গত শনিবার ০৪ ই আগস্ট, ২০১৮ পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ানের মাকপালি গ্রামে গভীর রাতে
এক আদিবাসী বৃদ্ধাকে বাড়ির মধ্যেই ঘুমন্ত অবস্থায় কুপিয়ে খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য
ছড়ায়। মৃতার নাম কেশরী মুর্মু (৭০)। রবিবার সকালে পুলিস বাড়ি থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার
করে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
বৃদ্ধাকে খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে রয়েছে পুলিসও।
পুরুলিয়ার পুলিস সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, এক বৃদ্ধাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন
করেছে দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক ভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পারিবারিক বিবাদ বলে মনে হলেও
এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেশরীদেবীর দুই ছেলে। ওইদিন রাতে মাটির বাড়ির বারান্দায়
কেশরীদেবী ঘুমোচ্ছিলেন। অন্যদিকে, কেশরীদেবীর বড়ছেলে গিরিজল ও ছোট ছেলে রামপদ মুর্মু
পৃথক ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রামপদবাবুর স্ত্রী সুজাতাদেবী আশাকর্মী। সুজাতাদেবী বলেন, কিছুদিন
আগে মায়ের শোওয়ার খাটিয়া ভেঙে যাওয়ার পর আর নতুন করে তৈরি করা হয়নি। বাড়ির মেঝেতেই
মা ঘুমোতেন। গ্রামের মূল রাস্তার পাশেই আমাদের বাড়ি। ওইদিন রাতে ভাশুরের চিৎকারে ঘুম
ভাঙে। তখন রাত প্রায় ১টা। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি, শাশুড়ি মা আর্তনাদ করছেন। এরপর স্বামী
ও ভাশুর মাকে তুলে ধরেন। তাঁর মাথায় ও কানের কাছে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। মুখ দিয়েও
রক্ত ঝরছিল। এরপর কিছুক্ষণ পরেই মায়ের মৃত্যু হয়। রাতেই গ্রামের বাসিন্দাদের ও আত্মীয়দের
খবর দেওয়া হয়। সুজাতাদেবী আরও বলেন, দু’দিক দিয়ে বাড়িতে ঢোকার দরজা রয়েছে। কিন্তু,
দু’দিকই ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। এমনকী, ঘটনার পরও ওই দরজাগুলি বন্ধ ছিল। তবে নির্মীয়মাণ
পাকা বাড়ির জানালার পাশে রাখা বালিতে একাধিকজনের পায়ের ছাপ রয়েছে। সম্ভবত দুষ্কৃতীরা
ওই দিকদিয়েই চম্পট দিয়েছে। কী কারণে মাকে ওরা খুন করল বুঝতে পারছি না। কারও সঙ্গে পারিবারিক
বা জমি সংক্রান্ত কোনও বিবাদও নেই। কোনও শত্রুতাও নেই।
মৃতার আত্মীয়া ললিতা বেসরা বলেন, কেশরীদেবী বা তাঁর পরিবারের কারও গ্রামে কোনও
বিরোধ জানা নেই। কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রামলাল মুর্মু, রামচন্দ্র
হাঁসদা বলেন, পারিবারিক বিবাদের কথাও তেমন জানা নেই। কী জন্য ওই বৃদ্ধাকে খুন হতে হল
গোটা পরিবারের সঙ্গে গ্রামবাসীরাও ধন্দে রয়েছে। এদিন ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য আসেন বান্দোয়ান
থানার ওসি তাপস দত্ত সহ অনান্য আধিকারিকরা। বান্দোয়ান থানারও পুলিসও খুনের কারণ নিয়ে
ধন্দে রয়েছে।
সৌজন্য
– বর্তমান পত্রিকা ও সংবাদ প্রতিদিন।
No comments:
Post a Comment