Tuesday, November 21, 2017

জ্বরে কাবু রঘুনাথ মুরমু বিদ্যাপীঠ হস্টেলের ১৬ জন আবাসিক, স্কুলে আতঙ্ক।


ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর। ১৯ নভেম্বর, ২০১৭।

ধুম জ্বর, সঙ্গে মাথায় যন্ত্রণা। দুদিন আগে থেকে এক-এক করে অসুস্থ হতে শুরু করে চন্দ্রকোনা রোডের একটি স্কুল হস্টেলের আবাসিক পড়ুয়ারা। শনিবার পর্যন্ত নয়াবসত পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু বিদ্যাপীঠের ১৬ জন পড়ুয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানই বলছে, জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ৪৭৮ জন। এই পরিস্থিতিতে একই স্কুল হস্টেলের এতজন জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় শোরগোল পড়েছে। আবাসিক পড়ুয়াদের জ্বরের বিষয়টি শুক্রবার বিকেলে স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। খবর পৌঁছয় চন্দ্রকোনা রোড ফাঁড়ির পুলিশের কাছেও। তারপরে জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নির্দেশে জ্বরে আক্রান্তদের চন্দ্রকোনা রোড গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের সাহায্যে এগিয়ে আসে পুলিশ। রাতেই আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরীক্ষার জন্য তা পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে।
এ দিন সকালে স্কুলে গিয়েছিল মেডিক্যাল টিম। সেখানেও কয়েক জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। জ্বরে আক্রান্তদের দেখতে শনিবার চন্দ্রকোনা রোড গ্রামীণ হাসপাতালে এসেছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। পরে তিনি যান স্কুলেও। গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “পড়ুয়ারা এখন ভালই আছে। তবে আগামী সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থাকবে ওরা। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রধান শিক্ষক বিনোদ মণ্ডলের কথায়, “স্বাস্থ্য দফতর গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছে। আতঙ্কের কিছু নেই।
নয়াবসতে জঙ্গল লাগোয়া মাধ্যমিক স্তরের স্কুলটি অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের অধীন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৪৫০ জন ছেলেমেয়ে পড়ে এখানে। তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ পড়ুয়াই হস্টেলে থাকে। শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্কুল এবং হস্টেলের পরিবেশ পরিচ্ছন্নই। ব্লিচিং ছড়ানোয় হাত লাগিয়েছেন শিক্ষকেরা। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে পঞ্চম শ্রেণির অঞ্জলি হেমব্রম, ষষ্ঠ শ্রেণির সুখরানি সরেনরা জানাল, সামনেই পরীক্ষা। শুক্রবার সবাই মিলে পড়তে বসেছিল। দুপুর থেকে হাল্কা জ্বর ছিল। বিকেলের পরে খুব মাথা ব্যথা শুরু হলে শিক্ষকদের তারা বিষয়টি জানায়। জ্বরে আক্রান্ত ছাত্রী শিবানী মুর্মুর কথায়, “রাতেই চিকিৎসা শুরু হয়। এখন একটু ভাল লাগছে।এক সঙ্গে ১৬ পড়ুয়া জ্বরে পড়ায় উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। স্কুলটি জঙ্গল লাগোয়া হওয়ায় মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। জঙ্গল সাফে উদ্যোগী হয়েছে ব্লক প্রশাসন। এ দিন হাসপাতাল ও স্কুলে যান গড়বেতা ৩-এর বিডিও শুভঙ্কর সরকার।
সৌজন্য – আনন্দবাজার পত্রিকা।

No comments:

Post a Comment