ছাত্রছাত্রীদের জাত তুলে গালিগালাজ ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, কুপ্রস্তাব দেবার অভিযোগ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকসংস্কৃতি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার নামে কুপ্রস্তাব দেওয়া তো বটেই, ছাত্রছাত্রীদের জাত তুলে
কথা বলার অভিযোগও ছিল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকসংস্কৃতি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক তদন্তে তার সারবত্তা মেলার পরে শিক্ষককে ছুটিতে পাঠিয়ে বিশদ তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত নভেম্বরে এক ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষক সুজয়কুমার মণ্ডলের
নামে লিখিত অভিযোগ জানান। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বসু বিজ্ঞান মন্দিরের (বোস
ইনস্টিটিউট) এক শিক্ষককে নিয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়া হয়। সেই শিক্ষক সুজয় ছাড়াও
বিভাগীয় প্রধান, পরীক্ষা নিয়ামক, ১২ জন ছাত্রী-সহ মোট ২১ জনের সঙ্গে কথা বলেন। এক ছাত্রী
জানান, সুজয়ের সঙ্গে ‘গভীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক’ রাখার প্রস্তাব মানতে না পেরে তিনি
‘গাইড’ বদলানোর আবেদন জানিয়েছিলেন। তাতে সুজয়ের অধীনে এমফিল করা এক ছাত্রকে দিয়ে তাঁকে
হুমকি দেওয়া হতে থাকে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয় যে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করার কথাও
ভেবেছিলেন। তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানি ও পক্ষপাতের ঘটনা ঘটতে থাকায় মাঝপথে
অনেকে পড়া ছেড়ে চলেও গিয়েছেন। ক্লাসে হাজিরা খাতায় পড়ুয়াদের নামের পাশে তাঁদের জাত
লিখে রেখেছিলেন সুজয়। অনেককেই জাত তুলে গালিগালাজ করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায় বলেন, ‘‘সুজয়কুমার মণ্ডলকে ছুটিতে
যেতে বলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এক সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনে
আরও তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সুজয়
অবশ্য দাবি করেন, যৌন হয়রানি ও জাত তুলে গালিগালাজের অভিযোগ তো নয়ই, তিনি ছুটিতে রয়েছেন
কি না, তাও তাঁর জানা নেই। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছুই জানি না।’’ পড়ুয়াদের
একাংশের প্রশ্ন, তিন সদস্যের কমিটি গড়ে কি সুজয়কে বাঁচানোর পথ খুঁজছে বিশ্ববিদ্যালয়?
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা, সুপ্রকাশ মণ্ডল, ৪ মে, ২০১৮।
No comments:
Post a Comment