পশ্চিম বাংলার আবাস যোজনায় নাম নেই, অথচ ঘর পাওয়ার যোগ্য, গ্রামে গ্রামে এমন
উপভোক্তাদের খুঁজে বের করবেন বিডিওরা। আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হচ্ছে এই সার্ভে। সম্প্রতি
কেন্দ্রের নির্দেশে পশ্চিমবাংলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর এমনই একটি নির্দেশিকা
জেলায় জেলায় পাঠিয়েছে। সেখানেই এব্যাপারে একটি সার্ভে করতে বলা হয়েছে। এরজন্য ‘অ্যাওয়াস
প্লাস’ নামে একটি অ্যাপও চালু করা হয়েছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ এর মধ্যে কোন ব্লকে
এমন কতজন রয়েছেন তার তালিকা তৈরি করে ফেলতে হবে। এব্যাপারে বিডিওদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সচিব তথা এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রবীর
ঘোষ বলেন, নির্দেশিকা পেয়েছি। আগামী সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হবে। এতে বহু মানুষ উপকৃত
হতে চলেছেন। বিডিওদের সার্ভে বা এব্যাপারে তদন্ত করার ব্যাপারে বলা হচ্ছে। তাঁরাই টিম
গঠন করে এই কাজ শুরু করবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে সোশিও ইকোনমিক সার্ভে হয়। সেই ভিত্তিতে
২০১৫-’১৬ সালে আবাস যোজনায় উপভোক্তার তালিকা হয়। গ্রামসভায় উপভোক্তার তালিকাগুলি
স্বীকৃতিও পায়। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সোশিও ইকোনমিক সার্ভে রিপোর্টে নাম থাকা
সত্ত্বেও যারা উপভোক্তার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছেন, সঙ্গে যাঁরা সত্যিই বাড়ি পাওয়ার
যোগ্য তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে কেউ আবেদন করলে তাও খতিয়ে দেখতে
হবে, সে যোগ্য কি না। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, সমস্ত বিডিও অফিসেই বহু মানুষ
এসে আবেদন করেন। বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের বৈঠকেও বিভিন্ন জেলার কর্তারা বিষয়টি বারবার
তুলে ধরেছেন। অবশেষে এর একটা স্থায়ী সমাধান হতে চলেছে।
উল্লেখ্য, ‘বাংলার আবাস যোজনা’য় উপভোক্তা ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পান। এর মধ্যে
প্রথম কিস্তিতে ৪২ হাজার টাকা, পরের কিস্তিতে ৩৪ হাজার টাকা, তৃতীয় কিস্তিতে ৪২ হাজার
টাকা এবং শেষ কিস্তিতে ১২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট কাজ পূরণ হয়ে যাওয়ার পরেই
এক এক কিস্তির টাকা মেলে। বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ছবি আপলোডও
(জিও ট্যাগিং) করতে হয়।
২০২২ সালের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার মতো বাড়ি হওয়ার কথা।
এখন পর্যন্ত বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে অথবা কাজে হাত দেওয়া হয়েছে সব মিলিয়ে সেই
সংখ্যাটা ৭২ হাজার।
এর সঙ্গে আগামীদিনে নতুন উপভোক্তাদের নামও যুক্ত হতে চলেছে। অ্যাপের মাধ্যমে এই
সার্ভে বা তদন্তের কাজ চলবে। সেখানে বেশকিছু বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। যেমন বাড়ির দেওয়ালের
প্রকৃতি, ছাদের প্রকৃতি, শৌচালয় আছে কি না, ঘরের সংখ্যা, মোটর সাইকেল, চাষের যন্ত্রপাতি
আছে কি না, অ্যানড্রয়েড ফোন কেউ ব্যবহার করে কি না প্রভৃতি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, এই প্রকল্পের প্রাথমিক শর্তই হল
কাঁচা বাড়ি হতে হবে। ঘরের সংখ্যা হতে হবে দুই, নিজের জমি থাকতে হবে তবেই মিলবে এই প্রকল্পের
সুবিধা। প্রবীরবাবু বলেন, যোগ্য একজনের নামও যাতে বাদ না যায় তা আমরা দেখব। সে রকম
নির্দেশ বিডিওদের দেওয়া হয়েছে।
সৌজন্য
– বর্তমান পত্রিকা, ২২ আগস্ট, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment