Wednesday, August 1, 2018

ঝাড়খণ্ডে বেসরকারি স্কুলের হস্টেলে সাপের কামড়ে দুই ছাত্রের মৃত্যু, আশঙ্কাজনক ২।


গত সোমবার ৩০ শে জুলাই, ২০১৮ রাতে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার কুন্ডহিতে একটি বেসরকারি স্কুলের হস্টেলে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই ছাত্রের। আশঙ্কজনক অবস্থায় ভর্তি আরও দু’জন। চিকিৎসার জন্য ওই ছাত্রদের সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আনা হলে দু’জনের মৃত্যু হয়। এরপরই মৃত ছাত্রদের উত্তেজিত আত্মীয়-পরিজনরা স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর চড়াও হয়। উত্তেজনা ছড়ায় সিউড়ি হাসপাতালেও। ঘটনাস্থলে আসেন এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাহাত এবং ঝাড়খণ্ড বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শিবলাল ঘোষ। স্কুলটির কোনও বৈধ অনুমোদন ছিল না বলে স্থানীয়দের দাবি, যা নিয়ে উত্তেজনা আরও বাড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। হাসপাতাল সুপার শোভন দে বলেন, চারজনকে ভর্তি করা হয়। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, দু’জনের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুন্ডহিতে দীর্ঘদিন ধরে ওই বেসরকারি স্কুলটি রয়েছে, হস্টেলও আছে। সেখানে এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। প্রতিদিনের মতো সোমবারও হস্টেলে ছিল ছাত্ররা। একটি বড় হলঘরে প্রায় ১৫জন ছাত্র ছিল। হঠাৎই রাতে অর্পিত গড়াই (১০) অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হয়। ঘটনাস্থলে আসেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভজহরি মণ্ডল। ওই ছাত্রের হাতে কাটা চিহ্ন দেখতে পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে ঘরে একটি চিতি সাপ দেখতে পাওয়া যায়। এরপরই অর্পিতকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে কিরণ হাঁসদা (১১), শুভজিৎ মুর্মু, সুরজ হেমব্রম। তাদেরও চিকিৎসার জন্য সিউড়িতে আনা হয়। এদিন সকালে কিরণ ও অর্পিতের মৃত্যু হয়। এরপরেই কান্নায় ভেঙে পড়ে শোকার্ত পরিবারগুলি। তাদের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের কয়েকজনের উপর। কোনওরকমে পালিয়ে বাঁচেন তাঁরা। এরপরেই স্কুল ও হস্টেলের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে।
মৃত ছাত্র কিরণ হাঁসদার বাবা রবিউল হাঁসদা বলেন, আমাদের বাড়ি স্থানীয় বারোমেসা গ্রামে। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছ থেকে ছেলের পড়াশোনা করানোর জন্য স্কুলে নিয়ে গিয়েছিল। প্রতি মাসে কষ্ট করে মোটা টাকা দিতাম। কিন্তু, স্কুল দায়িত্ব পালন করল না। ঘটনার কথা আমাদের রাতে জানানো হয়নি। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের শাস্তি চাই।
অন্যদিকে, কুন্ডহিতেও চাঞ্চল্য ছড়ায়। সেখানেও প্রশাসনিক কর্তারা হাজির হন। এরপরই ঘটনাস্থল থেকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আসেন স্থানীয় নলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাহাত। আসেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপির রাজ্য নেতা শিবলাল ঘোষ। তাঁরা মৃত ছাত্রদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি হাসপাতাল সুপারের সঙ্গেও কথা বলেন। বিধায়ক বলেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অন্যদিকে, ঘটনার পরই চাউর হয়ে যায়, স্কুলের কোনও অনুমোদন ছিল না। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক ভজহরি মণ্ডল বলেন, আচমকা ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। একটি সাপ দেখতে পাই। তড়িঘড়ি অসুস্থ ছাত্রদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা শিবলাল যাদব বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি, স্কুলের কোনও অনুমোদন ছিল না। কী করে স্কুল চলছিল তা তদন্ত করবে রাজ্য সরকার।
সৌজন্য – বর্তমান পত্রিকা, ০১/০৮/২০১৮।

No comments:

Post a Comment