Saturday, November 18, 2017

উত্তর দিনাজপুর জেলার করণ দিঘিতে নাবালিকা আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে আন্দোলনে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান।



গত ৪ নভেম্বর, ২০১৭ উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদীঘি থানার কাদিরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা নাবালিকা আদিবাসী ছাত্রী ও তার বোনকে বাড়িতে রেখে মা-বাবা রাসযাত্রা দেখতে গিয়েছিলেন। সেইসময় দুষ্কৃতীরা বাড়ি থেকে ওই নাবালিকা আদিবাসী ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে পাশের লিচু বাগানে ধর্ষণ করে খুন করে। তদন্তে নেমে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের ফাঁসির দাবিতে দিকে দিকে আদিবাসী জনগণ ও বিভিন্ন আদিবাসী সামাজিক সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে। এবার আন্দোলনে নামল আদিবাসী ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি (JDP) ও সহযোগী সামাজিক সংগঠন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান (ASA)।
দুই দিনাজপুর সহ মালদা জেলা ও অন্যান্য জেলাতেও নাবালিকা আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে প্রতিটি জেলায় জেলা শাসকদের কাছে দ্বারস্থ হয়েছেন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান। বিগত 8/11/17 তারিখে সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে আগামী 13/11/17 তারিখ সোমবার প্রতিটি জেলায় জেলাশাসকদের কাছে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। কিন্তু অভিযোগ যে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের এই আন্দোলনকে বানচাল করতে সক্রিয় হয় তৃণমূল কংগ্রেস। যে সময়ে মালদা জেলার জেলা শাসকের কাছে যাওয়ার জন্য ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সমর্থকরা গাড়ি রিজার্ভ করে রউনা হয় সেই সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সমর্থকেরা পথ অবরোধ করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক সদস্যরা প্রথমে আলমপুর বাসষ্ট্যন্ডে পথ অবরোধ করে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য সমর্থকদের যেতে না দেওয়ার পরিকল্পনা করে, কিন্তু উল্টে ক্ষুব্ধ ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য সমর্থকেরা পথ অবরোধ করলে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সমর্থকেরা তাদের অবরোধ তুলে নেন। তারপর আবার আটমাইল বাসষ্ট্যন্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সমর্থকেরা অবরোধ করেন, সেখানেও একই পরিস্থিতি, আবার ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য সমর্থকেরা পাল্টা পথ অবরোধ করলে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সমর্থকেরা অবরোধ তুলে নেন। তারপর আবার ওল্ড মালদা বাইপাসে অবরোধ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য সমর্থকেরা। তখন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের কর্মী সমর্থকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ও তারাও বাইপাসে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এতে বিভিন্ন মহলে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে তৃণমূল কংগ্রেস কেন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের আন্দোলনের বিরোধিতা করছে? একজন নাবালিকা আদিবাসী ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য সমর্থকেরা, এতে আপত্তি কোথায়? এই আন্দোলনে তো সমস্ত বিবেকবান মানুষ, সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের সমর্থন করা উচিত, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস এতে বাধা সৃষ্টি করছে কেন?

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ও জেলা শাসকের আশ্বাসে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি ও আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য সমর্থকেরা বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে জেলা শাসকের দফতরে গিয়ে তাদের দাবি গুলো পেশ করেন। এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির মালদা জেলা কমিটির সভাপতি রবিন মুর্মু, সম্পাদক জনাস সরেন, কোষাধ্যক্ষ অনিল কিস্কু, সাধারণ সম্পাদক বিনয় বেসরা, রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি মহন হাঁসদা, সহ-সম্পাদক মহন মুর্মু প্রমুখ। 

No comments:

Post a Comment