মাওবাদী হানায় মৃত ও নিখোঁজদের পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি নিখোঁজদের
মৃত ঘোষণা করতে হবে। এই দাবিতে গত বুধবার ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ শিলদায় ৫ নম্বর রাজ্য
সড়ক অবরোধ করেন মাওবাদী হানায় নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের লোকজন। ইতিমধ্যে দাবি
আদায়ের জন্য তাঁরা শহিদ ও নিখোঁজ পরিবারের যৌথমঞ্চ গঠন করেছেন। দাবি না মানা হলে অবরোধ
কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলায় মাওবাদীদের হাতে ৩৪৩ জন নিহত
হয়েছেন, ৮০ জন নিখোঁজ রয়েছেন, প্রায় ১০০ জন আহত রয়েছেন।
এদিন সকালে প্রথমে বেলপাহাড়ি এলাকায় হাতে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে মিছিল শুরু
হয়। মহিলারা সাদা ও কালো শাড়ি পরে মিছিলে হাঁটেন। পরে সাড়ে ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা
পর্যন্ত শিলদা মোড়ে ৫ নম্বর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। সেখানে স্মরণসভা হয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন
মাওবাদীদের হাতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু, হাতে গোনা কয়েকজন
ছাড়া অধিকাংশ পরিবারই কিছু পায়নি। কিন্তু, যেসব মাওবাদী খুন করল তারা এখন চাকরি পেয়ে
বহাল তবিয়তে রয়েছে। জঙ্গলমহলে অশান্তির সময় মাওবাদীরা খুন করার পাশাপাশি অনেককে তুলে
নিয়ে গিয়েছে। আট থেকে দশ বছর হয়ে গেলেও তাঁদের কোনও খোঁজ নেই। যৌথমঞ্চের দাবি, নিহত
ও নিখোঁজ পরিবারকে একটি করে সরকারি চাকরি দিতে হবে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের মৃত বলে ঘোষণা
করতে হবে। কেন্দ্র থেকে দশ লক্ষ টাকা ও রাজ্য থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ওইসব পরিবারের ব্যাঙ্কের কৃষি ঋণ মুকুব করতে হবে। ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার জন্য সরকারি
সাহায্য দিতে হবে। নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রীদের বিধবা ভাতা চালু করতে হবে।
গত জুন মাসে ঝাড়গ্রামে মিছিল করে তাঁরা জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন।
শহিদ ও নিখোঁজ পরিবারের যৌথমঞ্চের সম্পাদক শুভঙ্কর মণ্ডল বলেন, ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী
বেলপাহাড়িতে জানিয়েছিলেন, মাওবাদী হানায় যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারকে চাকরি
দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য চাকরি দেওয়ার
কথা ঘোষণা করেছিলেন। যারা খুন করল, যারা দেশদ্রোহী, তারা চাকরি পেয়ে গেল। কিন্তু,
যাঁরা খুন হলেন তাঁদের পরিবারকে কিছুই দেওয়া হল না। যাঁরা নিখোঁজ রয়েছে তাঁদের ডেথ
সার্টিফিকেট দিতে হবে। দাবি পূরণ না হলে ২৯ অক্টোবর থেকে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া
হবে। ওইদিন রাস্তায় মহিলারা থালা হাতে পথে নামবেন।
সৌজন্য – বর্তমান পত্রিকা, ০৪/১০/২০১৮। ছবি সৌজন্য – সংবাদ প্রতিদিন,
০৪/১০/২০১৮।
No comments:
Post a Comment