকা
করে বরাদ্দ করবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। এই টাকা দেওয়া হবে দফতরের নিজস্ব তহবিল থেকে।
উত্তরকন্যা সূত্রের খবর, আর পাঁচটা ব্লক পিছু ১ কোটি টাকা দিলেও আদিবাসীরা যেখানে সংখ্যায়
বেশি রয়েছেন, সেখানে তা দ্বিগুণ দেওয়া হবে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, ‘‘আদিবাসী অধ্যুষিত বেশ কিছু
গ্রামে উন্নয়নের কাজে আরও গতি আনা দরকার। যতক্ষণ না পঞ্চায়েত গঠন হচ্ছে, ততক্ষণ বিডিওদের
বাড়তি উদ্যোগী হতে হবে। সে জন্য আদিবাসী অধ্যুষিত ব্লকে বাড়তি বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকদের মাধ্যমে প্রকল্প পেলেই টাকা পৌঁছে যাবে।”
উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহের অন্তত ১১টি ব্লক আদিবাসী অধ্যুষিত। উত্তর
দিনাজপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারেও বিস্তীর্ণ এলাকায় আদিবাসীদের বসবাস।
গত পঞ্চায়েত ভোটে ওই সব এলাকায় তৃণমূল সর্বত্র ভাল ফল করতে পারেনি। বহু জায়গাতেই আদিবাসীরা
মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতলেও মামলার
জেরে সেখানে বোর্ড গঠন সম্ভব নয়। অথচ সামনে লোকসভা ভোট রয়েছে। ফলে, উন্নয়ন থমকে থাকা
নিয়ে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি জোর প্রচারে নেমেছে।
আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর ব্লকের আকতৈল, বৈদ্যপুর, মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতে পানীয়
জলের চরম সমস্যা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের টাকায় পানীয় জলের জন্য সাব মার্সিবাল পাম্প
বসাতে উদ্যোগী হয়েছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। হবিবপুরের জেলা পরিষদের সদস্য প্রভাস
চৌধুরী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সরাসরি ব্লকে টাকা দেওয়ায় কাজে গতি আসবে।”
বিরোধীরা অবশ্য এখনও সমালোচনা করছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির
জেলা সভাপতি বিভূতি টুডু বলেন, ‘‘এ সব সিদ্ধান্তই ভোটের কথা মাথায় রেখে।” তাঁর বক্তব্য,
‘‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী আসনে নতুন করে ভোট দরকার। শুধু বিডিও-র মাধ্যমে উন্নয়ন
করার চেষ্টা ঠিক নয়। এতে প্রকৃত উন্নয়ন হবে না। জনপ্রতিনিধিরাই শুধু বোঝেন এলাকার সমস্যা
কী ও কোন কাজে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি।”
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, কিশোর সাহা, ১৮ অগস্ট, ২০১৮। ছবি - প্রতীকী।
No comments:
Post a Comment