মেদিনীপুর: স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রচার ও নির্দেশই সার। গড়বেতার সেই স্কুলের
হস্টেলে ছিল না একটিও মশারি। দেখে হতবাক স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা। বিনা মশারিতেই
রাতে ঘুমতে যায় শতাধিক পড়ুয়া। শনিবার গড়বেতা-৩ ব্লকের নয়াবসতে পণ্ডিত রঘুনাথ
মুর্মু বিদ্যাপীঠে হস্টেলের ১৬জন পড়ুয়া জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হওয়ার ঘটনায়
ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পড়ুয়াদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য মেদিনীপুর
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সোমবার সেই রিপোর্ট এসেছে। কারও রক্তেই
ডেঙ্গু ধরা পড়েনি বলেই খবর। তবে বিষয়টি দেখে চোখ খুলেছে স্বাস্থ্য দপ্তরের। ঘটনার
পর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা
স্কুল ও হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। সেখানেই মশারি না থাকার বিষয়টি সামনে আসে। হস্টেলে
মশারি নেই খবর পৌঁছায় জেলা প্রশাসনের কাছে। এরপর রবিবার জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা
স্কুল এবং হস্টেলে পরিদর্শন চালান। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তর থেকে মশারি
দেওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। যদিও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এনিয়ে কোনও মন্তব্য
করতে নারাজ। তিনি শুধু বলেন, সকলেই এখন ভালো আছে।
কারও ডেঙ্গু ধরা পড়েনি। অন্য এক কর্তার দাবি, মশাবাহিত রোগ
হতে পারে। মশারি ব্যবহার না করার বিষয়টি অত্যন্ত ভুল হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক
বিনোদ মণ্ডলের দাবি,
স্কুলে মশাই নেই। তবে তিনি এও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার মশারি চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা মেলেনি। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব স্কুলকেই এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। হস্টেলে
মশারি না থাকা কোনও স্কুলের ক্ষেত্রেই কাম্য নয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরে হু-হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে
ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭৮। এই পরিস্থিতিতে মশারি ব্যবহার নিয়ে দিনের পর দিন
প্রচার করছে স্বাস্থ্য দপ্তর। কিন্তু কোথায় কী! খোদ সরকারি স্কুলের হস্টেলেই
মশারি ব্যবহার হয় না। তা নজরদারি করার লোকও নেই। প্রধান শিক্ষকের যুক্তি শুনে
ক্ষুব্ধ এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেছেন, একজন স্কুল
শিক্ষককেই যদি এইটুকু সচেতন না করা যায়, তবে আমাদের সব
চেষ্টাই বৃথা। পড়ুয়াদের মশাবাহিত কোনও রোগ হয়েছে কি না পরের কথা। কিন্তু এত
কিছুর পরেও মশারি ব্যবহার যে হয়নি, তা কিন্তু
একেবারেই কাম্য ছিল না। আগামী দিনে স্কুল হস্টেলে নজরদারির ব্যাপারে ভাবা হচ্ছে।
তবে এর বিপরীত চিত্রও চোখে পড়েছে। ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই দিনকয়েক আগে
শালবনী ভাদুতলা হাই স্কুলে হস্টেলের ছাত্রছাত্রীদের মশারি দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য
দপ্তরের ওই কর্তা বলেন,
স্কুল কর্তৃপক্ষের এখন এই কাজটাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব
দেওয়া উচিত।
সৌজন্য – বর্তমান পত্রিকা।
No comments:
Post a Comment